জোরপূর্বক পশু স্থানান্তর করলে ছিনতাই মামলা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৪, ০৯:৫৪ এএম

পশুর হাট। ছবি : সংগৃহীত
আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ব্যাপক নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। দফায় দফায় সব অংশীজনকে নিয়ে বৈঠক করে দেয়া হয়েছে হুঁশিয়ারি। এক হাটের পশু আরেক হাটে জোরপূর্বক নেয়ার অভিযোগ এলে পুলিশ নেবে ছিনতাই মামলা। অনুমিত চৌহদ্দির এক ইঞ্চি বাইরেও হাটের কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেবে না পুলিশ।
ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৯টি গরুর হাট বসবে। যার মধ্যে দুটি স্থায়ী ও ১৭টি অস্থায়ী। এই ১৯ হাটকে কেন্দ্র করে গ্রহণ করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মোতায়েন থাকবে দুই হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য। এছাড়া, সংশ্লিষ্ট এলাকার ট্রাফিক ও থানা পুলিশও টহলে থাকবে।
ঢাকায় আরো একটি হাট বাড়বে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অপারেশনস্) বিপ্লব কুমার সরকার। সে হিসেবে ঢাকায় এবার ২০টি হাট বসছে। তিনি জানান, এই কোরবানির পশুর হাটকে কেন্দ্র করে ডিএমপি কমিশনার যেসব নির্দেশনা দিয়েছেন তা মাঠ পর্যায়ে জানানো হয়েছে। হাটকেন্দ্রিক ও হাটের বাইরে যে কোনো ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রম মোকাবিলায় পুলিশ প্রস্তুত ও তৎপর রয়েছে।
ডিএমপি থেকে এবার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, হাটে যে সমস্ত খামার থেকে বা বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গরু আসবে, গরুর ট্রাকে যেন সেই হাটের নাম, ইজারাদারের নাম ও মোবাইল ফোন নম্বর লিখে ব্যানার টানিয়ে দেয়। যাতে এক হাটের গরু অন্য হাটে যেতে না পারে। জোরপূর্বক এক হাটের গরু অন্য হাটে নেয়ার চেষ্টা করা হলে বা নিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। হাটে যেন নিরাপদে গরু বেচাকেনা ও লেনদেন করতে পারে সেজন্য পোশাক পরা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশও মোতায়েন থাকবে।
গত মঙ্গলবার (৪ জুন) সকালে ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সের সম্মেলন কক্ষে ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঢাকার পশুর হাট কেন্দ্রিক সার্বিক নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, নৌ-পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, সিটি কর্পোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, র্যাব, পুলিশ সদর দপ্তর, বাংলাদেশ ব্যাংক, ঢাকা রেঞ্জ পুলিশ, ঢাকা জেলা প্রশাসক, ডিপিডিসি, ডেসকো ও ডিএনসিসির প্রতিনিধি, ঢাকা মহানগরের সব গরুর হাটের ইজারাদার, পশু ব্যবসায়ীসহ ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ওই সমন্বয় সভা থেকে বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান।
আরো পড়ুন : ঈদের বজার : সিন্ডিকেটের কবজায় মসলা
সভায় অভিযোগ উঠেছে, নৌপথে কোরবানির পশু স্থানান্তরে বেশি বিশৃঙ্খলা হয়। এ পথে পশু নিয়ে টানাহেঁচড়া হয়। অনুমতিপ্রাপ্ত হাট ছাড়া যেন কোনো হাট না বসে সেটি ব্যবসায়ী এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার পুলিশ দেখবেন। নদীপথে নৌকা বা ট্রলারে গরু এলে সেগুলো নৌপুলিশ দেখভাল করবে। এক্ষেত্রে ডিএমপি নৌপুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে। সমস্যা হলে ব্যবসায়ীরা থানায় ফোন করে সহযোগিতা নিতে পারবেন বলে জানান ডিএমপি কমিশনার।
হাট পরিচালনা কমিটি হাটে স্থানীয় পুলিশের নম্বর প্রদর্শন করে ব্যানার টানাবেন। গরুর হাটে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, সিটি কর্পোরেশনের ম্যাজিস্ট্রেট, স্থানীয় পুলিশ ও হাটের ইজারাদার সমন্বয় করে কাজ করবেন। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলবেন এবং সেখানে একজন ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা থাকবেন।
হাটের ভেতরে প্রবেশে তল্লাশি কার্যক্রম থাকবে, আর্চওয়ে থাকবে, স্থাপন করা হচ্ছে ওয়াচ টাওয়ার। জাল টাকা চেনার জন্য মেশিন থাকবে। টাকা দ্রুত গণনার মেশিনও থাকবে। ট্রাফিকের আলাদা ব্যবস্থাপনা থাকবে। অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টি প্রতিরোধে পর্যাপ্ত পুলিশ থাকবে। হাটসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এক্ষেত্রে তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করবেন। ইজারাদাররা মাইকিং করে সবাইকে সচেতন করবেন। ইজারাদারদের বলা হয়েছে তাদের মতো আলাদা ব্যবস্থা রাখার জন্য।