দক্ষ নাবিক তৈরিতে অন্যতম শীর্ষ দেশ হতে পারে বাংলাদেশ: নৌ উপদেষ্টা

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:০৮ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ
নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশ দক্ষ্য নাবিক তৈরিতে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম শীর্ষ স্থান অর্জনকারী দেশ হওয়ার সক্ষমতা রাখে। জাহাজ নির্মাণে আমাদের যে ঐতিহ্য রয়েছে তা পুনরুদ্ধারের জন্য আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছি। এছাড়াও মেরিনারদের জন্য দূতাবাসগুলোতে পদসৃষ্টির উদ্যোগ নেয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওতে নৌপরিবহন অধিদপ্তরে ওয়ার্ড মেরিটাইম ডে-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন জুলাই আগস্ট বিপ্লবে শাহাদাত বরণকারী সব বীর ছাত্র-জনতাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে বলেন, দূর্নীতি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলেই আজ দেশকে নতুন করে গড়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। আমাদের সামুদ্রিক মানচিত্র অত্যন্ত বৈচিত্রময়। আমাদের রয়েছে বৃহত্তম অভ্যন্তরীণ নৌপথ, বিশাল বঙ্গোপসাগর এবং অবশ্যই আমাদের রয়েছে দক্ষ্য নাবিক। আমাদের চট্টগ্রাম বন্দরের রয়েছে শত শত বছরের ঐতিহ্য। এক সময় এখানেই নির্মাণ করা হতো পাইরেট শিপ যাকে বর্তমানে স্থানীয়ভাবে বলা হয় সাম্পান। চট্টগ্রামেই পর্তুগিজরা বসতি গড়েছিলো। চট্টগ্রাম বন্দরের পর মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দর যাত্রা শুরু করে। আমাদের মেরিন একাডেমিগুলো অত্যন্ত আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানের। বাংলাদেশের পাঁচটি মেরিন একাডেমি থেকে দক্ষ্য ও মেধাবী নাবিকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে আরো কিভাবে উন্নত করা যায় তা নিয়ে আমরা প্রতিদিনই কাজ করছি। বাংলাদেশ মেরিনার তৈরিতে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম শীর্ষস্থান অর্জনকারী দেশ হওয়ার পথে বিশেষ কোন বাঁধা আছে বলে আমি মনে করি না।
আরো পড়ুন: বেবিচকের পার্ট ১৪৭ প্রশিক্ষণের অনুমোদন পেলো ইউএস-বাংলা
উপদেষ্টা আরো বলেন, সাম্পান বা জাহাজ নির্মাণে আমাদের যে ঐতিহ্য রয়েছে তা পুনরুদ্ধারের জন্য আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছি। এছাড়াও মেরিনারদের জন্য দূতাবাসগুলোতে পদসৃষ্টির উদ্যোগ নেয়া হবে। আইএমও কর্তৃক ‘সি’ ক্যাটাগরির দেশ হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন বাংলাদেশের জন্য মেরিন সেক্টরে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রথম পদক্ষেপ। আগামী ২০২৫ সালে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) নির্বাচনে প্রতিযোগিতা করবে।
এ সময়ে উপদেষ্টা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর পেশাদারিত্বের প্রশাংসা করেন। তিনি ওয়ার্ল্ড মেরিটাইম দিবস উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অভিনন্দন জানান।
ওয়ার্ল্ড মেরিটাইম দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘নেভিগেটিং দ্য ফিউচার: সেফটি ফার্স্ট’ প্রতিপাদ্যটি ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) নৌ নিরাপত্তা সংক্রান্ত মূল কনভেনশন ১৯৭৪ এর ৫০ বছর পূর্তিতে যথার্থভাবে আন্তর্জাতিক নৌ নিরাপত্তা, সামুদ্রিক পরিবেশ সুরক্ষা এবং নৌ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কনভেনশন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে আইএমও এর অবদানকে প্রতিফলিত করেছে এবং এই প্রতিপাদ্যটি জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা সঙ্গে গভীরভাবে সম্পৃক্ত।
নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর মোহাম্মদ মাকসুদ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব সঞ্জয় কুমার বণিক। অনুষ্ঠানে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) মহাসচিবের ধারণকৃত বাণী প্রচার, মূলপ্রবন্ধ ও পেপার প্রেজেন্টেশন, মেরিটাইম সেক্টরে অসামান্য অবদানের জন্য পুরস্কার দেয়া হয়।