×

আন্তর্জাতিক

২০২৪ সালের যত ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৭ এএম

২০২৪ সালের যত ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা

ছবি : সংগৃহীত

   

২০২৪ সালে একের পর এক বিমান দুর্ঘটনার সাক্ষী হয়েছে পুরো বিশ্ব। বিশ্বের বড় বড় আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্স থেকে ছোট স্থানীয় বিমান পরিবহন—সবখানেই দেখা গেছে দুর্যোগের ছাপ। শুধু দুর্ঘটনার সংখ্যার দিক দিয়েই নয়, প্রাণহানি এবং আর্থিক ক্ষতির পরিমাণও ছাড়িয়ে গেছে অতীতের রেকর্ড।

গত ২ জানুয়ারি দেশটির টোকিও বিমানবন্দরে জাপান এয়ারলাইন্সের একটি এয়ারবাস এ৩৫০-৯০০ রানওয়েতে অবতরণের সময় কোস্টগার্ডের একটি বিমানকে ধাক্কা দেয়। বিমানটিতে থাকা ৩৭৯ যাত্রীর প্রাণ রক্ষা পেলেও কোস্টগার্ডের ৫ জন কর্মী ঘটনাস্থলেই মারা যান। অবতরণে ভুল বোঝাবুঝি এবং যোগাযোগে ত্রুটি এই দুর্ঘটনার মূল কারণ ছিল বলে উঠে আসে তদন্তে।

এর প্রায় কয়েক মাস পর সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর তীব্র ঝাঁকুনির কবলে পড়ে। ২২ মে লন্ডন থেকে সিঙ্গাপুরগামী এই বিমানটি মাঝ আকাশে অস্বাভাবিক বায়ুপ্রবাহের মুখে পড়লে ব্যাংককে জরুরি অবতরণ করতে বাধ্য হন পাইলট। ওই ঘটনায় একজন নিহত হন, আহত হন অন্তত ৭১ জন আরোহী।

 হতাহতের দিক থেকে ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটে ৯ আগস্ট। এদিন ব্রাজিলের ভিনহেডো শহরে ভিওপাস এয়ারলাইন্সের এটিআর ৭২-৫০০ বিমান আকাশে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আবাসিক এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। বিমানে থাকা ৬২ জন আরোহীর সবাই প্রাণ হারান। এর আগে বিমানের কারিগরি ত্রুটির তথ্য সামনে আসলেও তা যথাযথভাবে সমাধান না করায় এ দুর্ঘটনা বলে জানা যায়।

২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসের ১৩ দিনে ৮ বিমান দুর্ঘটনা

কিন্তু বছরের শেষ মাসে এসে আকাশপথ হয়ে উঠেছে ভয়ংকর। ডিসেম্বর মাসে মাত্র ১৩ দিনেই বিশ্বের নানা প্রান্তে অন্তত ৮টি বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩টি। আর এসব দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৩৪ জন যাত্রী প্রাণ হারিয়েছেন।

২৯ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ানয় বিমান দুর্ঘটনা

২৯ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে জেজু এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের একটি বিমান। 

এ দুর্ঘটনায় ১৭৯ জন যাত্রীর মৃত্যুর খবর জানিয়েছে দেশটির কর্মকর্তারা। বিমানটিতে ক্রুসহ মোট ১৮১ জন যাত্রী ছিলেন। এর মধ্যে দুইজন ক্রুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।

 এছাড়া ২৯ ডিসেম্বর আরো দুটি বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে। নরওয়ে থেকে নেদারল্যান্ডসের উদ্দেশে যাত্রা করে রয়্যাল ডাচ এয়ারলাইন্সের একটি যাত্রীবাহী বিমান। তবে উড্ডয়নের পরপরই কোনো কারণে এটি আবারো ওই বিমানবন্দরে ফিরে আসে এবং জরুরি অবতরণের চেষ্টা করে। এ সময় রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে বিমানটি।

