পুনর্বাসন ছাড়া বসতি উচ্ছেদ মানবাধিকার পরিপন্থি

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৩, ০৩:৫২ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ



রাজধানীর গোপীবাগ টিটিপাড়া রেলওয়ে হরিজন ও তেলেগু সুইপার কলোনীর শতাধিক পরিবারকে পুনর্বাসন ছাড়াই উচ্ছেদ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে গত চার বছরের মধ্যে প্রথম দফায় ১১২ পরিবার ও পরে আরো ২৭ পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। আরো ৪০ পরিবারকে উচ্ছেদ করা হবে বলে মৌখিক নোটিশে জানিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
আজ শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) সকালে গোপীবাগ টিটিপাড়া রেলওয়ে হরিজন ও তেলেগু সুইপার কলোনির উচ্ছেদ পরিস্থিতি পরিদর্শনে যান বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দ।

এ সময় কলোনির দুর্গামন্দির চত্বরে অনুষ্ঠিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, পদ্মা সেতু রেলওয়ে প্রকল্পের আওতায় কমলাপুর থেকে যশোর অব্দি পুরো পথের সবখানেই ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ কিংবা পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেবলমাত্র এই কলোনীর বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়নি। চার বছর আগে উচ্ছেদকৃত ১১২ পরিবারের তালিকা করা হলেও এই দীর্ঘ সময়ে তাদের পুনর্বাসনের কোনো উদ্যোগ না নেওয়া দুঃখজনক। পুনর্বাসন ছাড়া মানুষের বসতি উচ্ছেদ মানবাধিকারের সুস্পষ্ট পরিপন্থি।

প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, নগরী পরিচ্ছন্ন রাখতে যে মানুষেরা কাজ করেন, তাদেরকে ব্রাত্য করে রেখে কোনো উন্নয়নই সুফল বয়ে আনতে পারবে না। বর্তমান সরকার দেশে ভূমিহীনদের সংখ্যা শূন্যতে নামিয়ে আনতে আশ্রায়ণ ও গৃহায়ণ প্রকল্পসহ নানা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, এমনকি মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী সর্বোচ্চ মানবতার পরিচয় দিয়েছেন। কিন্তু দুই শ’ বছর ধরে এই দেশে বসবাস করে আসা হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষদের সাথে এই অমানবিক আচরণ অপ্রত্যাশিত। তারা এই দেশের ভোটার, এই দেশের নাগরিক, তাদের উপেক্ষা করে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রত্যাশিত নয়।

সমাবেশে নেতৃবৃন্দ কমলাপুর স্টেডিয়ামের পার্শ্ববর্তী মানিকনগর কালভার্ট এরিয়ার মাঠে উচ্ছেদকৃত হরিজন ও তেলেগু সুইপার পরিবারগুলোর পুনর্বাসনের জন্য সুপারিশ করেন।
মহানগর পূজা কমিটির সভাপতি মনীন্দ্র কুমার নাথের সভাপতিত্বে এ প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. শ্যামল কুমার রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক পদ্মাবতী দেবী, সমবায় বিষয়ক সম্পাদক তপন চক্রবর্ত্তী, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বাপ্পাদিত্য বসু, লক্ষ্মীকান্ত রায়, সহ আন্তর্জাতিক সম্পাদক অভিজিৎ ভট্টাচার্য্য, যুব ঐক্য পরিষদের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি অমিতাভ বসাক বাপ্পী, ঐক্য পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির নেতা দিলীপ কুমার কর দীপু, গণেশ ঘোষ, গুরুদাস রায়, জহরলাল দেবনাথ, গোপাল রাজবংশী, একলব্য সরকার পলাশ, উৎপল মণ্ডল, অরূপ কুমার কুণ্ডু, হিন্দু লীগের মহাসচিব শংকর সরকার, সনাতন সংগঠনের প্রতিনিধি দেবাঙ্গনা চৌধুরী নদী প্রমুখ। কলোনীর বাসিন্দাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রাজেন লাল, পারদ লাল, রাজীব দাস প্রমুখ।