জি এম কাদের
দেশের মানুষ যেন আতঙ্ক নগরের বাসিন্দা

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২৪, ০৭:০৬ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, আন্দোলন দমাতে সরকার সারাদেশে গণগ্রেপ্তার চালাচ্ছে। তিনি বলেন, অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, সংশ্লিষ্টরা গ্রেপ্তার বাণিজ্য চালাচ্ছে। এ কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ করছে। দেশের মানুষ যেন আতঙ্কের নগরের বাসিন্দা। সোমবার (২৯ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি।
জি এম কাদের বলেন, নিরাপত্তা হেফাজতের নামে বেশ কয়েকদিন ধরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ জন সমন্বয়ককে ডিবি অফিসে আটকে রাখা হয়েছে। তাদের পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে দেখা পর্যন্ত করতে দেয়া হচ্ছে না। এ অবস্থায় তাদের স্বজনদের মধ্যে মারাত্মক উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। তাই নিরাপত্তা হেফাজতের নামে আটক ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ককে দ্রুত মুক্তি দিতে হবে।
তিনি বলেন, দিনের পর দিন নিরাপত্তার নামে সাধারণ ছাত্রদের তাদের পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে আটকে রাখাকে আমরা আইন সম্মত মনে করি না। বাংলাদেশ প্রজাতন্ত্র, এখানে দেশের মালিক জনগণ। দেশের সব ক্ষমতার মালিক জনগণ। সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা বা প্রতিবাদ করার অধিকার প্রতিটি নাগরিকের আছে। তিনি বলেন, অহিংস প্রতিবাদকে রাষ্ট্রদ্রোহ হিসেবে বিবেচনা করার বা সে দৃষ্টিভঙ্গি থেকে রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীকে ব্যবহার করে সহিংসভাবে মোকাবিলা করার অধিকার সরকার বা সরকারি দলের নেই।
ছাত্র আন্দোলন দমন করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বৃষ্টির মতো গুলি ছুড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, হেলিকপ্টার এবং বহুতল বিশিষ্ট বাড়ির ছাদের ওপর থেকে এবং ভ্রাম্যমাণ গাড়ি থেকে জনগণের ওপর নির্বিচারে গুলি বর্ষণ করা হয়েছে। যে কারণে বাবা-মায়ের কোলের মধ্যে ও ঘরের মধ্যে খেলারত অবস্থায় শিশু নিহত হয়েছে। আবার ঘরের ভেতরে কাজ করা অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গৃহিণী নিহত হয়েছেন বলেও গণমাধ্যমে এসেছে। একইভাবে অসংখ্য নিরীহ পথচারী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। প্রশ্ন হলো এ ধরনের গুলি বর্ষণের উদ্দেশ্য কী ছিল? সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা যদি লক্ষ্য হয়, তাহলে এ ধরনের প্রক্রিয়ায় কি সন্ত্রাসী চিহ্নিত করা সম্ভব ছিল? বাবার কোলে শিশু, রান্নাঘরে গৃহিণী ও নিরীহ পথচারী, তারা কি সন্ত্রাসী? এ মৃত্যুর দায়ভার সরকারকে নিতে হবে।
প্রসঙ্গত, রবিবার (২৮ জুলাই) ডিবি হেফাজতে থেকেই আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন সমন্বয়করা। তবে, সাধারণ ছাত্ররা মনে করছেন গোয়েন্দা সংস্থা বলপূর্বক এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করে তাদের বাধ্য করছে। এ কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আটক সমন্বয়কদের সে ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করেছেন।