তিস্তার পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি, নদীপাড়ের মানুষ আতঙ্কে

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২৯ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
উজানের পাহাড়ি ঢল ও টানা কয়েক দিনের বর্ষণে তিস্তা নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। এতে রংপুর, নীলফামারী ও লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চলের বেশকিছু বসতবাড়ি ইতোমধ্যে পানিতে তলিয়ে গেছে। রাস্তাঘাট ডুবে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এসব অঞ্চলে। পানির চাপ বাড়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলোও ঝুঁকির মুখে পড়েছে। বন্যা ও নদীভাঙনের আতঙ্কে নদীপাড়ের হাজার হাজার মানুষ দিন কাটাচ্ছে।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহের উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ৫২.১০ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার মাত্র দশমিক ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (বিপৎসীমা ৫২.১৫ সেন্টিমিটার)। এ পরিস্থিতিতে পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে রাখতে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। একই সময়ে কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানির উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ২৯.৩০ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার দশমিক ১ সেন্টিমিটার নিচে।
রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী, নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার নিম্নাঞ্চলসহ লালমনিরহাটের পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধার বিভিন্ন এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। ফলে এসব অঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে।
ডিমলার ছোটখাতা গ্রামের বাসিন্দা জুলহাস মিয়া বলেন, নদীর পানি বাড়ায় ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে গেছে। গরু-ছাগল আর বাচ্চাদের নিয়ে চরম বিপদে আছি। বাইশপুকুর গ্রামের সলেমান আলী বলেন, পানিবন্দি অবস্থায় বৃদ্ধ, শিশু আর নারীদের নিয়ে ভীষণ কষ্টে আছি। নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে।
বন্যা-পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণকেন্দ্র জানিয়েছে, তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি বাড়ছে, তবে এখনো তা বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে, তবে পরবর্তী দুই দিনে তা আবার হ্রাস পেতে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া শাখার উপপ্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদীন জানান, অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি গেট খোলা রাখা হয়েছে।
আরো পড়ুন: ঢাকার খাল দিয়ে ব্লু নেটওয়ার্ক তৈরির পরিকল্পনা করছে সরকার
তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানি বলেন, প্রতি বছর বন্যা ও ভাঙনে তিস্তা নদী তীরবর্তী এলাকায় ১ লাখ কোটি টাকার সম্পদ নদীগর্ভে চলে যায়। নদী খনন ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন ছাড়া এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়।