আছাদুজ্জামান মিয়ার তথ্য ফাঁস করায় চাকরি গেলো এডিসি জিসানুলের

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৪, ০৮:৪৫ পিএম

এডিসি জিসানুল হক ও ডিএমপির সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। ছবি: সংগৃহীত
গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) সিটিএসবি অ্যান্ড প্রোটেকশন বিভাগের এডিসি জিসানুল হককে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার ব্যক্তিগত তথ্য সাংবাদিকদের দেয়ার অভিযোগে তাকে বরখাস্ত করা হলো।
সোমবার (২৪ জুন) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মো. জাহাংগীর আলমের সই করা এক প্রজ্ঞাপন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জিএমপির সিটিএসবি অ্যান্ড প্রোটেকশন বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার জিসানুল হকের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ধারা ৩৯(১) এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ১২(১) অনুযায়ী যা অবৈধ ও অনৈতিক। তাই তাকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো।
গত ১৯ জুন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে জিসানুলকে বরখাস্ত করার সুপারিশ করে চিঠি দেয় পুলিশ সদরদপ্তর। এতে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশও করা হয়।
চিঠিতে বলা হয়, গত ১২ জুন ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) থেকে জাওয়াদ নির্ঝর নামের একটি ফেসবুক আইডির পোস্টে ডিএমপির সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াকে নিয়ে পোস্ট পাওয়া যায়। পোস্টের কমেন্ট সেকশনে জাওয়াদ নির্ঝর নামের টেলিগ্রাম চ্যানেলের লিংক উদ্ধৃত থাকে। চ্যানেলে প্রবেশ করলে ওই দিন সন্ধ্যা ৭টা ৫৬ মিনিটে আছাদুজ্জামান মিয়ার ইএসএএফ ফর্ম সম্বলিত টেলিগ্রাম পোস্ট পাওয়া যায়।
যার কিউআর কোড পর্যালোচনায় দেখা যায়, ইএসএএফটি গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এলআইসি শাখার এনটিএমসির এনআইপি সার্ভার থেকে এএসআই মো. আরিফ হোসেনের আইডি হতে ডাউনলোড হয়।
জিএমপির ডিবির (দক্ষিণ) উপ-কমিশনার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁনের দাখিল করা অনুসন্ধান প্রতিবেদনে দেখা যায়, জিসানুল হক সরকারি মোবাইল ফোন নাম্বারের হোয়্যাটসঅ্যাপ থেকে গত ১২ ফেব্রুয়ারি এলআইসি শাখায় কর্মরত এসআই পরিমল চন্দ্র দাসের ব্যক্তিগত হোয়্যাটসঅ্যাপে আছাদুজ্জামান মিয়ার মোবাইল নম্বরের এনআইডি চেয়ে মেসেজ দেন। পরিপ্রেক্ষিতে পরিমল চন্দ্র দাস সরকারি নিপ সেবা হটলাইন নাম্বারে এনআইডি সরবরাহের বার্তা দেন।
সেটি পেয়ে ওই দিন রাত ৮টা ৩৯ মিনিটে এলআইসিতে ডিউটিরত এএসআই মো. আরিফ হোসেন নিপ আইডি থেকে ইএসএএফ ডাউনলোড করে হটলাইনের হোয়্যাটসঅ্যাপের মাধ্যমে এসআই পরিমল চন্দ্র দাসের হোয়্যাটসঅ্যাপ নাম্বারে পাঠান। পরদিন পরিমল চন্দ্র দাস এটি জিসানুল হকের সরকারি মোবাইল নাম্বারের হোয়্যাটসঅ্যাপে পাঠান।
ওই লগইন জিএমপির এলআইসিতে রক্ষিত রেজিস্টারেও পাওয়া যায়। স্পর্শকাতর তথ্য সরকারি উদ্দেশ্য ব্যতীত সংগ্রহ করা অপেশাদার সুলভ আচরণ এবং শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ড হিসেবে পরিগণিত। এ অবস্থায় জিসানুল হকের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ সম্বলিত প্রতিবেদন প্রেরণ সাপেক্ষে চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে তাকে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে সংযুক্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।