×

জাতীয়

নদীরক্ষায় একক কর্তৃত্ব চায় কমিশন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২০, ১০:৪৫ এএম

নদীরক্ষায় একক কর্তৃত্ব চায় কমিশন
   

শুধু সুপারিশকারী হিসেবে না থেকে নদীরক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে চায় জাতীয় নদীরক্ষা কমিশন। এ কারণে আর নৌমন্ত্রণালয়ের অধীনেও থাকতে চাইছে না তারা। সংস্থাটি মনে করছে, নদীর পানি, ভূমি ও পরিবেশ রক্ষার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন সব মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের কাজে সমন্বয় করতে কমিশনের হাতে কর্তৃত্বপূর্ণ ক্ষমতা থাকা প্রয়োজন। নইলে দেশের নদ-নদীরক্ষা সম্ভব নয়। তাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রশাসনিক অধীনে থেকে স্বাধীন সংস্থা হিসেবে কমিশনকে কাজ করতে হবে। এ জন্য আইন সংশোধন জরুরি।

২০১৩ সালের জাতীয় নদীরক্ষা কমিশন আইন অনুযায়ী নৌমন্ত্রণালয়ের অধীনে গঠন করা হয় এই কমিশন। শুরু থেকেই লোকবল ও ক্ষমতার অভাবে খুঁড়িয়ে চলতে থাকে গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিষ্ঠানটি। গত ৬ বছরে বিভিন্ন নদ-নদী সরেজমিন ঘুরে অসংখ্য সুপারিশ করে কমিশন। কিন্তু বাস্তবে তার অধিকাংশই কার্যকর হতে দেখা যায়নি। এ প্রসঙ্গে নদীরক্ষা কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য মো. আলাউদ্দিন জানান, এ পর্যন্ত তারা ১ হাজারেরও বেশি সুপারিশ করেছেন। কিন্তু এর মধ্যে বড়জোড় ১ থেকে দেড়শটি সুপারিশ কোনো মতে বাস্তবায়িত হয়েছে। এভাবে দেশের নদ-নদীরক্ষা করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী কমিশন কেবল সুপারিশ করতে পারে। কমিশনের সুপারিশ মানতে বাধ্য নন কেউ। এই ক্ষমতাহীন অবস্থা দিয়ে নদীরক্ষায় কমিশন কীভাবে ভ‚মিকা রাখবে- সেটা বোধগম্য নয়। তাই আমরা সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে একটি লিখিত প্রস্তাব দিয়েছি। সে প্রস্তাবের মধ্যে আইন সংশোধন, কমিশনকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অথবা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রশাসনিক অধীন করাসহ ক্ষমতায়নের নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে।

বর্তমানে নদীর তীর রক্ষা ও বন্যা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পানি উন্নয়ন বোর্ডের, আর বন্দর এলাকায় তীর ভ‚মি ও নৌপথের দেখভালকারী প্রতিষ্ঠান হচ্ছে বিআইডব্লিউটিএ। পানির দূষণ নিয়ে কাজ করে পরিবেশ অধিদপ্তর। আবার নদী তীরের হাট-ঘাট, বালু মহাল ইত্যাদি ইজারা দেয় জেলা প্রশাসন। কোথাও খালগুলোর দেখভালের দায়িত্ব সিটি করপোরেশন, পৌরসভা বা ওয়াসার। নদীর ওপর কোথাও সেতু নির্মাণ করছে সেতু বিভাগ, রেলপথ মন্ত্রণালয়, কোথাও বা এলজিইডি। সব মিলিয়ে দেশের নদ-নদী ও খাল-বিল রক্ষার বিষয়টি বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার মধ্যে বিভক্ত। ফলে দখল, দূষণ, পলি ভরাট, ভুল নির্মাণসহ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদী। এ কারণে নদীরক্ষার সব বিষয় সমন্বয় করতে একক সংস্থার শক্তিশালী ও কর্তৃত্বপূর্ণ

ক্ষমতা থাকা জরুরি বলে দীর্ঘদিন ধরেই অভিমত দিয়ে আসছিলেন বিশেষজ্ঞরা। গত বছর জুলাইয়ে তুরাগ রক্ষাসংক্রান্ত এক রিটের পূর্ণাঙ্গ আদেশে নদীরক্ষা কমিশনকে জাতীয় নদ-নদীর আইনগত অভিভাবক ঘোষণা করেন উচ্চ আদালত। একই সঙ্গে কমিশনকে শক্তিশালী করাসহ ১৭টি নির্দেশনাও দেন।

এ বিষয়ে নদীরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, দেশের নদীগুলো বাঁচাতে হলে কমিশনকে শক্তিশালী করতে হবে। এর বিকল্প নেই। তাই স্বাধীনভাবে কাজ করতে চায় কমিশন। যেমন দুর্নীতি দমন কমিশন কাজ করে। তিনি বলেন, আদালতের একটা নির্দেশনা রয়েছে। কমিশনকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হলে মন্ত্রণালয়গুলোর ওপরে এর অবস্থান থাকতে হবে। দোষীদের শাস্তি দেয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে। অন্যথায়, কমিশন ঠুঁটো জগন্নাথই হয়ে থাকবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এখন কমিশন নিয়মিত নদ-নদী পরিদর্শন করে সুপারিশমালা তৈরি করে। সেটি জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে দেয়া হয়। কিন্তু বাস্তবায়নের অগ্রগতির কোনো খবরই আর কমিশনে আসে না। এমনকি পুলিশকে কোনো মামলা করতে বললে সেটিও তারা করে না। এ ছাড়া বর্তমানে কমিশনের লোকবলেরও রয়েছে চরম সংকট। মাত্র ৪৬ জন দিয়ে চলছে গোটা কমিশন। অথচ প্রতিটি জেলা ও বিভাগে কমিশনের অফিস করার কথা রয়েছে। অবাক করা বিষয় হচ্ছে, নদী পরিদর্শনের জন্য কোনো নৌযানই নেই নদীরক্ষা কমিশনের। চেয়ারম্যানের জন্য একটি জিপগাড়িসহ মোটে ৩টি যানবাহন রয়েছে এই সংস্থার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App