×

জাতীয়

ফাঁসির আগে আসামির সঙ্গে কী কী ঘটে? জানিয়েছিলেন জল্লাদ শাহজাহান!

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৪, ১০:২৬ পিএম

   

গেল ২৪ জুন রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জীবনের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সারা দেশের আলোচিত ‘জল্লাদ’ শাহজাহান। টানা ৩২ বছর কারাগারে ছিলেন এক সময়কার এই কুখ্যাত ডাকাত। ফাঁসির আগে আসামির সঙ্গে কী কী করা হয় তা জানা গেল জল্লাদ শাহজাহানের আত্মজীবনীমূলক বই (কেমন ছিলো জল্লাদ জীবন) থেকে। 

আত্মজীবনীমূলক বইতে জল্লাদ শাহজাহান জানিয়েছিলেন- কোনো আসামির ফাঁসির চূড়ান্ত আদেশ পাওয়ার ২১ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ফাঁসির রায় হওয়ার পরপরই সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে কনডেম সেলে রাখা হয়। যেদিন ফাঁসি কার্যকর করা হবে তার দুইদিন আগে আসামিকে ১ নম্বর কনডেম সেলে রাখা হয়। যেখান থেকে বের হলেই ফাঁসির মঞ্চ।

জল্লাদদের ফাঁসি কার্যকর করার দুইদিন আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়। আসামির ভর ও উচ্চতার সঙ্গে মিল রেখে বস্তা দিয়ে একটা পুতুল বানিয়ে সেই পুতুলকে কয়েকবার ফাঁসিতে ঝুলিয়ে পরীক্ষা করা হয়- সবকিছু ঠিক আছে কিনা। ফাঁসির মঞ্চের সব লোহার যন্ত্রপাতিতে তেল-গ্রিজ মেখে পিচ্ছিল রাখা হয়। এছাড়া জেল সুবেদার এবং জেলাররা ফাঁসির আগে আসামির ঘনঘন খোঁজ খবর নেন। আসামির ইচ্ছানুযায়ী সাধ্যমতো ভালো খাবারের ব্যবস্থা করেন। ফাঁসির দিন আসামির পরিবারকে জানানো হয় যে- শেষবারের মতো এসে দেখা করে যান।

পরিবারের স্বজনদের শেষ বিদায় দেয়ার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন আসামি এবং স্বজনরা। ফাঁসির দিন রাত ৮টা পর্যন্ত পরিবারের লোকেরা আসামির সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পান। ফাঁসির আগ পর্যন্ত বেশি বেশি করে নফল নামাজ পড়ে আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা চাইতে থাকেন আসামী। রাত ৮টায় ফাঁসির প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়, মুসলিম আসামির ক্ষেত্রে সহকারী জল্লাদরা কুসুম গরম পানিতে বড়ই পাতা, নিম পাতা দিয়ে গোসলের পানির ব্যবস্থা করেন। এরপর রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যে বাইরে থেকে মাওলানা এসে আসামিকে তওবা পড়ান। সেই নতুন কাপড় পড়ে হুজুরের সামনে বসে তওবা পড়েন আসামি। এরপর নির্দিষ্ট সময়ের ১ ঘন্টা আগে জল্লাদরা ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুত করেন। এর মধ্যেই হাজির হন- সিভিল সার্জন, এডিএম, ডিসি, ও‍সি, এসপি, ডাক্তার, নার্সসহ সংশ্লিষ্ট উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা।  নির্দিষ্ট সময়ের ১০ মিনিট আগে জল্লাদদের সঙ্গে নিয়ে জেলসুপার সবাইকে নিয়ে আসামির সেলে যান এবং আসামির কাছে শেষ ইচ্ছা জানতে চান। সেই সময় কান্নায় ভেঙে পড়ে শেষবারের মতো পরিবারের লোকদের অসিয়ত করে শেষ বিদায় দেন। এরপর জল্লাদরা  আসামির হাত পেছনে নিয়ে হ্যান্ডকাফ পড়ান।

প্রধান জল্লাদ কালো টুপি পড়িয়ে মাথা থেকে গলা পর্যন্ত ঢেকে দেন। এরপর আসামিকে ধরে ফাঁসির মঞ্চে নিয়ে প্রধান জল্লাদ আসামির গলায় ফাসির দড়ি লাগিয়ে লিভার টানার অপেক্ষায় থাকেন। জেল সুপারও মঞ্চে উঠে হাতে একটি লাল রুমাল নিয়ে জল্লাদের ঠিক সামনে দাঁড়িয়ে হাতঘড়ি দেখতে থাকেন। প্রধান জল্লাদ আসামিকে কালেমা পড়তে বলেন। জেল সুপার রুমাল ছেড়ে দিলেই প্রধান জল্লাদ ফাঁসির দড়ির লিভার টেনে দেন। তখনই পায়ের নিচ থেকে ১০ ফুট উচু মঞ্চের উপরের জোড়া কপাট ফাক হয়ে যায়। এরপর আসামি দড়িতে ঝুলতে ঝুলতে ১৭/১৮ মিনিট পর জীবনের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এরপর মৃত্যু নিশ্চিতের জন্য ডাক্তার আসামির দেহ পরীক্ষা করেন। মৃত্যু নিশ্চিতের পর মাওলানা সাহেব আগে থেকেই প্রস্তুত রাখা সেই গোসলের পানি দিয়ে লাশকে গোসল করান। এরপর মরদেহ কফিনে শোয়োনোর পর অ্যাম্বুলেন্সে উঠিয়ে লাশ পাঠিয়ে দেয়া হয় পরিবারের কাছে। 


সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App