মোহাম্মদপুরে বিশেষ অভিযানের বিষয়ে যা বললো সেনাবাহিনী

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩৮ এএম

ছবি: সংগৃহীত
সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও ডাকাতি রোধে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের হাউজিংগুলোতে অস্থায়ী ক্যাম্প বসিয়েছে সেনাবাহিনী। রবিবার (২৭ অক্টোবর) থেকে এসব ক্যাম্প বসিয়ে ওই এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সার্বক্ষণিক কাজ করবেন সেনাসদস্যরা। মেজর নাজিম আহমেদ জানান, মোহাম্মদপুরে ২৭ থেকে ২৮টি কিশোর গ্যাংয়ের তথ্য পেয়েছে সেনাবাহিনী। ওই এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রবিবার (২৭ অক্টোবর) থেকে বিভিন্ন হাউজিং এলাকায় অস্থায়ী ক্যাম্প করা হবে। দুই-তিনটি হাউজিং এলাকার মধ্যে একটি করে এমন অস্থায়ী ক্যাম্প তৈরি করা হবে। যেখান থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা পুরো এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করবেন।
সেনাবাহিনী জানায়, গত ৫ আগস্টের পর থেকে বিভিন্ন অভিযানে এখন পর্যন্ত মোহাম্মদপুর থেকে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যসহ ১৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ১৮টি বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়াও ২৬১ রাউন্ড বিভিন্ন প্রকার গুলি, একটি গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও প্রায় ৮০টির মতো দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী।
এর আগে শনিবার মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে সেনাবাহিনী, র্যাব-২ ও পুলিশের যৌথ অভিযানে ৪৫ জনকে আটক করা হয়। আটকদের মধ্যে আসলাম ওরফে রুবেল ওরফে আলম নামে একজন শুক্রবার রাতে বসিলায় মিনি সুপারশপে চাঞ্চল্যকর ডাকাতির হোতা বলে তথ্য দিয়েছেন র্যাব-২ এর সহকারী পরিচালক শিহাব করিম। তিনি বলেন, আটকদের মধ্যে ৪০ জন সন্দেহভাজন ছিনতাইকারী, বাকি ৫ জন ছিনতাই-ডাকাতির সঙ্গে জড়িত। আইন অনুযায়ী পরবর্তি ব্যবস্থার জন্য আটকদেরকে এরইমধ্যে মোহাম্মদপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সরকার পতনের পর থেকে রাজধানীর অন্যতম অপরাধপ্রবণ এলাকা হয়ে ওঠে মোহাম্মদপুর এলাকা; গোলাগুলি, ছিনতাই, ডাকাতি ও অস্ত্র হাতে মারধর-হামলা নিত্যকার চিত্র হয়ে ওঠে। গোলাগুলি ও মারপিটে এক মাসের মধ্যে নিহত হয়েছে অন্তত তিনজন। মাদকের কারবার নিয়ে আধিপত্য ধরে রাখতে গুলি করা হয়েছে আরো কয়েকজনকে। শুক্রবার রাতে বসিলায় একটি মিনি সুপারশপে অস্ত্রধারীদের ঢুকে ডাকাতির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। একই রাতে ঢাকা উদ্যান এলাকায় ‘গণ ছিনতাইকারী’ দুই দলের মধ্যে সশস্ত্র মহড়ার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
এছাড়া ২০ অক্টোবর মোহাম্মদদীয়া হাউজিং লিমিটেড এলাকার সড়কে ‘নেসলে’ কোম্পানির একটি গাড়ি থামিয়ে ছুরি-চাপাতির মুখে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ও ১৭ হাজার টাকার চেক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এছাড়া ফাঁকা সড়কে কখনও সকালে, কখনও সন্ধ্যা বা রাতে এমনকি ভর দুপুরেও ছিনতাইয়ের ভিডিও ছড়িয়েছে। দোকানে বসে থাকা মানুষদেরকে কুপিয়ে একদল মানুষের অবলীলায় চলে যাওয়ার দৃশ্যও দেখা গেছে।
একের পর পর এমন অপরাধের ঘটনায় ক্ষুব্ধ মোহাম্মদপুরের একদল মানুষ শনিবার বিকালে থানায় গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে ৭২ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেয়। এর মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে থানায় অবস্থানের ঘোষণাও দেয়া হয়।