বিমানটিতে ১৮২ জন যাত্রী ছিলেন। তবে তারা সবাই অক্ষত আছেন। দক্ষিণ কোরিয়া ও নরওয়ের পর কানাডায় একটি যাত্রীবাহী বিমান দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এয়ার কানাডার বিমানটি দেশটির হ্যালিফ্যাস্ক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণের চেষ্টা করে। এ সময় প্রচণ্ড গতিতে পিছলে গিয়ে এতে আগুন ধরে যায়। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

কাজাখস্তানে২৫ ডিসেম্বর বিমান দুর্ঘটনা

এর আগে ২৫ ডিসেম্বর দুর্ঘটনার মুখে পড়ে আজারবাইজান এয়ারলাইন্সের ইআরজে-১৯০ মডেলের একটি যাত্রীবাহী বিমান। এর গন্তব্য ছিল রাশিয়া। স্থানীয় সময় ভোর ৩টা ৫৫ মিনিটে আজারবাইজানের রাজধানী বাকু থেকে রাশিয়ার চেচনিয়া প্রদেশের গ্রজনির উদ্দেশে যাত্রা করে বিমানটি।

পথিমধ্যে কাজাখস্তানের আকতাউতে কাসপিয়ান সাগরের পূর্ব-উপকূলে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় বিমানের ৬৭ যাত্রীর মধ্যে ৩৮ জনের মৃত্যু হয়। 

খবরে বলা হয়, ঘন কুয়াশার কারণে বিমানটির পথ ঘুরিয়ে দেয়া হয়েছিল। এরপর ঠিক হয়, এটি কাজাখস্তানের বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করবে। কিন্তু অবতরণের আগে বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারায়।

রুশ সংবাদমাধ্যমের দাবি, একঝাঁক পাখির সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারায়। তবে আজারবাইজান সরকার জানায়, রাশিয়া বিমানটিকে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ভূপাতিত করেছে। 

এই অভিযোগ সরসারি স্বীকার না করলেও এজন্য আজারি প্রেসিডেন্টে ইলহাম আলিয়েভের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

২২ ডিসেম্বর দক্ষিণ ব্রাজিলে বিমান দুর্ঘটনা

এর আগে গত ২২ ডিসেম্বর দক্ষিণ ব্রাজিলের পর্যটন শহর গ্রামাদোতে একটি ছোট বিমান বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনায় ১০ জন যাত্রীর সবার মৃত্যু হয়। বিমানটি প্রথমে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি বাড়ির চিমনিতে ধাক্কা মারে। এরপর আরো একটি বাড়ির দোতলায় গিয়ে দ্বিতীয়বার ধাক্কা খায়।

শেষমেশ বিমানটি একটি দোকানের ওপর হুড়মুড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তে আগুন ধরে যায়। একইদিন পাপুয়া নিউগিনিতে একটি বিমান ভেঙে পড়ে। তাতে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়। তবে ঠিক কি কারণে সেটি বিধ্বস্ত হয়, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

গত ১৮ ডিসেম্বর আর্জেন্টিনার সান ফার্নানদো বিমানবন্দরের কাছে গাছে ও প্রাচীরের দেয়ালে ধাক্কা খায় একটি বিমান। সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায় বিমানটিতে। তাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বিমানের দুই পাইলটের।

 ১৭ ডিসেম্বর হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের হনুলুলু বিমানবন্দরের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভেঙে পড়ে একটি পণ্যবাহী বিমান। তবে ঠিক কি কারণে বিমান বিধ্বস্ত হয়, তা এখনো স্পষ্ট নয়। মনে করা হচ্ছে, পাইলটদের প্রশিক্ষণ চলার সময়ে বিমানটি ভেঙে পড়ে।

বিমানগুলো ভেঙে পড়ার নেপথ্যে কোথাও প্রতিকূল আবহাওয়া, কোথাও প্রযুক্তিগত ত্রুটিকে দায়ী করা হচ্ছে। তবে দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে ধন্দ থাকলেও সকলেই একটি বিষয়ে একমত যে, ভবিষ্যতে এই ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে আরো সুরক্ষাবিধি প্রণয়ন করা প্রয়োজন। 



সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App