×

জাতীয়

ডিএনসির মামুন সাসপেন্ড, বিএনপির পদে নেই রবি

দীপ্ত টিভির কর্মকর্তা খুনের তদন্তে অনেকের নাম

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪৬ পিএম

ডিএনসির মামুন সাসপেন্ড, বিএনপির পদে নেই রবি

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মামুন ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য শেখ রবিউল আলম। ছবি: সংগৃহীত

   

রাজধানীর হাতিরঝিলে দীপ্ত টিভির সম্প্রচার কর্মকর্তা তানজিল জাহান তামিম হত্যার ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মামুন এখনো ধরা পড়েনি। পলাতক রয়েছেন তিনি। সোমবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। মামুনকে ক্লোজ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। 

তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার প্রস্তুতি চলছে। তামিম হত্যা মামলায় মামুন এজাহারভুক্ত এক নম্বর আসামি। তবে মামুনের সঙ্গে ডিএনসির আরেক উপ-পরিচালকক ও এক সাব-ইন্সপেক্টরের নামও আলোচনায় এসেছে। 

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) মহাপরিচালক (ডিজি) খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান সোমবার বলেছেন, মামুনকে ক্লোজ করে সাসপেন্ড করার সুপারিশ করে মন্ত্রণালয়ে কাগজ পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, মামুনের সঙ্গে শামীমের ঘনিষ্ট সম্পর্ক থাকতে পারে। এতে দোষের কিছু নেই। তবে অপরাধে জড়ালে এর সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ ও অভিযোগ পেলে অবশ্যই বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. রুহুল কবির খান জানান, বেসরকারি দীপ্ত টিভির কর্মী তানজিল জাহান ইসলাম তামিমকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাটি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হাতিরঝিল থানার ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তদন্তে যার নামই আসুক, সে যেই হোক কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন। এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করা সমুচিন হবে না। তবে আমি আবারো বলছি তদন্তে যার নামই আসুক, সে যেই হোক ছাড় পাবে না।

এদিকে তামিম খুনের ঘটনায় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলম রবির সাংগঠনিক পদ স্থগিত করেছে বিএনপি। এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে তাকে। সোমবার বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে, মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত রবির সব সাংগঠনিক পদ স্থগিত থাকবে। 

আরো পড়ুন: দীপ্ত টিভির কর্মী হত্যা: মাদক অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মামুন বরখাস্ত

গত ১১ অক্টোবর রবিকে শোকজ নোটিশ দেয়া হয়েছে। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়। পরবর্তীতে শেখ রবি যে জবাব দিয়েছেন তা সন্তোষজনক না হওয়ায় সব সাংগঠনিক পদ স্থগিত করা হলো। এ হত্যা মামলায় তিন নম্বর আসামি শেখ রবিউল আলম রবি পলাতক আছেন।

জানা গেছে, মামুনের সঙ্গে ডিএনসি আরেক উপ-পরিচালক শামীম আহমেদের নামও জড়িয়ে আছে নানা অপকর্মে। মামুন ঢাকা দক্ষিণে এবং শামীম ঢাকা উত্তরে উপ-পরিচালক হিসেবে কর্মরত। বিগত সরকারের সময় পছন্দসই স্থানে চাকুরি করে মাত্র কয়েক মাস আগে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাদেরকে নারায়ণগঞ্জ ও টাঙ্গাইলে বদলি করা হয়। সরকারের পটপরিবর্তনের পরই তারা দুজনে ফের ঢাকায় ফিরেছেন। ডিএনসি কর্মকর্তাদের কাছে তারা ‘মানিকজোড়’ হিসেবে পরিচিত। তারা একসঙ্গে ঢাকায় ফ্ল্যাট ব্যবসা এবং পূর্বাচলে বেনামে প্লট ব্যবসায় জড়িত বলে চাউর আছে। 

