হেফাজত কর্মী হত্যা: সাবেক এসপি ও দুই এমপিসহ ১২৮ জনের নামে মামলা

আবদুস ছাত্তার, সোনারগাঁও (নারায়ণগঞ্জ) থেকে
প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৩৩ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
হেফাজতে ইসলামের সাবেক নেতা মামুনুল হকের নারীকাণ্ডে হেফাজতের এক কর্মী নিহতের ঘটনার তিন বছর পর নারায়ণগঞ্জ জেলার সাবেক পুলিশ সুপার ও সাবেক দুই সংসদ সদস্যকে আসামি করে মামলা হয়েছে।
সোমবার (২১ অক্টোবর) রাতে সোনারগাঁও থানায় মামলাটি করেন হেফাজতে ইসলামের সোনারগাঁ শাখার সদস্য মাওলানা শাহজাহান শিবলী।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল বারী।
মামলায় জেলার সাবেক পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবু ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাংসদ আব্দুল্লাহ আল কায়সারসহ ১২৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এছাড়া এ মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- ঢাকার মতিঝিল জোনের সাবেক এডিসি আতিকুল ইসলাম মুরাদ, সাবেক সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আতিকুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সাবেক ওসি মো. এনামুল কবির ও সোনারগাঁও থানার সাবেক ওসি মো. হাফিজুর রহমান।
মামলার বাদী হেফাজতে ইসলামের সোনারগাঁ থানা শাখার সদস্য শাহজাহান শিবলী এজাহারে উল্লেখ করেন, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল রাতে হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক তার স্ত্রীসহ সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্ট হোটেলে অবকাশ যাপনের জন্য আসেন। ওই সময় দুই সাবেক সাংসদের মদদে পুলিশ প্রশাসনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগীতায় এজাহার নামীয় আসামিরাসহ ১০০ থেকে ১৫০ জন মামুনুল হককে স্ত্রীসহ হেনস্তা করে রিসোর্ট থেকে বের করে দেয়।
পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে সোনারগাঁওয়ের হেফাজত কর্মী মাওলানা ইকবাল হোসেন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় মামুনুল হককে স্ত্রীসহ হেনস্তার জোরালো প্রতিবাদ করেন। এসময় এজাহারনামীয় আসামিরা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধরসহ লোহার রড দিয়ে মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে।
পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে পুলিশ গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে মামলা করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ওই সময় মাওলানা ইকবাল হোসেনকে রিমান্ডের নামে পুলিশও নির্যাতন করে। পুলিশের নির্যাতনে ইকবাল হোসেন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাওলানা ইকবাল হোসেন ২০২১ সালের ২১ এপ্রিল রাত বারোটায় মারা যান।
মামলার বাদী মাওলানা শাহজাহান শিবলী এজাহারে আরো উল্লেখ করেন, ওই সময় তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাব ও বিরূপ পরিস্থিতির কারণে মাওলানা ইকবাল হোসেনের পরিবার মামলা করতে পারেননি। বর্তমানে পরিস্থিতি অনুকূলে থাকায় তার পরিবারের পক্ষে মামলা করা হয়েছে।
সোনারগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল বারী জানান, সোনারগাঁওয়ে হেফাজত ইসলামের কর্মীর ওপর হামলা ও নির্যাতনের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।