নিখোঁজের ৫ মাস পর বালির নিচে মিলল ব্যবসায়ীর মরদেহ

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২ জুন ২০২২, ০৮:৫৫ পিএম

স্বর্ণ ব্যবসায়ী অনুপ বাউলের চারজন খুনিকে বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করে পিবিআই। ছবি: ভোরের কাগজ

ছেলের সঙ্গে অনুপ বাউলের এই ছবি আর তোলা যাবে না। ছবি: ভোরের কাগজ
নিখোঁজ হওয়ার পাঁচ মাস পর স্বর্ণ ব্যবসায়ী অনুপ বাউলের (৩৪) লাশ উদ্ধারসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- রিপন মণ্ডল, নয়ন মণ্ডল, পিযুষ করাতি ও দিলীপ চদ্র রায়।
গত বুধবার দিলীপ চদ্র রায়কে সাভার থেকে এবং বাকি তিনজনকে কেরানীগঞ্জের জয়েনপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের নিয়ে ওইদিনই অভিযান চালিয়ে বোয়ালখালী সিরাজদী খাঁন ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প (বিসিক) এলাকার পরিত্যাক্ত ১৬ ফুট বালির নিচ থেকে অনুপ বাউলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পিবিআই জানিয়েছে, মাটি কাটার ভেক্যু দিয়ে ব্যবসা করার জন্য রিপন মণ্ডলের মাধ্যমে নিহত অনুপ বাউল ১০ লাখ টাকা ঋণ দেন নয়ন মণ্ডলকে। এ পাওনা টাকা নিয়েই দুজনের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। একে কেন্দ্র করেই অনুপ বাউলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন নয়ন। পরিকল্পনার দুদিন পর গত ৪ ফেব্রুয়ারি রিপনসহ চারজন অনুপ বাউলকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন এবং তার মরদেহ বালির নিচে পুঁতে রাখেন।
[caption id="attachment_352409" align="aligncenter" width="700"]
নিখোঁজ হওয়ার পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও স্বর্ণ ব্যবসায়ী অনুপ বাউলের মরদেহ উদ্ধার ও খুনিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিকেলে রাজধানী ধানমন্ডির পিবিআইয়ের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পিবিআইয়ের প্রধান অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বনজ কুমার বলেন, চলতি বছরের গত ৪ জানুয়ারি মুন্সিগঞ্জের সিরাজদি খাঁন এলাকা থেকে শ্বশুরবাড়ি মাদারীপুর যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন স্বর্ণ ব্যবসায়ী অনুপ বাউল। এ ঘটনায় পরদিন ৫ জানুয়ারি নিখোঁজের ছোট ভাই বিপ্লব বাউল সিরাজদী খাঁন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
এ ঘটনায় পরে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় ৪ ফেব্রুয়ারি একটি অপহরণ মামলাও দায়ের করেন বিপ্লব বাউল। প্রায় তিন মাস তদন্ত হওয়ার পরেও রহস্য উদ্ঘাটিত না হওয়ায় পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে গত ২১ এপ্রিল পিবিআই ঢাকা জেলা মামলাটির তদন্তভার পায়।
নানা তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে একপর্যায়ে তদন্ত কর্মকর্তা নিশ্চিত হয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার এবং লাশ উদ্ধার করেন। প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানায়, নিহত অনুপ বাউল ও গ্রেপ্তার নয়ন মণ্ডলের মধ্যে পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধ ছিল। এরই জের ধরে অনুপ বাউলকে খুনের পরিকল্পনা করে নয়ন মণ্ডল। সাহায্য নেয় চাচাত ভাই রিপন, পিযুষ ও দিলীপদের।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টার দিকে নয়ন মণ্ডল অনুপ বাউলকে পাওনা টাকা দেয়াসহ মাদারীপুরে স্বর্ণের অর্ডার পৌঁছে দেয়ার কথা বলে কেরানীগঞ্জের জয়েনপুরে ডেকে নিয়ে এসে ওই তিনজনের সহযোগিতায় শ্বাসরোধে হত্যা করে এবং একটি ড্রামে মরদেহটি ভরে রাখে। ওইদিনই বিকেল তিনটার দিকে অটোরিকশায় করে ওই ড্রাম মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদী খান থানার বোয়ালখালীস্থ বিসিক এলাকার বালুর মাঠে নিয়ে যান এবং বালিতে পুঁতে রাখেন তারা। অটোচালক অধীরকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমেই মূলত মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. সালে ইমরান চারজনকে সন্দেহের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসে।