যেদিন আঘাত হানবে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ মে ২০২৪, ০৬:৫২ পিএম

ফাইল ছবি
দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় ‘রেমাল’ নামে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। যা আগামী ২৬ মে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
বুধবার (২২ মে) আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক এ তথ্য জানিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশ, মিয়ানমার বা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা অঞ্চলের দিকে ঘূর্ণিঝড়টির গতিপথ রয়েছে। এর প্রতিনিয়ত গতিপথ ক্ষণে ক্ষণে পরিবর্তন হচ্ছে; রাতে একটা গতিপথ থাকছে, আবার সকালে আরেকটা। তাই লঘুচাপ থেকে নিম্নচাপে পরিণত না হওয়া পর্যন্ত নির্দিষ্ট করে বলা যাবে না। তবে নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে তখন গতিপথ স্থির হবে। সেই সময় স্পষ্টভাবে বলা যাবে, এটা কোন এলাকায় বা স্থানে আঘাত হানতে পারে।
ওমর ফারুক আরো জানান, বুধবার লঘুচাপ তৈরি হয়ে ২৩ বা ২৪ মে-র (বৃহস্পতিবার-শুক্রবার) মধ্যে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। ২৪ মে রাতে বা ২৫ মে সকালের দিকে লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। তখন এর নাম হবে ‘রেমাল’। এ নামটি ওমানের দেয়া। এটি একটি আরবি শব্দ। এই নামের অর্থ বালির কণা।
ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার আঞ্চলিক কমিটি প্রতিটি ঝড়ের একটি নাম দিয়ে থাকে। ভারত মহাসাগরের ঝড়গুলোর নামকরণ করে এ সংস্থার আটটি দেশ। দেশগুলো হল- বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মায়ানমার, মালদ্বীপ, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড ও ওমান। এ দেশগুলোর প্যানেলকে বলা হয় ডব্লিউএমও/এসক্যাপ। অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্র বা অস্ট্রেলিয়া অঞ্চলে ঝড়ের নামকরণ করা হলেও, বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরের উপকূলবর্তী দেশগুলোয় ঝড়ের নামকরণ শুরু হয় ২০০৪ সাল থেকে।
আরো পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে আরো ঘনীভূত হতে পারে লঘুচাপ
এক সময় ঝড়গুলোকে বিভিন্ন নম্বর দিয়ে শনাক্ত করা হতো। কিন্তু সেসব নম্বর সাধারণ মানুষের কাছে দুর্বোধ্য। ফলে সেগুলোর পূর্বাভাস দেয়া, মানুষ বা নৌযানগুলোকে সতর্ক করাও কঠিন মনে হতো। নামবিহীন থাকলে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি, ধরন সম্পর্কে তথ্য দ্রুত জানা যায় না। এর আঘাত হানার সময় বা তারিখ বের করে পরবর্তী সময়ে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের গতি প্রকৃতি নির্ণয় করতে হয় আবহাওয়াবিদদের। যা বেশ সময়সাপেক্ষ।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সাইক্লোন সংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থা এসকাপ আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে। এ অঞ্চলের ১৩টি দেশের কাছ থেকে প্রাপ্ত নামের তালিকা থেকে সংস্থাটি নতুন ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করে। এবার ‘রেমাল’ নামটি প্রস্তাব করেছে ওমান।
সবশেষ ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছিল ঘূর্ণিঝড় মিগযাউম, যা পরে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করে। সে ঝড়ের তেমন কোনো প্রভাব বাংলাদেশে পড়েনি। ২০২০ সালের ২০ মে দেশের উপকূলে আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। বেশ বিধ্বংসী ছিল ঘূর্ণিঝড়টি। তবে সুন্দরবনের কারণে সে যাত্রায় রক্ষা পেয়েছিল দেশের উপকূল। এর আগে ২০০৯ সালে এই মে মাসেই ২৫ তারিখে সুন্দরবনে আঘাত হেনেছিল প্রলয়ঙ্করী আইলা।