রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) নেয়া বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ সময়মতো শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। 

রাজউকের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা সবকিছু করলেন বাস্তবায়ন করবেন কবে? ২০১১ সালে প্ল্যান করলেন। এটা কি কাছাকাছি মনে হয়। এখন ২০২৪ সাল। বলতে পারেন আমরা তো ড্রইং করেছি, ডিজাইন করেছি, এটা করেছি, ওটা করেছি, পেপার তৈরি করেছি। বাস্তব কাজ কতুটুকু করেছেন? কিসের পরিকল্পনাটা করি আমরা? যে পরিকল্পনায় কোনো অগ্রগতি নাই। সেই পরিকল্পনা করে লাভটা কী। এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন মন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দুপুরে রাজউক অডিটোরিয়ামে হাজারীবাগ ট্যানারি শিল্প এলাকায় জলবায়ু সহিষ্ণু সবুজ কর্ম পরিকল্পনা নিয়ে দিনব্যাপী কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। 

রাজউক আয়োজিত এই কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব নবীরুল ইসলাম। রাজউক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. ছিদ্দিকুর রহমান সরকারের সভাপতিত্বে কর্মশালায় আরো বক্তব্য রাখেন- প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম, সিআরজিএপির টিম লিডার ফজলে রেজা সুমন প্রমুখ।

গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, ১৯৯৭ সালে আমি প্রধানমন্ত্রীর অফিসে কাজ করেছি। তখন থেকে হাজারীবাগের কথা শুনেছি। হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি সরিয়ে নেয়ার কথা হয়; কিন্তু এখনো পুরোদমে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। আবার যেখানে নেয়া হয়েছে; সেখানেও কাজটা সঠিকভাবে হয়নি। এখানেও যে অবস্থায় আছেন সেটা খুবই দুরবস্থা।

আরো পড়ুন : নিম্নমানের প্রিপেইড মিটার কেনা নিয়ে সংসদীয় কমিটির তদন্তের সুপারিশ

রাজউকের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, রাজউক অনেক শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান। আমরা যারা রাজনীতি করি শুধু আমাদের শক্তি নাই। আপনাদের অনেক শক্তি, এজন্য চাইব কাজটা করেন। 

রাজউকের পূর্বাচল প্রকল্পের উদাহরণ টেনে গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, আমাকে একজন রাজনীতিবিদ জিজ্ঞাসা করলেন পূর্বাচলে কাজ করবে কবে। আমি তাকে বললাম আপনি যখন পারেন নি, সুতরাং আমার মেয়াদে ৫ বছর যদি থাকতে পারি, আমিও নিশ্চিয়তা দিয়ে বলতে পারব না কবে এটা চালু হবে। কেনো পারব না বলেন? কিসের পরিকল্পনাটা করি আমরা? যে পরিকল্পনায় কোনো অগ্রগতি নাই। সেই পরিকল্পনা করে লাভটা কী। এই যে প্ল্যান করলেন; এটার কর্মশালা করতে করতেই যদি বছর চলে যায়.. বাস্তবায়ন করবেন কবে? আমি বাস্তবায়নে জোর দিতে চাই। তিনি বলেন, আসুন সবাই মিলে আমরা চিন্তা করি। এই প্রকল্পের কাজটা ২০২৪ সালেই শুরু করে দিতে চাই। ৬ মাস চলে গেছে, আর ৬ মাস গেলে এক বছর চলে যাবে। এ বছর শেষ হওয়ার আগেই কাজটা অন্তত শুরু করেন। শুরু করলে শেষ হবেই। শুরু করতে করতে যদি সময় শেষ হয়ে যায়! 

র আ ম উবায়দুল মোকতাদির বলেন, পূর্বাচলে অনেকে প্লট কিনেছেন। যারা এখন আর জীবিত নেই। আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি দেয়ার কথা। কত মুক্তিযোদ্ধা যে মারা গেছেন তবুও বিষয়টার সমাধান হয়নি। কারণ আমরা দ্রুত কাজ করতে পারি না। তিনি বলেন, আমাদের অসুবিধাটা কোথায়। আমার কাছে সব সময় মনে হয় অসুবিধা দু’টি জায়গায়। ক্রমন্বয়ে আমাদের থেকে দেশপ্রেম কমে যাচ্ছে। আর একটা হচ্ছে দায়িত্ববোধ কমে যাচ্ছে। দায়িত্ব ও কর্তব্যের সঙ্গে সম্পর্ক যদি থাকে তাহলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী যারা আছেন সময়ের মধ্যে সময়ের কাজটা করার কথা। সময় চলে যাচ্ছে। কবে গ্রীন ঢাকা করবেন? কবে রেজিলিয়ান্স ঢাকা করবেন। আসুন সবাই মিলে কাজটা করি। কর্মশালা শেষে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছান, শুক্রবার থেকেই কাজটা যাতে শুরু করা যায়, সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে এখান থেকে বের হোন।