ফাঁসির আগে জল্লাদ শাহজাহানকে যা বলেছিলেন মীর কাসেম আলী

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ০৬:৪৬ পিএম
একজন আলোচিত ব্যক্তি জল্লাদ শাহজাহান। জীবনের ৪৪টি বসন্তই যার কেটেছে অন্ধকার কারাগারে।
৪৪ বছর কারাবাসের আগেও ২ বার জেলে যান এই জল্লাদ। সেনা আইন ভঙ্গ করায় ১৯৮১ সালে প্রথম এবং আরেকবার যান ডাকাতি মামলায়। জেল জীবনের আগে ৪শ ডাকাতি করেন তিনি।
জেলখানায় কাটানো দীর্ঘ ৪৪ বছরের কারাজীবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৬ আসামি ও যুদ্ধাপরাধীসহ ৬০ জনের ফাঁসি কার্যকর করে আলোচনায় আসেন জল্লাদ।
তাদের ফাঁসির কার্যকর করতে গিয়ে কী হয়েছিল তা জানালেন জল্লাদ শাহজাহান। কেমন ছিল জল্লাদ জীবন এই বইতে শাহজাহান তুলে ধরেন সেই লোমহর্ষক বর্ণনা।
এতে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছিলাম যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি দিতে পেরে। শেষ ফাঁসি দিয়েছিলাম যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীকে।
ফাঁসির জন্য মীর কাসেমকে কনডেম সেলে নিয়ে আসার পর তার রুম আমি নিজেই পরিস্কার করে তাকে বিছানা করে দিয়েছিলাম। পরে কনডেম সেল থেকে যখন ভিআইপি সেলে শিফট করা হয়েছিল তখন তার দেখভালের দায়িত্বে আমিই ছিলাম। তখন থেকেই তার সাথে আমার কথাবার্তা হতো। সে জানতো আমি একজন জল্লাদ।
শাহজাহান তার বইতে আরো বলেন, মীর কাসেম চেয়েছিল তার ফাঁসিটা কাশিমপুর কারাগারেই হোক। ফাঁসির দিন সন্ধ্যায় আমি যখন তার মঞ্চ তৈরি করছি তখন সে কারারক্ষীদের নিয়ে খোঁজ নিল আমি এসেছি কিনা। এরপর সে আমাকে ডেকে পাঠালো এবং বললো যাক তুমি এসেছ ভালই হয়েছে। আমি মনে মনে চেয়েছিলাম আমার ফাঁসিটা যেন তোমার হাতেই হয়। শাহজাহান বলেন আমিও তখন মনে মনে বলছিলাম আপনার ফাঁসি দিতে আমারও খুব আগ্রহ। কারণ আমি যুদ্ধাপরাধীদের ২ চোখে দেখতে পারি না।
শাহজাহান তার বইতে আরো বলেন, শাহজাহান তাড়াতাড়ি শেষ করে দিও এবং জানতে চাইলেন কতক্ষণ লাগবে? আমি বললাম বেশি না তিন চার মিনিটেই শেষ হয়ে যাইবেন।
এরপর মীর কাসেমকে হ্যান্ডকাপ পড়ালাম। যমটুপি পড়ানোর সময় সে বলল টুপিটা একটু পরে পরাও। তার কথা মেনে যমটুপি ছাড়াই কনডেম সেল থেকে বের করলাম। এরপর পা বেধে ফাঁসি কার্যকর করলাম।
দীর্ঘ কারাভোগ শেষে গেল বছরের ১৮ জুন মুক্তি পান তিনি। মুক্তির ৩৭০ দিন পর গেল ২৪ জুন রাজধানীর একটি হাসপাতাল চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরপারে পাড়ি জমান জল্লাদ শাহজাহান।