এডিসি কামরুল ও তার স্ত্রীর সম্পদ জব্দে নির্দেশ

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৪, ০৩:১০ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রাম নগর পুলিশে অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) কামরুল হাসান ও তার স্ত্রী সায়মা বেগমের অবৈধ সম্পদ জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তাদের নামে ১১ কোটি ৩৪ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (৯ জুলাই) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ বেগম জেবুননেছা এই আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক এমরান হোসেন।
তিনি বলেন, অনুসন্ধান করে পুলিশ কর্মকর্তা কামরুল হাসান ও তার স্ত্রীর নামে ১১ কোটি ৩৪ লাখ টাকার স্থাবর–অস্থাবর অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক। গত মাসে দুদক প্রধান কার্যালয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই তাদের সম্পত্তি ক্রোকের জন্য দুদকের কারা আবেদন মঞ্জুর করেছে আদালতে।
দুদক সূত্রে জানা যায়, কামরুল হাসান ১৯৮৯ সালে উপ-পরিদর্শক (এসআই) হিসেবে পুলিশ বাহিনীতে যুক্ত হন। পরে পদোন্নতি পেয়ে তিনি হাটহাজারী বাঁশখালীসহ বিভিন্ন থানায় ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। গত বছর নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার প্রসিকিউশন হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তাকে বদলি করা হয়। তিনি চট্টগ্রাম আদালতের হাজতখানার আসামিদের জন্য সরকারি বরাদ্দের খাবার বিতরণ না করে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বিল উত্তোলন করে নিতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আরো পড়ুন: প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে আবেদ আলীসহ ১৭ জন আদালতে
‘আসামিদের খাবারের টাকা পুলিশের পকেটে’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশের পর পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। কমিটির প্রতিবেদনে আসামিদের খাবারের টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া যায়। কিন্তু কামরুল হাসানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলেও জানায় দুদক।
নগর পুলিশের হিসাব শাখার কয়েকজন কর্মকর্তাকে ফাঁসিয়ে দেয়া হয়। অথচ কামরুল হাসান যে বিল পাঠিয়েছেন, তারা এর অনুমোদন দিয়েছেন।
দুদকের সহকারী পরিচালক এমরান হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, পুলিশ কর্মকর্তা কামরুল হাসানের নামে নগরের পাহাড়তলীতে বাড়ি ও খুলশী ডিআইজি অফিসের পাশে ২ হাজার ৫৭০ বর্গফুটের কোটি টাকা মূল্যের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এটি থেকে মাসিক ভাড়া পান ৭০ হাজার টাকা। এ ছাড়া অনন্যা আবাসিক এলাকায় প্লট রয়েছে।
এছাড়াও কামরুল হাসানের মালিকানায় ঢাকার সাভারে সাভার সিটি সেন্টার ও সাভার সিটি টাওয়ার নামে দুটি মার্কেট রয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা হয়েও ব্যবসা কিংবা সম্পত্তিগুলো ক্রয়ের সময় কোনো অনুমতি নেননি তিনি। এমনকি চট্টগ্রাম শহরে বাড়ি থাকলেও তা গোপন করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) দেয়া অনন্যা আবাসিক এলাকা থেকে প্লট নেন কামরুল হাসান।
তার স্ত্রী সায়মা বেগমের নামে চারটি নৌযান রয়েছে। দুদকের অনুসন্ধানে এ পর্যন্ত ১১ কোটি ৩৪ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। কামরুল হাসান ও তার স্ত্রীর নামে আর কোনো সম্পদ আছে কি না,তা নিয়ে তদন্ত চলছে।