আরসা-আরএসওর সংঘাতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নতুন মাত্রা

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৩, ০৯:০২ এএম

ছবি: সংগৃহীত
মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য সরকার বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ খরচ করলেও আন্তর্জাতিক মহল থেকে প্রত্যাশিত সহযোগিতা মিলছে না বলে অভিযোগ করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, আরসা ও আরএসওর পারস্পরিক সংঘাতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নতুন মাত্রা পাচ্ছে। দিন দিন সংকট আরো জটিলতার দিকে যাচ্ছে। তবু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করে যাচ্ছি। তবে, নিরাপত্তার স্বার্থে রোহিঙ্গাদের যে কোনো অপরাধমূলক কার্যক্রম শক্ত হাতে দমন করা হবে। আমরা দেখছি, রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রম নিয়ে সম্প্রতি সমালোচনা করছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
রাজধানীর একটি হোটেলে শনিবার ‘বাংলাদেশ ও ইন্দো-প্যাসিফিক সহযোগিতা : অগ্রাধিকারমূলক সমস্যা ও উদ্বেগ’ শীর্ষক এক সংলাপে এ অভিযোগ করেন তিনি। এ সংলাপের আয়োজন করে বাংলাদেশ সেন্টার ফর ইন্দো-প্যাসিফিক অ্যাফেয়ার্স। রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক আলোচনার জন্য বাংলাদেশের দ্বার উন্মুক্ত। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছে। গত বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।
বাংলাদেশ-মিয়ানমার জিরো লাইনের ক্যাম্পগুলো পুড়ে ছাই হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যে চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করছে সেটার অবমূল্যায়ন হচ্ছে। বিদেশি কূটনীতিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি আশা করব আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে ঝুঁকি নিয়ে যেভাবে কাজ করছে সেটা তুলে ধরবেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আমরা এখনো যে কোনো আলোচনার জন্য দ্বার খুলে রেখেছি। জাতীয় স্বার্থ এবং নিরাপত্তায় রোহিঙ্গা ইস্যুতে কোনো সমঝোতা করব না।
তিনি বলেন, রেহিঙ্গা সংকটের উৎস মিয়ানমার। সমাধানও সেখানে। যে কোনো সময় খোলামনে আলাপ-আলোচনায় রাজি বাংলাদেশ। মানবতার ক্ষেত্রে উদারতা দেখালেও কখনোই নিরাপত্তা ইস্যুতে কোনো ছাড় দেবে না বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, আরসা ও আরএসওর পারস্পরিক সংঘাত হচ্ছে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নতুন মাত্রা পাচ্ছে। দিন দিন সংকট-নিরাপত্তায় আরো জটিলতার দিকে যাচ্ছে। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, সব সমস্যার সমাধান হয়, শুধু রোহিঙ্গা সমাধানের আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা সেভাবে হয় না। এত ব্যয়ের বোঝা ও দায় বাংলাদেশের বহন করা আর সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, সবাইকে একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, জাতিসংঘে শেখ হাসিনা সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়ে রেখেছেন। সে মতেই এ সংকটের সমাধানের পথে হাঁটতে হবে। তিনি আরো বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ নতুন করে ভাবাচ্ছে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোকে। বাংলাদেশের নিজস্ব ভারত মহাসাগরীয় কৌশল এরই মধ্যে বিভিন্ন আঞ্চলিক সংগঠনের সঙ্গে থেকে শান্তিপূর্ণভাবে স্পষ্ট করেছে। কোনো ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ নেই।