কৃষিখাতে অবদানের জন্য এআইপি সম্মাননা পেলেন ২২ জন

হরলাল রায় সাগর
প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৪ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ
কৃষিখাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি-২০২১ (এগ্রিকালচারাল ইম্পরট্যান্ট পারসন-এআইপি) সম্মাননা পেয়েছেন ২২ জন। রবিবার (৭ জুলাই) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে কৃষি মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাদের হাতে এআইপি সম্মাননা তুলে দেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ। এবার দ্বিতীয়বারের মতো ৫ বিভাগে এই সম্মাননা দেয়া হলো।
কৃষি মন্ত্রণালয় ২০১৯ সালে কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এআইপি) নীতিমালা তৈরি করে। তার আলোকে ২০২০ সাল থেকে দেয়া হচ্ছে এই সম্মাননা। ২০২০ সালে এআইপি সম্মাননা পেয়েছিলেন ১৩ জন।
কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মলয় চৌধুরী।
যারা পেলেন সম্মাননা: কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কৃষি উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাইখ সিরাজ, পরিবেশ বিষয়ক সংগঠক হিসেবে চট্টগ্রামভিত্তিক সংগঠন ‘তিলোত্তমার’ প্রতিষ্ঠাতা সাহেলা আবেদীন ও সমবায় উদ্যোক্তা হিসেবে সাতক্ষীরার ‘ধানদিয়া সিআইজি মহিলা সমবায় সমিতির’ সভাপতি শিখা রানী চক্রবর্তী এপিআই সম্মাননা পেয়েছেন।
জাত বা প্রযুক্তি উদ্ভাবন শ্রেণিতে এসিআই অ্যাগ্রিবিজনেসের প্রেসিডেন্ট এ কে এম ফারায়েজুল হক আনসারী, কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার বিষমুক্ত নিরাপদ সবজির কৃষি উদ্যোক্তা এম এ মতিন, কৃষি যান্ত্রিকীকরণের জন্য চুয়াডাঙ্গার ‘জনতা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের’ স্বত্বাধিকারী মো. ওলি উল্লাহ এবং জৈব বালাইনাশক ব্যবহারের জন্য বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলা চেয়ারম্যান স্বপন কুমার দাশ সম্মাননা পেয়েছেন।
কৃষি উৎপাদন, বাণিজ্যিক খামার স্থাপন ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প শ্রেণিতে ১০ জন এআইপি হয়েছেন। তারা হলেন-উন্নতজাতের ফলচাষের জন্য টাঙ্গাইল জেলার মধুপুরের কৃষি উদ্যোক্তা মো. ছানোয়ার হোসেন, পেঁয়াজ বীজ চাষের জন্য ফরিদপুরের খান বীজ ভাণ্ডারের স্বত্বাধিকারী শাহীদা বেগম, সাথী ফসল উৎপাদন করে জমির সর্বোত্তম ব্যবহারের জন্য খুলনার ডুমুরিয়ার কৃষি উদ্যোক্তা সুরেশ্বর মল্লিক, ফলচাষের জন্য চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের ‘গ্রিন প্ল্যানেট অ্যাগ্রোর’ স্বত্বাধিকারী মো. রুহুল আমীন, জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করায় সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার অ্যাগ্রো বেইজড ‘সোসিও ইকোনমিক্যাল ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেসের’ চেয়ারম্যান মো. সাখাওয়াত হোসেন, দুগ্ধ উৎপাদনে পাবনার ঈশ্বরদীর ‘তন্ময় ডেইরি খামারের’ স্বত্বাধিকারী মো. আমিরুল ইসলাম এ সম্মান পেয়েছেন।
এছাড়া মাছ চাষে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের ‘আল বারাকা মৎস্য খামার অ্যান্ড হ্যাচারির’ স্বত্বাধিকারী মাছুদুল হক চৌধুরী, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মৌচাষী কৃষি উদ্যোক্তা মো. রফিকুল ইসলাম, সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের ফলচাষী ‘সিরাজ বহুমুখী খামারের’ স্বত্বাধিকারী মো. সিরাজুল ইসলাম ও শেরপুর সদর উপজেলার ফলচাষী ‘মা-বাবার দোয়া ফ্রুট গার্ডেন নার্সারি অ্যান্ড অ্যাগ্রো ফার্মের’ স্বত্বাধিকারী মো. হযরত আলী এআইপি হয়েছেন।
রপ্তানিযোগ্য কৃষিপণ্য উৎপাদন শ্রেণিতে দুজন এআইপি নির্বাচিত হয়েছেন। তারা হলেন- বৃক্ষরোপণ ও বনসাই নার্সারির জন্য গাজীপুর সদর উপজেলার ‘লিভিং আর্ট গার্ডেনের’ পরিচালক কে এম সবুজ ও বারোমাসি আম চাষি চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের কৃষি উদ্যোক্তা মো. রফিকুল ইসলাম।
বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কারে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত শ্রেণিতে তিনজনকে এআইপি নির্বাচন করা হয়েছে। জৈবসার ও কেঁচো সার উৎপাদক নীলফামারীর ডোমার উপজেলার ‘অন্নপূর্ণা অ্যাগ্রো সার্ভিসের’ স্বত্বাধিকারী রাম নিবাস আগরওয়ালা, বাণিজ্যিক কৃষি খামারি হিসেবে ঢাকার নবাবগঞ্জের ‘অমিত ডেইরি ফার্মের’ স্বত্বাধিকারী মায়া রানী বাউল ও সফল বীজ উৎপাদনকারী পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার কৃষি উদ্যোক্তা মো. আবদুল খালেক এআইপি সম্মাননা পেয়েছেন।
এআইপিরা যেসব সুযোগ-সুবিধা পাবেন: এআইপি নীতিমালা অনুযায়ী প্রতি বছর মোট পাঁচটি বিভাগে এ সম্মাননা দেয়া হয়। এআইপি কার্ডের মেয়াদকাল এক বছর। এআইপি স্বীকৃতিপ্রাপ্তরা সিআইপিদের মত সুযোগসুবিধা পান। এর মধ্যে রয়েছে মন্ত্রণালয়ের প্রশংসাপত্র, বাংলাদেশ সচিবালয়ে প্রবেশের জন্য পাস, বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানে নাগরিক সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ; বিমান, রেল, সড়ক ও জলপথে ভ্রমণে সরকার পরিচালিত গণপরিবহনে আসন সংরক্ষণ অগ্রাধিকার; নিজের ও পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালের কেবিন সুবিধা প্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার এবং বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহার সুবিধা।