আসাদ দম্পতির বিচ্ছেদ ও রাশিয়া আটকের খবর ‘সত্য নয়’—ক্রেমলিনের দাবি

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৬ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ও তার স্ত্রী আসমা আল-আসাদের বিচ্ছেদ এবং রাশিয়ায় আটকে রাখার খবর মিথ্যা বলে দাবি করেছে ক্রেমলিন। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, এই প্রতিবেদনগুলোর কোনো সত্যতা নেই। তার দাবি, আসমা আল-আসাদ মস্কোতে বিচ্ছেদের আবেদন করেছেন, এমন তথ্য ভিত্তিহীন।
এছাড়া, পেসকভ আরো বলেন যে আসাদকে রাশিয়ায় আটক করা এবং তার সম্পদ জব্দ করার খবরও মিথ্যা। তিনি বলেন, এসব তথ্য বানোয়াট এবং ক্রেমলিন এর প্রতি কোনো মন্তব্য বা ব্যবস্থা নেবে না।
এদিকে, রবিবার তুর্কি ও আরবি সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছিল, সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর আসাদ পরিবার রাশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছে এবং আসমা আল-আসাদ মস্কোতে বিচ্ছেদের আবেদন করেছেন। তবে এসব খবরকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে খারিজ করেছে ক্রেমলিন।
বাশার আল-আসাদ ও আসমা আল-আসাদ: বিবাহ এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
আসমা আল-আসাদ ১৯৭৫ সালে লন্ডনে সিরীয় বাবা-মায়ের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন এবং সেখানেই বেড়ে ওঠেন। ২০০০ সালে তিনি সিরিয়ায় যান এবং একই বছর বাশার আল-আসাদকে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বাশার আল-আসাদ ২০০০ সালে সিরিয়ার ক্ষমতায় আসেন এবং ২৪ বছর ধরে কঠোর শাসন চালান।
তবে, ৮ ডিসেম্বর সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর আক্রমণে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং দামেস্ক বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। এই পরিস্থিতিতে বাশার আল-আসাদ রাশিয়ায় আশ্রয় নেন।
আসাদ রাশিয়ায় আশ্রয় নেয়ার পর পরিস্থিতি
ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর, বাশার আল-আসাদ মস্কোতে আশ্রয় গ্রহণ করেন, তবে তার ওপর বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। তাকে মস্কো ত্যাগ করার অনুমতি দেয়া হয়নি এবং রাজনৈতিক কোনো তৎপরতা চালানোরও অনুমতি দেয়া হয়নি। এছাড়া, তার সম্পদও জব্দ করা হয় বলে দাবি করা হয়, যার মধ্যে ছিল ২৭০ কেজি স্বর্ণ, ২ বিলিয়ন ডলার এবং মস্কোতে ১৮টি অ্যাপার্টমেন্ট।
তবে, এসব অভিযোগের ব্যাপারে ক্রেমলিন পরিষ্কারভাবে মিথ্যা দাবি করেছে। পেসকভ এইসব প্রতিবেদনকে ভিত্তিহীন বলে অভিহিত করেছেন।
বাশার আল-আসাদের রাশিয়ায় যাওয়ার কারণ
বাশার আল-আসাদ সিরিয়া থেকে রাশিয়ায় চলে যাওয়ার পরিকল্পনা কখনোই করেননি, এমনটি দাবি করা হয়েছে সিরিয়ান প্রেসিডেন্সি টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে ১৬ ডিসেম্বর প্রকাশিত এক বিবৃতিতে। সেখানে বলা হয়, সিরিয়া থেকে আমার প্রস্থানের পরিকল্পনাও ছিল না বা এটি যুদ্ধের শেষ ঘণ্টায়ও ঘটেনি।
বিবৃতিতে আরো দাবি করা হয়, ৮ ডিসেম্বর ভোর পর্যন্ত আসাদ দামেস্কে ছিলেন এবং তার দায়িত্ব পালন করছিলেন। দামেস্কের পতনের পর ৮ ডিসেম্বর সকালে আসাদ হামিমিম বিমানঘাঁটিতে চলে যান এবং পরে মস্কো চলে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
বাশার আল-আসাদ তার বিবৃতিতে বলেন, দামেস্কের নিয়ন্ত্রণ বিদ্রোহীদের হাতে চলে যাওয়ার সময় আমি পদত্যাগ বা আশ্রয় চাওয়ার কথা বিবেচনা করিনি। তিনি আরো বলেন, আমি মনে করেছি, সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়াই একমাত্র উপায়।
এছাড়া, তিনি দাবি করেন, কোনো ব্যক্তি বা দলও আমাকে পদত্যাগ বা আশ্রয় চাওয়ার প্রস্তাব দেয়নি।