দুই মার্কিনিসহ আজ ৩ জিম্মির মুক্তি দিচ্ছে হামাস

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৩২ পিএম

শুক্রবারই এ তিনজনের তালিকা ইসরায়েলকে পাঠিয়ে দিয়েছে হামাস। ছবি : সংগৃহীত
যুদ্ধবিরতির শর্ত মেনে আজ শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বন্দিবিনিময় করছে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস।
শনিবার গাজা দুই মার্কিনিসহ ৩ জিম্মির মুক্তি দিচ্ছে হামাস। অন্যদিকে ৯০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়ার কথা থাকলেও পরে তা বাড়িয়ে ১৮৩ জনে উন্নিত করেছে ইসরায়েল। খবর আল জাজিরা ও টাইমস অব ইসরায়েলের।
হামাস এরই মধ্যে শনিবার যে ৩ জিম্মি মুক্তি পাচ্ছেন- তাদের নাম ও পরিচয় প্রকাশ করেছে। তারা হলেন, ওফার ক্যালডেরন (৫৪), কিথ সিগেল (৬৫) এবং ইয়ার্ডেন বিবাস (৩৫)।
মুক্তির একদিন আগে শুক্রবারই এ তিনজনের তালিকা ইসরায়েলকে পাঠিয়ে দিয়েছে হামাস কর্তৃপক্ষ। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেছেন, মুক্তির জন্য অপেক্ষমাণ ৩ জিম্মির পরিবারকে অবহিত করা হয়েছে।
এদের মধ্যে সিগেল একজন দ্বৈত ইসরায়েলি-মার্কিন নাগরিক যিনি মূলত উত্তর ক্যারোলিনার বাসিন্দা। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলার সময় কিবুতজ কাফার আজা এলাকা থেকে তার সঙ্গে তার স্ত্রী আভিভাকে ধরে নিয়ে যায় হামাস। আভিভাকে গত বছরের নভেম্বরে আগের যুদ্ধবিরতির সময় মুক্তি দেয়া হয়েছিল।
অপর মার্কিন জিম্মি ক্যালডেরনকে তার দুই সন্তানের সঙ্গে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর কিবুৎজ নিরওজ এলাকা থেকে অপহরণ করা হয়েছিল। দুই সন্তান আগের যুদ্ধবিরতিতে মুক্ত হয়েছিল।
ইসরায়েলি নাগরিক ইয়ার্ডেন বিবাস, তার স্ত্রী শিরি এবং সন্তান এরিয়েল ও কেফিকে কিবুৎজ নিরওজ এলাকা থেকে অপহরণ করা হয়েছিল। তখন কেফিরের বয়স ছিল ১০ মাস এবং এরিয়েলের বয়স ছিল ৪ বছর।
ইয়ার্ডেন তাকে অপহরণের সময় আহত হয়েছিলেন এবং তাকে তার স্ত্রী ও সন্তানদের থেকে গাজায় আলাদা রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
হামাস দাবি করেছে, শিরি ও দুই ছেলেকে বন্দি অবস্থায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছে। ইসরায়েল অবশ্য হামাসের এ এই দাবি মেনে নিতে পারছে না।
ইসরায়েল দাবি করেছে, হামাস শিরি এবং দুটি ছোট ছেলের অবস্থান স্পষ্ট করবে, যারা জিম্মি-যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ৪২ দিনের পর্বে ৩৩ জিম্মির তালিকায় রয়েছে।
এদিকে, যুদ্ধবিরতির আওতায় ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি আরো ১৮৩ জন ফিলিস্তিনি মুক্তি পেতে যাচ্ছেন শনিবার।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আজ যারা মুক্তি পেতে যাচ্ছেন, তাদের মধ্যে ১৮ জন যাবজ্জীবন কারাভোগ করছেন। এছাড়া ৫৪ জন দীর্ঘমেয়াদে কারাভোগ করছেন। বাকি ১১ জনকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর আটক করা হয়েছে।
এর আগে ইসরায়েলের তরফ থেকে বলা হয়েছিল, ৯০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়া হবে। পরে সংখ্যাটি বাড়ানো হয়।
ফিলিস্তিনি বন্দি সোসাইটির মুখপাত্র আমানি সারাহনেহ জানান, তথ্যটি হালনাগাদ করা হয়েছে। শনিবার ১৮৩ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে দখলদার ইসরায়েল।
এই ১৮৩ ফিলিস্তিনির মুক্তির বিনিময়ে ৩ মার্কিন ও ইসরায়েলি জিম্মিকে ছেড়ে দেবে হামাস। দীর্ঘ ১৫ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে গত ১৯ জানুয়ারি থেকে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। প্রথম ধাপের ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতিতে ৩৩ জন ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেবে হামাস। বিনিময়ে দেড় হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় শুরু হওয়া ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ৪৭ হাজার ৩০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।