বাঙালির একমাত্র সর্বজনীন উৎসব

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ এপ্রিল ২০২৩, ১২:০০ এএম

ডা. সারোয়ার আলী
ঝরা পাতার মর্মর ধ্বনি আর চাওয়া পাওয়ার হিসেব নিকেশে পেরিয়ে গেছে আরো একটি বছর। বাংলা নববর্ষ অসাম্প্রদায়িক বাঙালির অসাম্প্রদায়িক চেতনার মোহনা। যে মোহনায় একসঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, জাতি। হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ইতিহাস, ঐতিহ্যের ধারক-বাহক নববর্ষ। ধর্মান্ধ-মৌলবাদের বিরুদ্ধে সম্মিলিত লড়াই, প্রতিবাদ, অহিংস আন্দোলনে নেতৃত্ব দেবে নববর্ষ- এমন প্রত্যাশা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারোয়ার আলী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ঝর্ণা মনি।
১৯৪৭ সালে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্র সৃষ্টি হয়েছিল ধর্মীয় বিভাজনে। জন্মের পর থেকেই তারা চেয়েছিল বাঙালির জাতি পরিচয় মুছে দিতে। বাঙালি সংস্কৃতির ওপর ধারাবাহিকভাবে তারা আঘাত হেনেছে। এ দেশের মানুষ সব ধর্মের সমঅধিকারের জন্য রাষ্ট্রভাষা বাংলার মর্যাদা অক্ষুণ্ন রেখে আন্দোলন করেছে। আন্দোলনের মাধ্যমে স্বাধীন স্বদেশ মাতৃভূমি বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে। এই ভাবাদর্শকে ধারণ করে বাঙালির সব ধর্মের একমাত্র সর্বজনীন উৎসব বাংলা নববর্ষ।
তবে গত কয়েক বছর ধরে ধর্মের যে নতুন ধারাটি অধিকাংশ মানুষের ওপর প্রভাব বিস্তার করছে তার ফলে ধর্মের বিদ্বেষ বাড়ছে। আর তার উগ্রতম রূপ অপর ধর্মের উপাসনালয়ে আক্রমণ করলেও পাশের মানুষ নির্লিপ্ত থাকে। এই ঔদাসীন্য ও আত্মকেন্দ্রিকতার অবসান না ঘটলে পহেলা বৈশাখের মূল মর্মার্থ সেটি অর্জিত হবে না। এতে পহেলা বৈশাখ নিছক একদিনের বাঙালি সাজার উৎসবে পরিণত হবে। এটি শুধু যথাযথ নববর্ষ উদযাপিত করার বিষয় নয়, যে ভাবাদর্শকে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য এ দেশ স্বাধীন হয়েছিল, বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল, সেই ভাবাদর্শ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।