×

জাতীয়

নামেই হাসপাতাল রিজেন্ট, জানতো মন্ত্রণালয়-অধিদপ্তর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২০, ১১:২৪ এএম

নামেই হাসপাতাল রিজেন্ট, জানতো মন্ত্রণালয়-অধিদপ্তর

রিজেন্ট হাসপাতাল

   
একে একে বেড়িয়ে আসছে রিজেন্ট হাসপাতালের অপকর্ম। শুধু করোনা সনদ নিয়ে জালিয়াতি নয় এই প্রতিষ্ঠানটি ছিলো নামে মাত্র হাসপাতাল। সেখানে যন্ত্রপাতি থাকলেও ছিলো না জনবল। এই বিষয়টি মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টরা জানতেন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে রিজেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন মিরপুর বাসিন্দা আফসানা আরিফা। তিনি বলেন, আমি কেবিনে ভর্তি হয়েছিলাম। কিন্তু সেখানকার ব্যবস্থাপনা এতটাই খারাপ ছিলো যে আমি দুই দিনপর সেখান থেকে অন্য হাসপাতালে চলে যাই। একই অভিযোগ করেছেন সেখানে চিকিৎসা নিতে যাওয়া অনেক রোগী ও তাদের স্বজনদের। এছাড়া চলতি মাসে ১৫ই মে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবের কাছে জরুরি ভিত্তিতে রিজেন্ট হাসপাতালে নিয়োগকৃত জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের সহকারী রেজিষ্টার ডা. শরীফ সাম্মিরুল আলমের লেখা এক চিঠিতে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। চিঠিতে অতিরিক্ত সচিব হাসপাতালকেও দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। ওই চিঠিতে ডা. শরীফ সাম্মিরুল আলম জানান, ১১ই মে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জরুরী ভিত্তিতে যোগদানের আদেশ পাবার পর ওই দিনই দুপুরে জুনিয়র কনসালটেন্ট (এনেসথেসিয়া) হিসেবে তিনি রিজেন্ট হাসপাতালে যোগ দেন। দায়িত্ব পালনের শুরুতেই তিনি লক্ষ্য করেন আইসিইউতে ৪টি বেডে কোভিড আক্রান্ত মুমূর্ষু রোগী ভর্তি। আইসিইউতে ত্রুটিপূর্ণ সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন ও ৩টি ভেন্টিলেটর ছিল। সেগুলো ঠিক করার জন্য তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন। সেগুলো ঠিক করে নিজে দায়িত্ব নিয়ে ভেন্টিলেটর চালু করার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু আইসিইউ পরিচালনার জন্য একজন দক্ষ জনবল তিনি পাননি। রিজেন্ট হাসপাতালে জরুরি করোনা রোগীর পরীক্ষা করার কোন ব্যবস্থা নেই। ওষুধ ও সুরক্ষা সামগ্রীরও চরমভাবে ঘাটতি ছিলো। তখন তিনি তৎক্ষণাৎ একটি চাহিদাপত্র হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দেন। তাকে দুই তিন দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় উপকরন এবং জনবল সরবরাহের আশ্বাস দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রয়োজনীয় উপকরণ ও জনবল না পাওয়ায় পুনরায় বিষয়টি তিনি হাসপাতাল চেয়ারম্যানকে জানানো হলে তাকে হুমকি ও ভয় দেখানো হয় এবং খুবই বাজে ব্যবহার করে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে মোবাইলফোনে জানান ডা. শরীফ। কর্তৃপক্ষ তাকে সহমর্মিতা ও নিরাপত্তা দেয়ার আশ্বাস দেয় এবং অতিসত্বর এই সমস্যার সমাধান করার ব্যবস্থা করবেন বলে জানান। একমাত্র চিকিৎসক হিসেবে ডা. শরীফকে ওই হাসপাতালের আইসিইউতে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। এই চিঠির পরদিনই ডা. শামীমকে বদলি করা হয় মুগদা হাসপাতালে। আর রিজেন্ট হাসপাতালে পাঠানো হয় জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) ডা. আশরাফুল আলমকে। ডা. শামীমের মতো তিনিও হাসপাতালের অব্যবস্থাপনার কথা জানিয়ে সচিবকে চিঠি দেন ২৩ মে। ৬ জুলাই পর্যন্ত ডা. আশরাফুল সেখানে দায়িত্ব পালন করেছেন। পরে তাকে করোনা চিকিৎসায় নির্ধারিত লাল কুঠি মিরপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়। এই দুই চিকিৎসকের কথা যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্ণপাত করেনি তা এখন প্রমাণিত। এত কিছুর পরও রিজেন্ট হাসপাতালের এই অপকর্মের দায় স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় না অধিদপ্তরের তা নিয়ে চলছে ঠেলাঠেলি। একজন আরেক জনের উপর দায় চাপিয়ে বাঁচতে চাইছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বারবারই বলে আসছেন তিনি কিছু জানেন না। কিন্তু বিভিন্ন নথিপত্র বলছে, শুরু থেকেই এ বিষয়টি জানতো মন্ত্রণালয়। আর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেছেন, মন্ত্রণারয়ের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই রিজেন্টের সাথে চুক্তিতে গিয়েছে তারা। পরবর্তীতে মহাপরিচালক জানিয়েছেন সাবেক স্বাস্থ্য বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলামের মৌখিক নির্দেশেই এই হাসপাতালের সাথে চুক্তিবদ্ধ এবং সেখানে যন্ত্রপাতি সরবরাহ থেকে শুরু করে সব কিছুর ব্যবস্থা করা হয়। তবে আসাদুল ইসলাম বলেছেন তিনি এমন কোন নির্দেশ দেন নি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App