শেখ হাসিনা এখনো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, যে মন্তব্য করলেন ড. ইউনূস

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:১৯ পিএম

মুহাম্মদ ইউনূস ও শেখ হাসিনা। ছবি : সংগৃহীত
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার প্রচণ্ড জনরোষে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করতে বাধ্য হওয়া শেখ হাসিনা নিজেকে এখনো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মনে করলেও বাস্তবতা ভিন্ন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আজারবাইজানের বাকুতে জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনের ফাঁকে কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি।
সাংবাদিক নিক ক্লার্কের প্রশ্ন ছিল, ভারতে শেখ হাসিনার উপস্থিতি এবং সেখান থেকে তিনি যে বিবৃতি ও ঘোষণা দিচ্ছেন তা ইউনূস প্রশাসন কীভাবে দেখছে?
জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি বিবৃতি দিচ্ছেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আন্দোলনের ডাক দিচ্ছেন- দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলায় আমরা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছি। এটা বাংলাদেশের জন্য মোটেও সহায়ক হবে না।
ড. ইউনূস বলেন, আমরা ভারতীয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যে আপনি তাকে আশ্রয় দিয়েছেন, ভালো। তবে দয়া করে নিশ্চিত করুন যে- তিনি আমাদের জন্য সমস্যা তৈরি করবেন না। না হলে আমাদের আবার আপনাদের (ভারত) কাছেই অভিযোগ করতে হবে যে আপনি এমন মানুষকে আশ্রয় দিয়েছেন, যা আমাদের জন্য খারাপ। সুতরাং আমাদের উচিত ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে, বন্ধুত্বপূর্ণভাবে এর সমাধান করা।
সঞ্চালক বলেন, শেখ হাসিনা এখনো নিজেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখছেন। জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি নিজেকে অনেক কিছুই বলতে পারেন, কিন্তু বাস্তবতা তা নয়। এমনকি ভারতও বলছে তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী; সুতরাং তাকে আশ্রয় দিলেও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ছাড়া আর কিছুই বলছে না।
আরো পড়ুন : শেখ হাসিনা ও ভারত প্রসঙ্গে যা বললেন ড. ইউনূস
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নিচ্ছেন কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, হ্যাঁ, সেটার আইনগত প্রক্রিয়া চলছে এবং অভিযুক্ত হলে অবশ্যই তাকে প্রত্যর্পণের জন্য বলা হবে।
নিক ক্লার্ক বলেন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সংখ্যালঘুর অধিকার প্রশ্নে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইউনূস কীভাবে এই সংকট মোকাবেলা করার পরিকল্পনা করছেন
জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা সংখ্যালঘুদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, দেখুন, আপনি দেশের নাগরিক। সংবিধান আপনাকে আপনার অধিকার, স্বাধীনতা, নিজেকে প্রকাশ করার অধিকার, আপনার নিজের ধর্ম পালনের অধিকার দিয়েছে। এগুলো সংবিধানেই আছে। সুতরাং এটি আপনার (বাইরের দেশ) দিক থেকে আসা কিছু নয়। নাগরিকরা সংবিধানের দেয়া অধিকার যাতে ভোগ করতে পারে তা নিশ্চিত করাই সরকার হিসেবে আমাদের দায়িত্ব।
সঞ্চালক বলেন, কিন্তু হিন্দুসহ সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বেড়েছে বলে যে শোনা যাচ্ছে। উত্তরে শান্তিতে নোবেলজয়ী ইউনূস বলেন, সহিংসতা বাড়েনি। আমি বলব সহিংসতা কমেছে। বিপ্লবের সময় থেকেই সহিংসতা শুরু হয়। এই কারণে নয় যে তারা হিন্দু বা অন্যান্য ধর্মাবলম্বী, তাদের বেশিরভাগই ছিল আওয়ামী লীগার।