মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী স্লোগানে ইআরডিএফবির নিন্দা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৪, ০৮:৩০ পিএম

মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী স্লোগানে ইআরডিএফবির নিন্দা। ছবি: ভোরের কাগজ
কোটা ব্যবস্থা সংক্রান্ত সাম্প্রতিক প্রতিবাদর নামে মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননাকর স্লোগানের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে এডুকেশন রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ইআরডিএফবি)।
সোমবার এক বিবৃতিতে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং ন্যায়সঙ্গত সমাজ গঠনে কোটা ব্যবস্থাকে বহাল রাখার জন্য ‘সকল স্টেকহোল্ডারকে’ আহ্বান জানিয়েছে ইআরডিএফবি সভাপতি প্রফেসর সাজ্জাদ হোসেন।
ড. সাজ্জাদ বলেন, গতরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বেশ কয়েক স্থানে কোটা আন্দোলনকারীদের মিছিলে ‘আমরা সবাই রাজাকার’ ও ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ স্লোগান প্রদান করার ঘটনায় আমরা বিস্মিত।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, যদি বিশেষ কোটাগুলো পূরণ না হয়, তাহলে অবশিষ্ট পদ মেধার ভিত্তিতে বণ্টন করতে হবে। জনগণের মাঝে ভুল ধারণা তৈরি হয়েছে, যার ফলে ২০১৮ সালে তা বিলুপ্ত করা হয়।
ইআরডিএফবি সভাপতি ড সাজ্জাদ বলেন, বেশি প্রতিযোগিতামূলক চাকরির ক্ষেত্রে দেশের সব অঞ্চল থেকে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা জরুরি। উন্নত দেশগুলোতে পরিলক্ষিত অনুশীলনের সঙ্গতি রেখে নারীর অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধীদের অন্তর্ভুক্তির জন্য কোটা ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করা জরুরি।
প্রকৃতপক্ষে ২০১৮ সালে ব্যাপক ছাত্র আন্দোলনের পর বাংলাদেশ সরকার কোটা ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে এবং ১০ জুলাই আপিল বিভাগ হাইকোর্টের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা পুনরুদ্ধারের আদেশের উপর এক মাসের স্থগিতাদেশ জারি করে।
ইআরডিএফবির বিবৃতিতে বলা হয়, এই মুহূর্তে কোটা ব্যবস্থা বৈধ নয়, তবুও মুক্তিপন্থী বিরোধী শক্তি সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো এবং মুক্তিযোদ্ধাদের গৌরব ক্ষুণ্ণ করার জন্য তাদের ক্যাডারদের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের উস্কে দিচ্ছে। ইআরডিএফবি এ ধরনের পদক্ষেপের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে। কোটা বিলুপ্তির ফলে নারীদের নিয়োগ ২৬.৮৭ থেকে ১৯.৪ শতাংশে নেমে এসেছে।
এছাড়া ৪৩তম পুলিশ ব্যাচে নারী অফিসারের হার ১৭.০৫ শতাংশে নেমে এসেছে। কোটা বিলুপ্তির ফলে দেশের একতৃতীয়াংশ জেলার চাকরি সন্ধানকারীদের উপর নেতিবাচকভাবে প্রভাব পড়েছে এবং গুরুত্বপূর্ণ খাতে প্রতিনিধিত্বের অভাব রয়ে গেছে গেছে।
প্রফেসর সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসের কালো অধ্যায়ে ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত স্বৈরাচারী শাসনে মুক্তিযোদ্ধারা বিশেষভাবে বঞ্চিত হন, যার ফলে তাদের পরিবারের সামাজিক ও অর্থনৈতিক পিছিয়ে পড়া হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা এই ঐতিহাসিক অবিচারের কথা মাথায় রেখে করা হয়েছিল। গত ৩৫তম থেকে ৩৯তম বিসিএস পরীক্ষায় মাত্র ৮.৭ শতাংশ কোটা ব্যবহার করা হয়, বাকি ২১.৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে পূরণ করা হয়, যা এই নীতির ন্যায্য বাস্তবায়ন প্রমাণ করে বলে দাবি করেন ইআরডিএফবির সভাপতি।
ইআরডিএফবির বিবৃতিতে বলা হয়, কোটাধারী না কোটাধারী সব প্রার্থীকেই প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষা পাস করতে হয়। ভাইভা পাস করা প্রার্থীদের মধ্যে মাত্র ১.৬ থেকে ১.৮ শতাংশ কোটা সুবিধা পান। কোটা পদ্ধতি থেকে উপকৃত সফল প্রার্থীদের অল্প শতাংশের সমালোচনা করা অযৌক্তিক ও ভুল তথ্যভিত্তিক।