পাহাড়ি ঢলে ১৮ ইউনিয়ন প্লাবিত, হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি, ফসলের ক্ষতি

খোরশেদ আলম, শেরপুর থেকে
প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৩৫ পিএম

পাহাড়ি ঢলে ১৮ ইউনিয়ন প্লাবিত, হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি, ফসলের ক্ষতি। ছবি: ভোরের কাগজ
গত দুইদিনের অবিরাম বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে নালিতাবাড়ী উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও ঝিনাইগাতী উপজেলার ৭ ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছে।
পাহাড়ি ঢলের পানিতে তলিয়ে শতশত পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। শতশত একর জমির আমন ফসল ও শাক সব্জি আবাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গত বুধবার থেকে দুই দিনের অবিরাম বৃষ্টি ও নালিতাবাড়ী উপজেলার ভোগাই-চেল্লাখালি, ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশি ও সোমেশ্বরী নদীর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি বৃহস্পতিবার রাত থেকে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
এতে নদীগুলোর বিভিন্ন স্থানের পাড় ভেঙে নালিতাবাড়ী উপজেলার পৌর শহরসহ উপজেলার ৯ ইউনিয়ন, ঝিনাইগাতী উপজেলার ৭ ইউনিয়ন ও শ্রীবরদী উপজেলার ২ ইউনিয়নের শতাধিক গ্রামের ২ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পরে।
আরো পড়ুন: সোনারগাঁওয়ে অপহৃত মাদ্রাসা ছাত্রকে উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৩
পাহাড়ি ঢলের পানির তোড়ে গ্রামীণ রাস্তাঘাট ভেঙে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পরে। ঝিনাইগাতী উপজেলা পরিষদে ঢলের পানির প্রবেশ করে। ঢলের পানিতে তলিতে উপজেলা সদর বাজার, ধানশাইল বাজার, আয়নাপুর বাজারের ব্যবসায়ীদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানিবন্দি এলাকার লোকজনের বাড়িতে চুলা জ্বলে নি, গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগি নিয়ে মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে। শেরপুর জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমানের নেতৃত্বে প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও ছাত্র-জনতা সকাল থেকে পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধারে তৎপরতা চালায়। পানিবন্দি এলাকায় লোকজনের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়।
ঢলের পানিতে তলিয়ে শতশত পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। শতাধিক কাঁচা ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। হাজার হাজার একর জমির আমন ফসল ও শাকসবজি ক্ষেত পানির নিচে নিমজ্জিত হয়েছে। পাহাড়ি ঢলের পানির তোড়ে বিদ্যুতের খুটি উপড়ে পরে বৃহস্পতিবার রাত থেকে এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
শেরপুর জেলা খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ হুমায়ুন কবির বলেন, পাহাড়ি ঢলের পানিতে ৬ হাজার হেক্টর আমন আবাদ সম্পূর্ন ও ৮ হাজার হেক্টর আমন আবাদ আংশিক নিমজ্জিত হয়েছে।
শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার পানিবন্দি এলাকার লোকজনের মধ্যে ৩ হাজার পেকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও ছাত্র-জনতার সমন্বয়ে পানিবন্দি এলাকার লোকজনদের উদ্ধারে তৎপরতা চলছে।