ডিএনসির সূত্র বলেছে, মামুন চট্রগ্রাম মেট্রোর উপ-পরিচালক থেকে ঢাকার প্রধান কার্যালয়ে উপ-পরিচালক (প্রশাসন), এরপর ঢাকা বিভাগীয় গোয়েন্দার উপ-পরিচালক, তারপর ফের চট্রগ্রাম মেট্রোর উপ-পরিচালক হন। সেখান থেকে তাকে কয়েক মাস আগে নারায়ণগঞ্জে বদলি করা হয়। গত ৫ আগষ্টের পটপরিবর্তনের পর বৈষম্যের শিকার এমন দাবি করায় তাকে ঢাকায় এনে দক্ষিণের ডিডি করা হয়েছে। 

অন্যদিকে শামীম চট্রগ্রাম মেট্রোর উপ-পরিচালক থেকে ঢাকা বিভাগীয় গোয়েন্দার উপ-পরিচালক, ঢাকার প্রধান কার্যালয়ে উপ-পরিচালক (প্রশাসন) এবং কয়েক মাস আগে টাঙ্গাইলে উপ-পরিচালক হন। গত ৫ আগষ্টের পটপরিবর্তনের পর বৈষ্যমের শিকার এমন দাবি করায় তাকে ঢাকায় এনে উত্তরের ডিডি করা হয়েছে। মূলত মামুন যেখানে কাজ করেছেন তার কর্মস্থল বদল হলে শামামী সেখানে স্থলাভিসিক্ত হয়েছেন। 

আরো পড়ুন: ডিজিএফআইয়ের নতুন প্রধান জাহাঙ্গীর আলম

শামীমের বিরুদ্ধে মাদকের পারমিট নবায়ন না করা ও নতুন পারমিট না দেয়ার অভিযোগ করেছেন কয়েকজন বার মালিক। মামুন-শামীম মূলত ঢাকার আলোচিত কিং ফিশার বারের মালিক মোক্তার হোসেন এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের একান্ত সচিব (পিএস) হারুন-অর রশিদ বিশ্বাসের আস্থাভাজন হিসেবে ডিএনসিতে পরিচিত। হারুন বিশ্বাস বার এবং ওয়্যারহাউজ অনুমোদন ও নিয়ন্ত্রক হিসেবে সমালোচিত।

সূত্র বলেছে, রাজধানীর হাতিরঝিলের মহানগর প্রজেক্টের বাসায় তামিম হত্যাকাণ্ডের এক বছর আগে ডিএনসির সাব-ইন্সপেক্টর আব্দুস সাত্তারের মাধ্যমে ওই ফ্ল্যাট থেকে তামিমের পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়। সাত্তার নিজেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের আলোচিত কর্মকর্তা হারুন অর রশীদের মামাতো শ্যালক পরিচয় দিতেন। গত ১০ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) সকালে তামিম হত্যাকাণ্ডের আগে ডিবি শামীম ও সাব-ইন্সপেক্টর আব্দুস সাত্তার তাদের কর্ম এলাকার বাইরে হাতিরঝিল এলাকায় অবস্থান করেন। তামিম খুনের পর তাদের মাধ্যমে সটকে পড়েন মামুন। 

অভিযোগ প্রসঙ্গে উপ-পরিচালক শামীম আহমেদ বলেছেন, মামুন তার ব্যাচমেট ও বন্ধু। এছাড়া তাদের কোনো ব্যবসা নেই। যেসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে তার সবই সাজানো, বানোয়াট, কাল্পনিক ও মনগড়া। বক্তব্য জানতে মামুনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। সাব-ইন্সপেক্টর আব্দুস সাত্তার বলেছেন, ডিবির হারুন অর রশীদ তার দূর সম্পর্কের আত্নীয়। তিনি কোনোভাবেই ডিডি মামুনের ঘনিষ্ট না। তার কর্মস্থল ভিন্ন এলাকায়। 

উল্লেখ্য, তামিম হত্যাকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন- মো. আব্দুল লতিফ, মো. কুরবান আলী, মাহিন, মোজাম্মেল হক কবির, বাঁধন ও মো. রাসেল। তারা সবাই চার দিনের রিমান্ডে রয়েছেন। তানজিল জাহান ইসলাম খুনের ঘটনায় ১৬ জনকে আসামি করে মামলা করেন নিহত তানজিল জাহান ইসলাম ওরফে তামিমের বাবা। বাড়ি নির্মাণ ও ফ্ল্যাট ভাগাভাগি নিয়ে আবাসন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিরোধের জেরে জমির মালিকের ছেলেকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App