‘যুদ্ধ গণহত্যা সহে না কবিতা’ শ্লোগানে ১ ফেব্রুয়ারি জাতীয় কবিতা উৎসব

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:২২ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
‘যুদ্ধ গণহত্যা সহে না কবিতা’ শ্লোগানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার সংলগ্ন চত্বরে আগামী ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৩৬তম জাতীয় কবিতা উৎসব। এদিন এই উৎসবে জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কারপ্রাপ্ত কবির নাম ঘোষণা করা হবে।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) দ্বিতীয় তলায় উৎসবের অস্থায়ী দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছে জাতীয় কবিতা পরিষদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি মুহাম্মদ সামাদ। লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কবি তারিক সুজাত। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- কবি কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়, কবি আসাদ মান্নান, কবি দিলারা হাফিজ, কবি আসলাম সানী, কবি বদরুল হায়দার, আবৃত্তি শিল্পী শাহাদাত হোসেন নিপুসহ অন্যরা।
লিখিত বক্তব্যে তারিক সুজাত বলেন, আজ যখন পৃথিবীর দেশে দেশে অশুভ শক্তির দাপটে নিরপরাধ মানুষ বিপন্ন; নারী, শিশু, বৃদ্ধসহ সাধারণ মানুষের লাশের স্তূপের ওপর ক্ষমতার অহমিকা দেখাচ্ছে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি; তখন আমরা বাংলাদেশের কবিরা এবং আরও বেশ কয়েকটি দেশের কবি ও কবিতা প্রেমীরা একত্র হয়ে এই উৎসবে যুদ্ধ, গণহত্যাসহ সব অন্যায়ের প্রতিবাদ করব।
তারিক সুজাত আরও বলেন, এ বছর আমাদের কবিতা উৎসবের মর্মবাণী: ‘যুদ্ধ গণহত্যা সহে না কবিতা’। দুই দিনব্যাপী উৎসবে কবিতাপাঠ, নিবেদিত কবিতা, সেমিনার আবৃত্তি ও সংগীতের মধ্য দিয়ে আমরা এই স্লোগানকে মূর্ত করে তুলব।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, এবারও বিভিন্ন দেশ ও ভাষাভাষীর কবিদের উৎসবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এরই মধ্যে ভারতের বিভিন্ন ভাষার বেশ কয়েকজন বরেণ্য কবি তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ভারতের কলকাতার সুবোধ সরকার, বিথী চট্টোপাধ্যায়, বিভাস রায় চৌধুরী, ভারতের আগরতলার রাতুল দেব বর্মন, দীলিপ দাস, আকবর আহমেদ, আসামের কবি অনুভব তুলাসি, চন্দ্রিমা দত্ত, ফিলিপাইনের কবি ও বর্তমানে বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত লিও টিটো এল আসান জুনিয়র, নেপালের চাবিলাল কপিলা।
এছাড়াও ‘যুদ্ধ গণহত্যা সহে না কবিতা’ মর্মবাণীর প্রতি সংহতি জানিয়ে কায়রো আন্তর্জাতিক বই মেলা থেকে সরাসরি অনলাইনে সংযুক্ত হবেন আরব বিশ্বের খ্যাতিমান কয়েকজন কবি। তারা হলেন- মিশরের আহমেদ আল ছাহহে, ইব্রাহীম আল মাশরি, ড. সারা হামিদ হাওয়াস, ইরাকের ড. আলী আল সালাহ, জার্মান কবি টরিয়াস বার্গার্ট, আর্জেন্টিনার কবি জনা বার্গার্ট।
লিখিত বক্তব্য উপস্থাপনের পর এক প্রশ্নের জবাবে তারিক সুজাত বলেন, ভারত ছাড়াও ফিলিপাইন ও নেপালের কয়েকজন বরেণ্য কবি উৎসবে অংশ নেবেন। অনলাইন-অফলাইন মিলিয়ে মিসর, ইরাক, জার্মানি, আর্জেন্টিনা, সুইডেন, জাপান ও চীনের বেশ কয়েকজন কবিও এবারের কবিতা উৎসবে যুক্ত হবেন বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
‘যুদ্ধ গণহত্যা সহে না কবিতা’ দ্বারা কী বার্তা দিতে চান সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কবি মুহাম্মদ সামাদ বলেন, আমরা সবসময়ই শান্তির পক্ষে। জাতীয় কবিতা পরিষদের সূচনাই হয়েছিল সামরিক স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের অগ্নিগর্ভ থেকে। সারা পৃথিবীর শিল্পীরাই শান্তির পক্ষে। তবুও ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ, গাজায় নিরীহ মানুষের উপর হামলাসহ সারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ধ্বংসযজ্ঞ আমরা প্রতিনিয়তই দেখছি।
তিনি বলেন, ছোট দেশ হিসেবে আমরা এই মর্মবাণীর মাধ্যমে এসব ধ্বংসযজ্ঞের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাই এবং এ প্রতিবাদ পৃথিবীর দেশে দেশে ছড়িয়ে যাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
১ জানুয়ারি থেকে উৎসবের অস্থায়ী দপ্তরে এবারের কবিতা উৎসবের নিবন্ধন চলছে বলে জানান জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি মুহাম্মদ সামাদ। এবারের উৎসবের মাধ্যমে ‘আমরা শান্তির পক্ষে, যুদ্ধ ও অশান্তির বিরুদ্ধে’ বার্তাটি দেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।