রেজা কিবরিয়ার অপসারণ অবৈধ, অগঠনতান্ত্রিক

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৩, ১২:৪৮ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ


গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়াকে সম্পূর্ণ অবৈধ, অগঠনতান্ত্রিক ও প্রতারণামূলকভাবে অপসারণ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে দলটির শীর্ষ নেতাদের একাংশ। কদিন আগেও তারা দলের সদস্য সচিব নুরুল হক নুরের পক্ষে ছিলেন।
বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে গণঅধিকার পরিষদের ৯ কেন্দ্রীয় নেতা এ অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান।
উপস্থিত ছিলেন আরেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক কর্ণেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক সাদ্দাম হোসেন ও জাকারিয়া পলাশ, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব মো. আতাউল্লাহ, যুগ্ম সদস্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, সহকারী সদস্য সচিব মো. শামসুদ্দিন প্রমুখ।

ফারুক হাসান বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ড. রেজা কিবরিয়ার কথিত অপসারণ সম্পূর্ণ অবৈধ। আমরা তার অবৈধ অপসারণ প্রক্রিয়াকে সমর্থন করি না। তিনি দলের আহ্বায়ক হিসেবে বহাল আছেন বলে মনে করি। তাকে বাদ দিয়ে যারা কাউন্সিলের দিন নির্ধারণ করেছেন তারা পরিকল্পিতভাবে দলকে ভাঙনের দিকে ঠেলে দিতে চাচ্ছেন।
গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক দলের গঠনতন্ত্রের ব্যত্যয় ঘটিয়ে কিভাবে রেজা কিবরিয়াকে অব্যাহতি দিয়েছেন, তারও ব্যাখ্যা দেন ফারুক হাসান। তিনি বলেন, দলের গঠনতন্ত্রের ৩৮ ধারা অনুযায়ী আহ্বায়কের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পাস ও অপসারণ করতে হলে কেন্দ্রীয় কমিটির মোট সদস্যের দুই তৃতীয়াংশ অর্থাৎ ১২১ জন সদস্যের মধ্যে অন্তত ৮১ জন সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন হয়। কাজেই মাত্র ৪৫ জন সদস্যের উপস্থিতিতে হওয়া সভায় আহ্বায়ককে অপসারণ অসম্ভব।

ফারুক হাসান বলেন, ওই সভায় সদস্যরা গোপন ব্যালটে ভোট গ্রহণের আহ্বান জানালে তা না করে প্রকাশ্যে হাত তুলে সমর্থন জানাতে বলা হয়। ফলে অনেকেই ভোটদানে বিরত থাকেন। কিন্তু সভা শেষে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে রেজা কিবরিয়াকে দুই তৃতীয়াংশের ভোটে অপসারণ করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়। এটি সম্পূর্ণ অগঠনতান্ত্রিক ও প্রতারণামূলক।
নুরের বিরুদ্ধে রেজা কিবরিয়ার তোলা অর্থ লোপাটের অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে জানিয়ে মিয়া মশিউজ্জামান বলেন, নুরুল হক নুরকে প্রতিমন্ত্রী করার অফার দিয়ে, ১০টি আসন দেওয়ার অফার দিয়ে সরকার তাকে তাদের পক্ষে নিতে চেয়েছে, এমন অভিযোগ রয়েছে। নুর সেই অফার গ্রহণ করেছেন নাকি প্রত্যাখান করেছেন, তা এখনো তদন্তাধীন। পাশাপাশি মোসাদ এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠকে কী আলোচনা করেছেন, তা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের তিনি জানাননি। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
ফারুক হাসান বলেন, গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়ার পক্ষে যারা রয়েছেন, তাদের বক্তব্য কেবল দলের অফিসিয়াল বক্তব্য হিসেবে গৃহীত হবে। নুরুল হক নুর বা বাকিরা কোনো সংবাদ সম্মেলন বা বিবৃতি দিলে তা আনুষ্ঠানিক বক্তব্য হিসেবে বিবেচিত হবে না।মিয়া মশিউজ্জামান জানান, পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডের যে ভবনে গণঅধিকার পরিষদের কার্যালয়, ওই ভবনের মালিকানা তার। তাই ভাড়ার লেনদেন হয় না। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, বিকাশ ও নগদে সারাদেশ থেকে সাধারণ মানুষের অনুদানে দলটি চলে। পাশাপাশি নিজেদের চাঁদায় তারা দলের নানা কার্যক্রম পরিচালনা করেন।