ইইউর সব ধরনের সহযোগিতা কামনা
পাচার অর্থ ফেরাতে বিভিন্ন দেশে ৭১ চিঠি দুদকের

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ছবি: সংগৃহীত
বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন দেশে ৭১টি মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট রিকোয়েস্ট (এমএলএআর) পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর মধ্যে ২৭টি এমএলএআরের বিষয়ে জবাব পেয়েছে সংস্থাটি। গতকাল মঙ্গলবার দুদক কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন এ তথ্য জানিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে দুদকের পক্ষ থেকে ইইউর কাছে সব ধরনের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ, সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন, দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এবং পরিচালক আবদুল্লাহ আল জাহিদ ও গোলাম শাহরিয়ারের সমন্বয়ে প্রতিরোধ, মানিলন্ডারিং ও গোয়েন্দা শাখার শীর্ষ কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষে বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কো-অপারেশন বিভাগের প্রধান মিশেল ক্রেজা, প্রোগ্রাম ম্যানেজার পাবলো প্যাডিন পেরেজ, নাদের তানজা এবং কিশওয়ার আমিনের সমন্বয়ে একটি টিম বৈঠকে অংশ নেয়।
বৈঠক শেষে দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে এখন পর্যন্ত ৭১টি মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট (এমএলএআর) পাঠিয়েছি আমরা। দুঃখজনক হলেও সত্য, মাত্র ২৭টি এমএলএআরের বিষয়ে জবাব পেয়েছি। পাচার করা অর্থের বিষয়ে যথাযথ তথ্য পরে জানাতে পারব। আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলাপে এ বিষয়ে তাদের সহযোগিতা চেয়েছি।
তিনি আরো বলেন, দুদকের অনুসন্ধান ও তদন্ত কাজে যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে সে বিষয়টি আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের সামনে উপস্থাপন করেছি। যেসব দেশে বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার হয়েছে সে অর্থ ফিরিয়ে আনতে তারা যাতে সহযোগিতা করে সে বিষয়টি আমরা তাদের বলেছি। বৈঠকে আমরা তাদের যেসব দেশে অর্থ পাচার হয়েছে, সে দেশগুলোর নাম উল্লেখ করেছি, আশা করছি, ওইসব দেশ থেকে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে তারা আমাদের সহযোগিতা করবে।
দুদক সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যক্রম সম্পর্কে প্রতিনিধি দলকে অবহিত করা হয়। এছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশনের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিশেষ করে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ ও পাচার করা সম্পদ পুনরুদ্ধারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল তাদের পক্ষ থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার প্রতিশ্রæতি ব্যক্ত করেছেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই), ইউনাইটেড ন্যাশনস অফিস ফর ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম (ইউএনওডিসি), বিশ্বব্যাংক ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) ধারাবাহিকভাবে দুদকের সঙ্গে পাচার করা অর্থ ফেরতসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বৈঠক করেছে। বৈঠকগুলোতে গুরুত্ব পেয়েছিল দুর্নীতি সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্ত, বিশেষ করে মানিলন্ডারিং, সাইবার ক্রাইম, আর্থিক লেনদেনের তদন্তের ক্ষেত্রে ফরেনসিক অ্যানালাইসিস, ট্রেডবেইজড, মানিলন্ডারিং, অপরাধীদের জিজ্ঞাসাবাদের কৌশল, সম্পদ পুনরুদ্ধার, তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সংঘটিত আর্থিক ক্রাইম, মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স ও তথ্য বিনিময়সহ বিভিন্ন ইস্যু।