পিপিই সেটে ‘পলিথিন’, ক্ষুব্ধ চিকিৎসকরা

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২০, ০৪:৪৮ পিএম

পিপিইর সু-কাভার। ছবি: সংগ্রহ।

পলিথিনের তৈরি গ্লাভস!
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামের (পিপিই) মান একেবারেই নিম্নমানের। হোটেলে যে পাতলা পলিথিন পরে খাবার দেয়া হয়, সেরকম পলিথিনের তৈরি গ্লাভস দেয়া হয়েছে চিকিৎসকদের। যার মধ্যে অনেকগুলো ছিঁড়ে গেছে। চিকিৎসরা বলছেন, এগুলো পরা আর না পরা সমান কথা। এমন অভিযোগের চিকিৎসকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তাদের অপারগতার কথা স্বীকার নিলেও আমরা পাশে থাকবো। কিন্তু তারা আমাদের বিপদে ফেলে মিডিয়ায় ভালো কথা শোনাচ্ছেন, সেটা মেনে নিতে আমাদের কষ্ট হয়। নিজেরা লজ্জা পাই।
এদিকে, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত হওয়া ৬ চিকিৎসকই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া পিপিই পরে আইসোলেশন ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন করেছিলেন বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। সেই সঙ্গে তারা নকল এন-৯৫ মাস্কও পরেছিলেন। সেখান থেকেই তারা সংক্রমিত হয়েছিলেন বলে মনে করছেন তারা।
আবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের স্ত্রীরোগবিদ্যা বিভাগের একজন সহকারী রেজিস্ট্রারের করোনা আক্রান্ত হওয়ার কারণও একই। তিনি হাসপাতাল থেকে সরবরাহ করা পিপিই পরেই নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা সন্দেহভাজন করোনা রোগীর সংস্পর্শে এসেছিলেন।
এভাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে সরবরাহ করা পিপিই পরেই একের পর এক চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু চিকিৎসক বলছেন, করোনা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে গেলে নিম্নমানের এসব পিপিই কোনো কাজে আসবে না। তবে এ নিয়ে শোকজসহ নানা হয়রানির আতঙ্কে মুখ খুলছেন না কেউ।
[caption id="attachment_216051" align="aligncenter" width="700"]
একাধিক চিকিৎসকের অভিযোগ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া পিপিই সেটে নেই মাস্ক আর গগলস। কোনোটাতে শুধু গাউন আর সার্জিক্যাল মাস্ক আছে। সু-কাভার, হেডকাভার নেই। আরেক চিকিৎসক অভিজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, বিভাগ থেকে ওয়ানটাইম ইউজের জন্য দেয়া পিপিইতে ছিল কেবল গাউন আর সার্জিক্যাল মাস্ক। কোথাও মোটা রেইনকোটের মতো দেয়া হয়েছে। এক ওয়ার্ডবয় তাকে জানিয়েছেন, সে পিপিই সেটের ভেতরে স্যু-কাভার হিসেবে বাজার করার পলিথিনের ব্যাগ পেয়েছে।
শেরে-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অনারারি মেডিক্যাল অফিসার ডা. মো. ফয়সাল ইসলাম ফাহিম সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের পিপিই-এর নামে যে স্যুট দেয়া হয়েছে তা দেশি কোম্পানির বানানো রেইনকোট। সারা বছর স্পেশালি বর্ষার সময় পাওয়া যায়। যে গগলস দেওয়া হয়েছে তা বাচ্চাদের খেলনা চশমার মতো পাতলা একটা প্লাস্টিকের গ্লাস। মাস্ক হিসেবে আদর্শ এন-৯৫ এর বদলে দিয়েছে পাতলা গেঞ্জির কাপড়ে সেলাই করা জোড়াতালি মাস্ক যা দিয়ে ধুলা কিছু আটকালেও কখনও কোনো ভাইরাস আটকাবে না।