সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩১ পিএম

সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি এইচআরসিবিএ ‘র। ছবি: ভোরের কাগজ
সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশি মাইনারটিস বাংলাদেশ ন্যাশনাল চ্যাপ্টার। পাশাপাশি সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তিরও দাবি জানানো হয়েছে। শনিবার (৯ নভেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের কাছে এই দাবি জানানো হয়।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনে (ক্র্যাব) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশি মাইনারটিস (এইচআরসিবিএম) বাংলাদেশ ন্যাশনাল চ্যাপ্টারের আহ্বায়ক এডভোকেট লাকী বাছাড়। এ সময় অন্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনটির সমন্বয়ক সাজেন কৃষ্ণ বল, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয়ক সুজিৎ কুমার দাশ খুলনা বিভাগয়ি সমন্বয়ক তপন কুমার হাওলাদার, আদিবাসী সমন্বয়ক সন্তোষ কুমার মাহাতো, রাজশাহী বিভাগীয় সমন্বয়ক রঞ্জন সরকার ও মানবাধিকারকর্মী অশিষ কুমার অঞ্জন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আগস্টে সরকার পরিবর্তনের পর থেকে সংখ্যালঘুদের উপর ভয়াবহ হামলার ঘটনার চিত্র দেখা যায়। এইচআরসিবিএম’র প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত সারাদেশে ৪৩টি ধর্ষণ ও গণধর্ষণের ঘটনার চিত্র পাওয়া গেছে। অনেক এলাকায় লোক লজ্জা ও দুর্বৃত্তদের ভয়-ভীতির কারণে প্রশাসনের কাছে বিচার কিংবা অভিযোগ জানাতে পারেনি। থানা পুলিশও মামলা নেয়নি, কিংবা নীরব রয়েছে। উপরন্তু নির্যাতিতদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দেয়া হয়েছে। এতে গুম, হত্যার ঘটনার পাশাপাশি দেশ ত্যাগে বাধ্য করানোর ঘটনা ক্রমে বেড়ে চলেছে। বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের সনাতনী শিক্ষকদের এবং বিভিন্ন পর্যায়ে সংখ্যালঘু চাকরিজীবীদের জোর পূর্বক অবসর ও অব্যাহতি দেয়া হচ্ছে। পার্বত্য অঞ্চলের উপজাতিদের উপর সংঘটিত বর্বরোচিত হামলার সঠিক ও যথাযথ বিচার তারা পায়নি। উপজাতিসহ সংখ্যালঘুরা ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থায় জীবনযাপন করছে। শুক্রবার হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে সনাতনীদের হত্যার হুমকি দেয়ার ঘটনায় সংখ্যালঘুরা আরো অনিরাপদ ও আতংকিত হয়ে পড়েছেন বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
আরো পড়ুন: দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি না থাকলে উন্নয়ন সম্ভব নয়: ধর্ম উপদেষ্টা
লাকী বাছাড় আরো বলেন, সম্প্রতি চট্টগ্রামের হাজারী গলিতে সংখ্যালঘুদের উপর ঘটে যাওয়া হামলার কোনো বিচার পাবার আশা ছেড়ে দিয়ে তারা মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলার কারণে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। অনেক নিরপরাধ সংখ্যালঘুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেখানে দ্রুত প্রশাসনের প্রতিনিধি, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের নিয়ে পরিদর্শন করে সত্যিকারের ঘটনা তুলে ধরার আহ্বান জানান তিনি। পাশাপাশি অসহায় নির্যাতিতদের পরিকল্পিত মামলা থেকে মুক্তি দেয়ার ব্যবস্থা করার জন্য প্রধান উপদেষ্টাসহ সরকারের প্রতি দাবি জানান। বিষয়টির প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিদর্শক টিমেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।
সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের যথাযথ বিচার বিভাগীয় তদন্ত, প্রকৃত দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা, মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার, আইনি সহযোগিতা নিশ্চিত করা, সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের অভিযোগগুলো থানায় লিপিবদ্ধ নিশ্চিত করা এবং গ্রেপ্তারদের মুক্তির দাবি জানান এ্যাডভোকেট লাকী বাছাড়।