অমর একুশে বইমেলায় স্যানিটারি ন্যাপকিন ও ডায়াপার বিক্রি করায় একটি স্টল বন্ধের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা তৈরি হয়েছে। তবে মেলা পরিচালনা কমিটি বলছে, স্যানিটারি ন্যাপকিন বা ডায়াপার বিষয় নয়। অনুমোদন না থাকায় স্টলটি বন্ধ করা হয়েছে।

কমিটির সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্টলটি মেলার নীতিমালা লঙ্ঘন করে পণ্য বিক্রি করছিল। রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বইমেলায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের পাশে স্টলটি বন্ধ দেখা গেছে। পরিপ্রেক্ষিতে ফেসবুকে কেউ কেউ পোস্ট করেছেন, ‘ইসলামিস্ট গ্রুপের মব’ এর ভয়ে স্টলটি বন্ধ করা হয়েছে।

ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ছড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে লেখা হয়েছে, বেশ কিছু ‘ইসলামিস্ট গ্রুপ’ স্টলটিতে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিক্রিতে আপত্তি জানায়। বইমেলা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চিঠিটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান থেকে পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়েছে।

‘মব’ এর শঙ্কা থেকে এবং স্পন্সর কোম্পানির ব্যবসায়িক স্বার্থকে বিবেচনায় রেখে স্টল দুটি অন্য পণ্য (যেমন শিশু শিক্ষা সরঞ্জাম) দিয়ে প্রতিস্থাপনের অনুমতির কথা বলা হয়। চিঠিতে বইমেলার আয়োজক বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম মন্তব্য করেছেন, এ পরিস্থিতি সম্পর্কে আমি ওয়াকিবহাল। অতি দ্রুত এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

এই বিষয়ে বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য-সচিব সরকার আমিন বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী, বইমেলায় বই ও খাবার ছাড়া অন্য কোনো পণ্য বিক্রি করার সুযোগ নেই। আবার বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম বলছেন, স্টলটি মেলায় নীতিমালা অনুযায়ী অনুমোদন নেয়নি। এজন্য বন্ধ করা হয়েছে। এর সঙ্গে স্যানিটারি ন্যাপকিন বা ডায়াপারের কোনো বিষয় নেই।

তবে মেলায় স্টলটি এলো কীভাবে- প্রশ্নে তিনি বলেন, বইমেলায় কিছু কাজের জন্য আমরা ইভেন্ট প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দিই। তারা টয়লেটসহ মেলার অবকাঠামোর জন্য কিছু কাজ করে থাকে। এজন্য মেলা কমিটিকে জানিয়ে ছোট ছোট স্পন্সর সংগ্রহ করার সুযোগ পায়। যেমন টয়লেট ক্লিনিংয়ের কাজ করছে ‘ডেটল’। তারা মেলা কমিটিকে জানিয়ে টয়লেটে সেবা দিচ্ছে। কিন্তু এই স্টল ইভেন্ট প্রতিষ্ঠানের লোকজন মেলা কমিটিকে না জানিয়েই দিয়েছে।

স্টলটি অনুমোদন ছাড়াই দেয়ার কথা স্বীকারও করেছেন বইমেলার ইভেন্ট প্রতিষ্ঠান ড্রিমার ডংকি প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী রাকিব হাসান। তিনি বলেন, আমরা মেলার কাজের সহায়তা হয় এমন কিছু কোম্পানি থেকেই স্পন্সর সংগ্রহ করি। মেলা কমিটি আমাদেরকে জায়গা দেখিয়ে দেয়। টয়লেট ক্লিনিং ‘ডেটল’ এর মতোই স্যানিটারি ন্যাপকিন আর ডায়াপারের জন্য স্টলটি দিয়েছিলাম টয়লেটের পাশেই।

স্টলটিতে নীতিমালা ভঙ্গ করে স্যানিটারি ন্যাপকিন ও ডায়াপার বিক্রির অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, তারা ফ্রি দিচ্ছিল। তবে কেউ কিনতে চাইলে বিক্রিও করছিল।