মানুষ বিএনপির অত্যাচারের কথা কীভাবে ভুলবে: প্রধানমন্ত্রী

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২২, ০৪:৫৪ পিএম

আওয়ামী লীগের সভাপিত ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত।
আওয়ামী লীগের সভাপিত ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা বিএনপির অত্যাচারের কথা ভুলবো না। সাধারণ মানুষ বিএনপি-জামায়াত সরকারের সেই অত্যাচারের কথা কীভাবে ভুলবে?
শনিবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের ষষ্ঠ ত্রি-বার্ষিক জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়েত পেট্রোল বোমা মেরে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে। এটা মানুষ কীভাবে পারে, এটা কী ধরনের রাজনীতি আমি ভেবে পাই না। আন্দোলনের নামে অগ্নি-সন্ত্রাস করলে এক জনকেও ছাড়বো না। তিঁনি সম্মেলনে উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ধর্মের দোহাই দিয়ে অনেকে নারীর অগ্রযাত্রা রুখতে চায়। কিন্তু নারীদের পিছিয়ে রেখে চলা যাবে না, এই নীতিতে বিশ্বাসী আওয়ামী লীগ সরকার। জাতির পিতা সবসময় নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করতেন, এছাড়া যেকোনো অর্জনে নারীর অবদান রয়েছে। ঘরে আটকে রাখা নয়, নারীদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, হানাদার বাহিনী মেয়েদের ধরে ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করেছে। তখন জাতির পিতা সুইজারল্যান্ড থেকে নার্স এনে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। জাতির পিতা সবসময় নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করতেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেকোনো অর্জনে নারীদের অবদান থাকতে হবে। সমাজের অর্ধেক নারী। তারা অচল থাকলে সমাজ এগিয়ে যাবে না। নারী-পুরুষকে সমানতালে এগিয়ে যেতে হবে। আমি নারীদের বিচারপতি, সচিব, ডিসি, এসপি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পথ সুগম করি। আজকে আমাদের মেয়েরা প্রতিটি ক্ষেত্রে অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে। তিনি বলেন, যেকোনো অর্জনে নারীদের অবদান থাকতে হবে। সমাজের অর্ধেক নারী। তারা অচল থাকলে সমাজ এগিয়ে যাবে না। নারী-পুরুষকে সমান তালে এগিয়ে যেতে হবে। আজ আমাদের মেয়েরা প্রতিটি ক্ষেত্রে অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে। ইসলাম ধর্মই একমাত্র নারীদের সমান অধিকার দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলাম ধর্মই একমাত্র ধর্ম, যেখানে নারীদের সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে। সম্পদে স্বামী ও বাবার সম্পদে নারীর অধিকার দিয়েছে ইসলাম। অথচ ধর্মের নামে নারীদের ঘরে রেখে দিতে চায়, তারা জানে না। তিনি বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর করে দিচ্ছি। সেখানে নারী ও পুরুষকে সমান ভাগ দিচ্ছি। কেউ বউ ছেড়ে দিলে ওই বাড়ি হবে নারীর, পুরুষের নয়। যাতে নতুন ঘর পেয়ে কেউ নতুন বউ না নিয়ে আসে। নারীদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, মেয়েরা স্বামীদের কাছে কত কিছু দাবি করে। আমার মাকে দেখিনি কোনো দিন কিছু দাবি করতে বরং তিনি বাবাকে বলতেন, তুমি তোমার কাজ করে যাও। সংসারসহ সব কিছু আমি দেখব। ঘাতকের দল যখন আমার বাবাকে হত্যা করে, তখন আমার মা বলেছিলেন, আমার স্বামীকে হত্যা করেছ, আমাকেও হত্যা করো।আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের ষষ্ঠ ত্রিবার্ষিক সম্মেলন শুরু হয়। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত এই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এসে উপস্থিত হন প্রধান অতিথি শেখ হাসিনা। এরপর জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এ সময় সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করেন বাংলাদেশ মহিলা লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এছাড়া বাংলাদেশ মহিলা লীগের ৭২টি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করেন। এরপর বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন হয়। মঞ্চে ওঠার পর শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং সংগঠনের অন্য নেতারা। এরপর সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক শেখ হাসিনাকে উত্তরীয় পড়ান।
সংগঠনের সভাপতি সাফিয়া খাতুনের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ সম্মেলনে উপস্থিত আছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা ক্রিক।
এর আগেই প্রথমে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠ করার মধ্য দিয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করা হয়। প্রথমে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিরিন রোকসানা। সংগঠনের সহ সভাপতি বনশ্রী বিশ্বাস পবিত্র গীতা পাঠ করেন।
সংগঠনের সদস্য বাসন্তি চাকমা ত্রিপিটক থেকে পাঠ করেন। সংগঠনের সদস্য দিপীকা সমারদার বাইবেল পাঠ করেন। এরপর বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি এমপি বক্তব্য রাখেন।প্রধান অতিথি শেখ হাসিনা উপস্থিত হওয়ার পর প্রথমে সাংস্কৃতিক পর্ব শুরু হয়।