দায়ী পুলিশদের শাস্তি না হলে আন্দোলন

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০২০, ০৮:৪১ পিএম

রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন (রাওয়া)
কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের গুলিতে মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান নিহত হওয়ার ঘটনায় করা মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নেয়ার দাবি জানিয়েছে রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন (রাওয়া)। একইসঙ্গে র্যাবের মাধ্যমে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেছে সংগঠনটি। অন্যথায় আন্দোলনে নামার হুমকি দেয়া হয়েছে। বুধবার বিকেলে রাজধানীর মহাখালীতে রাওয়ার হেলমেট হলে সংগঠনের ৪০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো করা সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলা হয়।
এ সময় রাওয়ার চেয়ারম্যান মেজর (অব.) খন্দকার নুরুল আফসারি, সেক্রেটারি জেনারেল লে. কর্ণেল (অব.) এ এম মোশারফ হোসেন, লে. জেনারেল (অব.) মঈনুল হোসেন, রাওয়ার সাবেক সভাপতি ব্রি. জেনারেল (অব.) মোয়াজ্জেম হোসেন, মেজর (অব.) শাহরিয়ারসহ রাওয়া কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
রাওয়ার চেয়ারম্যান মেজর (অব.) খন্দকার নুরুল আফসারি বলেন, সেনাবাহিনীর সাবেক চৌকস কর্মকর্তা সিনহাকে কি কারণে পুলিশের হাতে জীবন দিতে হলো সে বিষয়টি বিস্তারিত তুলে ধরতে হবে। এর সঙ্গে কারা কারা জড়িত সেটিও তুলে ধরতে হবে। কারণ হাত উচু করে স্যারেন্ডার করার পরেও সিনহার উপর গুলি করে দেশের আইন ও সংবিধান ভঙ্গ করা হয়েছে। কেননা একজন কমান্ড ট্রেনিং প্রাপ্ত ও এসএসএফে দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তার হাতে অস্ত্র থাকা অবস্থায় কিছুতেই এসআই লিয়াকত বা কোনো এসআইয়ের পক্ষেই গুলি করা সম্ভব হতো না। যেহেতু সিনহা কমান্ড ট্রেনিং প্রাপ্ত সুতরাং ২টি গুলি লাগার পরেও সে গুলি চালাতে পারতেন। কিন্তু সিনহার ব্যাপারে এর কোনোটাই হয়নি। উল্টো পুলিশ অন্যান্য বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের মতো মাদক ও অস্ত্রের নামে নাটক সাজানোর চেষ্টা করছে। পাশাপাশি পুলিশের পক্ষ থেকে প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে ভীতি সঞ্চার করা হচ্ছে। ফলে সিনহার বিচার চাইতে সাবেক সেনা-নৌ-বিমান বাহিনীর প্রধানদের নেতৃত্বে রাষ্ট্রপতির কাছে বিচার চাওয়া হবে। এরপরেও যদি সরকারের বেধে দেয়া সময়ের মধ্যে উপযুক্ত বিচার না হয় তাহলে আমরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো।
সিনহার ঘটনায় কক্সবাজারের এসপিকে প্রত্যাহার এবং টেকনাফের ওসি প্রদীপসহ জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে খন্দকার নুরুল আফসারি বলেন, এ ঘটনার একমাত্র সাক্ষী সিফাতের বিরুদ্ধে দুইটি কাল্পনিক ও বানোয়াট মামলা রুজু করার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। সিনহার মতো অন্যান্য বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড বন্ধ করতে পুলিশ বাহিনীকে সুশৃঙ্খল বাহিনী হিসাবে গড়ে তোলার জন্য জবাবদিহি মূলক আইন প্রণয়ন করে, সেই অনুযায়ী বাহিনীকে পুনর্গঠিত করতে হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো ভ্যাটারান মন্ত্রনালয় গঠন করে সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের নিরাপদ ও আত্মমর্যাদার সম্পন্ন জীবনযাপনে সার্বিক সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।
নিহত সিনহার শরীরে সামরিক পোশাকের বিষয়ে তিনি বলেন, সিনহার শরীরে হান্টিং পোশাক ও হান্টিং বুট পড়া ছিলো। যা ইচ্ছা করলে যে কেউ পড়তে পারে। আর সিনহার ব্যাকগ্রাউন্ড দেখলে নিশ্চিত হওয়া যাবে সে কতটা এডভাঞ্চার ছিলেন। মৃত্যুর আগে একটি তথ্যচিত্র নিয়েও কাজ করছিলেন সিনহা। হয়তো সেসব কারণে হান্টিং পোশাক পড়েছিলেন।