‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচি থেকে যে ৫ দফা দাবি দিলেন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৭ পিএম
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির এক মাস পূর্তি উপলক্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে চারটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শহীদি মার্চ কর্মসূচি শেষে এ ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা।
এর আগে বিকেল সাড়ে ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে শহীদি মার্চ শুরু হয়ে নীলক্ষেত-নিউমার্কেট-সায়েন্সল্যাব-কলাবাগান-মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ-সংসদ ভবন হয়ে ফার্মগেট-কারওয়ান বাজার-শাহবাগ-টিএসসি হয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। শহীদি মার্চে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষার্থী এবং সাধারণ জনতা অংশ নেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশে মিলিত হয়।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে, এই আন্দোলনের শহীদ ভাইদের রক্ত এবং তাদের স্পিরিট কখনো বৃথা যেতে দেবো না। এখনো ফ্যাসিস্টদের অস্তিত্ব রয়েছে বলে সারজিস তাদের হুঁশিয়ারি করে দেন। এই স্বাধীনতা আনতে যারা রক্ত দিয়েছেন, তাদের রক্তের মূল্য দিতে যে কোনো সময় নিজেদের রক্ত দিতে প্রস্তুত আছি বলেও জানান তিনি।
আরেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের বলেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা আমাদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করিনি। আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। দেশকে পুনর্গঠনের যে লড়াই সেটি আমাদের চালিয়ে যেতে হবে। এসময় ৫ দফা দাবি জানান সমন্বয়করা।
৫ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-গণহত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা। শহীদদের পরিবারকে দ্রুত আর্থিক ও আইনি সহযোগিতা দেয়া।
প্রশাসনে দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিস্টদের দোসরদের চিহ্নিত করে অনতিবিলম্বে বিচারের আওতায় আনা। গণভবনকে জুলাই স্মৃতি যাদুঘর ঘোষণা করা এবং
রাষ্ট্র পুনর্গঠনের রোডম্যাপ দ্রুত ঘোষণা করা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে গত জুলাইয়ের শুরুতে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এই আন্দোলন দমনে ছাত্রলীগসহ তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংগঠন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হামলা-নির্যাতনের একপর্যায়ে তা সরকারের পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়।
ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে যান। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের টানা প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের তিন দিন পর গত ৮ আগস্ট শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ শপথ নেয়।