পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি নিয়ে প্রশ্ন

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:১৩ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের নির্বাচন সংক্রান্ত তথ্য শেয়ার করে মন্ত্রণালয় আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রবিবার (৩ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রণালয়ের বিকল্প মুখপাত্র রফিকুল আলম এ সংক্রান্ত প্রশ্নের সম্মুখীন হন।
প্রশ্নের উত্তরে রফিকুল আলম বলেন, তথ্য শেয়ার করর বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত। আপনি (প্রশ্ন করা সাংবাদিককে) নিজস্ব ব্যাখ্যা দাঁড় করাতে পারেন। ওই ব্রিফিংয়ের প্রশ্ন পর্বে পররাষ্ট্র মন্ত্রীর আসন্ন ঘানা সফর, লিবিয়ায় আটকে পড়া বাংলাদেশীদের ফেরত আনা ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গও প্রশ্নের উত্তরে উঠে আসে।
একই দিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রণালয়ের বিকল্প মুখপাত্র রফিকুল আলমের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর নির্বাচন সংক্রান্ত তথ্য শেয়ার করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এটা কি মন্ত্রণালয় স্বপ্রণোদিত হয়ে করছে? মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর নির্বাচনী প্রচারণার জন্য মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশন থেকে অনুমতি নিয়েছে কি না, এমন সব প্রশ্নের জবাবে রফিকুল আলম বলেন, আমি যে জিনিসটা বুঝতে পারি, যেটা পাবলিক নলেজ। এই জিনিস বলার মধ্যে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি এখানে নেয়ার কোনো প্রয়োজনীয় আছে কি না, এ বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই। এটা আমরা সবাই দেখছি, আপনারা লিখছেন। এ সময় আচরণবিধির কোন জায়গায় লঙ্ঘন হয়েছে, প্রশ্ন করা সাংবাদিকের কাছে জানতে চান মুখপাত্র।
প্রসঙ্গত, শনিবার (২ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজে নির্বাচন সংক্রান্ত একটি পোস্ট করা হয়। ওই পোস্টের আলোকে সাংবাদিকরা জানতে চান, মন্ত্রণালয় ইসির পিআরও হিসেবে কাজ করছে কি? তার জবাবে মুখপাত্র বলেন, আমি বিশ্বাস করি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফেসবুকে বা অন্য কোনো সোশ্যাল মিডিয়াতে তথ্য শেয়ার করার পেছনে অন্যতম বড় কারণ হচ্ছে, আমাদের একটা বড় অডিয়েন্স আছে ও তাদের দ্রুত রিচ আউট করা। এর বাইরে কিছু নয়।
ঘানায় যাচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী :
ঘানার রাজধানী আক্রায় অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিতে একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে দেশটিতে সফর করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। ৫ থেকে ৬ ডিসেম্বর এই দুইদিন দেশটিতে সফর করার কথা রয়েছে দলটির।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে বিকল্প মুখপাত্র রফিকুল আলম এ তথ্য জানিয়ে বলেন, শান্তিরক্ষা মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল শান্তিরক্ষীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা, তাদের নিরাপত্তা ঝুঁকি মোকাবিলায় কৌশলগত যোগাযোগের ওপর গুরুত্বারোপ, শান্তিরক্ষীদের মানসিক সুস্বাস্থ্য, শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরবে। ঘানা সফরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ও বিভিন্ন সাইড-ইভেন্টে অংশগ্রহণ করবেন বলেও জানান রফিকুল আলম।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের অগ্রগতি নিয়ে মুখপাত্র বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ-মিয়ানমার-চীনের একটি ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের কাজ চলমান রয়েছে। মিয়ানমারের চলমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ। পরিস্থিতির উন্নতি হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু হবে বলে আশা করা যায়। তিনি বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ, টেকসই এবং স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য রাখাইনে প্রত্যাবাসনের পরে রোহিঙ্গারা কী কী সুযোগ সুবিধা পাবে, সে সম্পর্কে তাদের ধারণা দেয়া হয়েছে।
লিবিয়ায় আটকে পড়া ২৬৩ বাংলাদেশিকে দেশে আনা হচ্ছে :
লিবিয়ায় গিয়ে আটকে পড়া ২৬৩ বাংলাদেশি নাগরিককে বাংলাদেশে ফেরত আনা হচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) ঢাকা পৌঁছাবেন তারা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আলম এই তথ্য জানিয়েছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিকল্প মুখপাত্র বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ত্রিপোলির বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রচেষ্টায় এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার আর্থিক সহযোগিতায় লিবিয়ায় আটকে পড়া বাংলাদেশিদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে ত্রিপোলির আইনজেরা ডিটেনশন সেন্টারে আটক থাকা ১৪৩ জন অনিয়মিত বাংলাদেশি নাগরিককে গত ২৮ নভেম্বর এবং ১১০ জনকে ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি ।
তিনি আরো বলেন, ফেরত আসা আটকে পড়া বাংলাদেশিদের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার কর্মকর্তারা বিমানবন্দরে তাদের অভ্যর্থনা জানান। এসময় আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার পক্ষ থেকে প্রত্যেককে পকেট মানি হিসেবে ৫ হাজার ৮৯৬ টাকা এবং কিছু খাদ্য সামগ্রী উপহার দেয়া হয়।