কেন জামিন পেলেন না চিন্ময় কৃষ্ণ, যা জানা গেল

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:৪৯ পিএম

ছবি ; সংগৃহীত
চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদন খারিজ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার মহানগর দায়রা জজ সাইফুল ইসলাম ভার্চুয়াল শুনানির মাধ্যমে এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মফিদুল হক ভূইয়া।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মফিজুল হক ভূইয়া বলেন, “রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা জামিন অযোগ্য। এই মামলার শাস্তি সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন, এবং মামলাটি তদন্তাধীন থাকায় জামিন দেয়ার কোনো সুযোগ নেই।”
চিন্ময় দাশের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ১১ জন আইনজীবী। তাদের মধ্যে সুমন কুমার রায় জানান, “সমাবেশের ভিডিওতে যে পতাকা অবমাননার কথা বলা হচ্ছে, সেটি আসলে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নয়। অভিযোগে পতাকা জব্দ সংক্রান্ত কোনো প্রমাণ নেই এবং অভিযোগ প্রমাণের জন্য সুনির্দিষ্ট তথ্য উপস্থাপন করা হয়নি।”
তিনি আরো বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯৬ ধারা অনুযায়ী, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা গ্রহণের আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি প্রয়োজন। কিন্তু এ মামলায় সেই প্রক্রিয়া মানা হয়নি।
অন্যদিকে, চিন্ময়ের আইনজীবীরা দাবি করেন, তার নির্দিষ্ট ঠিকানা রয়েছে এবং তিনি পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তারা মামলাটিকে ভিত্তিহীন উল্লেখ করে জামিন আবেদন করেন।
তবে উভয়পক্ষের যুক্তি শোনার পর আদালত চিন্ময়ের জামিন আবেদন খারিজ করে।
গ্রেপ্তার ও সহিংসতার পটভূমি
গত ২৫ নভেম্বর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে চিন্ময় কৃষ্ণ দাশকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরদিন কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় তাকে আদালতে হাজির করা হলে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ইসকন অনুসারীরা বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে বিক্ষোভ সহিংস রূপ নেয়। আদালত এলাকায় মসজিদ, দোকানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে আদালতের প্রধান ফটকের কাছে একদল ইসকন অনুসারীর হামলায় অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম নিহত হন।
এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা এবং আরও কয়েকটি মামলা দায়ের হয়েছে। নিহত সাইফুল ইসলামের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাগুলো করেন।
এই মামলার তদন্ত এখনও চলছে।