খামারি-মন্ত্রণালয় মিলেমিশে করছে নিষিদ্ধ ব্রাহমা জালিয়াতি

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৪:২২ পিএম
নানা কারণে দেশে আমদানি নিষিদ্ধের করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাহমা জাতের গরু। কিন্তু উচ্চবংশীয় গরু ও দেশের সর্বোচ্চ দামের ছাগলকে জড়িয়ে আলোচনায় আসা, সাদিক এগ্রোর ফার্মে থাকা নিষিদ্ধ ব্রাহমা প্রজাতির ১৩টি গরুর সন্ধান পেয়েছে দুদক। এমন পরিস্থিতিতে আবার আলোচনায় আসলো এ প্রজাতির গরু।
জানা গেছে- গরুর এ প্রজাতিটির উৎপত্তি ভারতে হলেও যুক্তরাষ্ট্রে আরও দু-তিনটি জাতের সংমিশ্রণে ব্রাহমা গরুকে উন্নত করা হয়। এ জাতের গরু লালন-পালন করা হয় মূলত মাংসের জন্য। ব্রাহমা গরু উচ্চ তাপমাত্রায় ভালো থাকে এরা, রোগবালাই কম। আর প্রতিদিন দেড় কেজি পর্যন্ত এই গরুর ওজন বাড়ে।
কিন্তু গাভির দুধ উৎপাদনক্ষমতা খুবই কম। সে কারণেই বাংলাদেশে ব্রাহামা জাতের গরু আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ জাতের গরু বাংলাদেশে পালন ও উৎপাদন নিষিদ্ধ না হলেও ২০১৬ সালে এক নীতিমালা দিয়ে এই জাতটিকে আমদানি নিষিদ্ধের তালিকায় রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশ থেকে ফ্রিজিয়ান গরুর সংকর হোলস্টেইন জাত আমদানি করে থাকে। এই প্রজাতির গাভী দিনে ৬ থেকে ৩০ লিটার পর্যন্ত দুধ দেয়। আর এই জাতের ষাঁড়ের ওজন ৮০০ থেকে ১ হাজার কেজি। অন্যদিকে ব্রাহামা প্রজাতির ষাঁড়ের ওজন ১ হাজার ৪০০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
ব্রাহমা জাতের গরু তার আকৃতি অনুযায়ী বেশি দুধ দেয় না। যতটা দুধ দেয়, তাতে শুধু বাছুরের চাহিদাটুকু মেটে। খামারিরা অধিক মুনাফার আশায় যদি ব্যাপক হারে ব্রাহমা উৎপাদন করে তাহলে দেশে গরুর দুধের উৎপাদন কমে যাবে। মূলত বাংলাদেশে দুগ্ধ উৎপাদন খাতকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্যই বেসরকারি পর্যায়ে এ জাতের গরু আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
২০০৮ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ব্রাহমা গরু পালনে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কয়েক দফায় শতকোটি টাকা খরচ করে। প্রথমে বিফ ক্যাটেল ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের মাধ্যমে ১১ উপজেলায় তিন বছরের জন্য পরীক্ষামূলক কাজ শুরু হয়। পরে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বিদেশ থেকে ৬০ হাজার শুক্রাণু এনে দেশি গাভীতে ঘটানো হয় প্রজনন।
২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৪৮ জেলার ১৮৫ উপজেলায় ব্রাহমার বিস্তার ঘটানো হয়। এ ধারাবাহিকতায় এখনও কিছু খামারি ব্রাহমা জাতের গরু পালন করছে। সম্প্রতি দেশজুড়ে বিতর্কের মুখে পড়েছে মাংস উৎপাদনকারী গরুর জাত ব্রাহমা। আর আতঙ্কে আছেন ব্রাহমা উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত খামারি। জানা গেছে, এখনও দেশের শতাধিক খামারে এ জাতের গরু লালন-পালন হচ্ছে।