ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশক নিধন কার্যক্রম শুরু করেছে ডিএনসিসি

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৫ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ
বছরজুড়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে বেশ কিছু কর্মতৎপরতা দেখা যায়। এরপরও ভয়ংকর রূপ দেখিয়ে যায় ডেঙ্গু। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ১৩৬ জনের। এমন অবস্থায় নগরবাসীর অভিযোগ, নাগরিকসেবা নিয়ে কাজ করছে না অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। মাঠ পর্যায়ে দেখা যাচ্ছে না কোনো কার্যক্রম।
এরই মধ্যে মাসব্যাপী ডেঙ্গু নিধন কর্মসূচি পালন করছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে ডেঙ্গু প্রতিরোধে উত্তর সিটির উদ্যোগে মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালিত হয়। প্রথম ধাপে সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত লার্ভিসাইডিং এবং দ্বিতীয় ধাপে বিকেল ৪টা থেকে ৬টা পর্যন্ত এডাল্টিসাইডিং কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
নগরবাসীর উদ্দেশে ডিএনসিসির প্রশাসক মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আমাদের কর্মীরা বাসাবাড়ির আশপাশ পরিষ্কার করে এবং ওষুধ ছিটায়। কিন্তু বাসাবাড়ির ভেতরে আমাদের কর্মীদের পক্ষে কাজ করা সম্ভব হয় না। তাই নিজেদের বাসাবাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ফ্রিজ, এসি, ফুলের টব, অব্যবহৃত টায়ার, ডাবের খোসা, চিপসের খোলা প্যাকেট, বিভিন্ন ধরনের খোলা পাত্র, ছাদ কিংবা অন্য কোথাও যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।’
স্থানীয় সরকার বিভাগের তিনটি তদারকি টিম এবং ডিএনসিসির কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত ১০টি তদারকি টিম ১০টি ভিন্ন এলাকায় তাদের মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
আরো পড়ুন: বাইডেন-ইউনূস বৈঠক: যে বার্তা পেল বাংলাদেশ
উল্লেখ্য, ডেঙ্গু রোগের সংক্রমণ হতে নাগরিকদের রক্ষাকল্পে জনসচেতনতা সৃষ্টি, মশার প্রজননস্থল বিনষ্টকরণ, পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা এবং লার্ভা ও মশা নিধন ইত্যাদি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় ডিএনসিসির মশক নিধন অভিযান যথাযথভাবে বাস্তবায়ন, সমন্বয় ও নিবিড় তদারকির জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও ডিএনসিসির প্রশাসক মো. মাহমুদুল হাসান, অতিরিক্ত সচিব এ. কে. এম, তারিকুল আলম এবং যুগ্মসচিব আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসানের নেতৃত্বে তিনটি তদারকি টিম গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি টিমে দুইজন করে কর্মকর্তা রয়েছে।
ডিএনসিসির অঞ্চল-৬ এর আওতাধীন ৫২ ও ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত বাইলজুড়ী, বাউনিয়া, দলিপাড়া, আহালিয়া, পাকুড়িয়া, বাদালদি, চান্দুরা, তাফলিয়া, মান্দুরা, নলভোগ, নয়ানগর, শুক্রভাঙ্গা, ধরাঙ্গারট এলাকায় চলমান মশক নিধন কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শন করেন ডিএনসিসির প্রশাসক মো. মাহমুদুল হাসান। এসময় তিনি জনগণের মাঝে ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করেন।
ডিএনসিসির অঞ্চল-২ এর আওতাধীন ৩, ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত মিরপুর সেকশন-৬, ১১, ১২, ১৩ ও ১৪ এলাকায় সকালে ও বিকালে পরিচালিত লার্ভিসাইডিং ও এডাল্টিসাইডিং কার্যক্রম সরেজমিনে তদারকি করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ. কে. এম, তারিকুল আলম।
ডিএনসিসির অঞ্চল-১০ এর আওতাধীন ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত সাতারকুল, টেকপাড়া বাড্ডা, সোনা কাটরা, সেকান্দারবাগ, মধ্যবাড্ডা, মোল্লাপাড়া, বেপারীপাড়া, পোস্ট অফিস রোড ও লৌহেরটেক, মধ্যপাড়া, মোল্লাপাড়া, মোল্লাপাড়া আদর্শ নগর, উত্তরবাড্ডা পূর্বপাড়া, উত্তরবাড্ডা ময়নারটেক, বাওয়ালীপাড়া, উত্তরবাড্ডা পূর্বপাড়া (আব্দুল্লাহবাগ), উত্তরবাড্ডা মিছরী টোলা এলাকায় সকালে ও বিকালে পরিচালিত লার্ভিসাইডিং ও এডাল্টিসাইডিং কার্যক্রম সরেজমিনে তদারকি করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্মসচিব আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান।
এছাড়াও ডিএনসিসির অন্যান্য সব অঞ্চলে ডিএনসিসির সকল বিভাগের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত তদারকি টিম ও আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাগণ সরেজমিনে মশক নিধন কার্যক্রম তদারকি করে। মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি ডিএনসিসির দশটি অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে লিফলেট বিতরণ করেন কর্মকর্তারা এবং মাইকিং করে জনসাধারণকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সচেতন করা হয়।