বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় শীর্ষ ৬০০-তে কি আছে ঢাবি-বুয়েট?

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:২৬ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা ও গবেষণা সংস্থা কোয়াককোয়ারেলি সায়মন্ডস (কিউএস) ২০২৫ সালের জন্য বিশ্বের সেরা টেকসই বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এবারের তালিকায় বাংলাদেশের ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে, তবে দেশের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), রাজশাহী, চট্টগ্রাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) কোনো জায়গাই পায়নি শীর্ষ ৬০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে।
ঢাবি সবার উপরে, তবে শীর্ষ এক হাজারের বাইরে
কিউএস এর নতুন র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) স্থান ৬৩৪তম। ঢাবি তালিকায় বাংলাদেশের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যা শীর্ষ এক হাজারের মধ্যে জায়গা পেয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় এটির অবস্থানে কিছুটা অবনতি হয়েছে। ২০২৪ সালের র্যাঙ্কিংয়ে ঢাবির স্থান ছিল ৬৩৭, তবে এবার এটি সামান্য উন্নতি করে ৬৩৪তম অবস্থানে উঠে এসেছে।
ঢাবির পর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, যা ৬৯০তম স্থানে রয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি বেসরকারি হলেও টেকসই উদ্যোগে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার জন্য বিশ্বব্যাপী সাড়া ফেলেছে।
তবে শীর্ষ এক হাজারের মধ্যে আর কোনো বাংলাদেশি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পায়নি।
বাংলাদেশের আরও ১৩ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান
বাংলাদেশের আরও ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয় তালিকায় রয়েছে, কিন্তু তারা সকলেই এক হাজারের বাইরে অবস্থান করছে। এদের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ১০৮০ থেকে ১১০০-এর মধ্যে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ১১০১ থেকে ১১২০, এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ১১৪১ থেকে ১১৬০-এর মধ্যে।
এছাড়া ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ১৩০১ থেকে ১৩৫০ এর মধ্যে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ১৩৫১ থেকে ১৪০০ এর মধ্যে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে আমেরিকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় এবং বুয়েটের অবস্থান ১৪০১ থেকে ১৪৫০ এর মধ্যে।
এছাড়া ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় তালিকায় ১৫০০-এর ওপরে রয়েছে, তবে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনির্দিষ্ট অবস্থান প্রকাশ করা হয়নি।
কিউএস র্যাঙ্কিং: সাসটেইনেবিলিটি ২০২৫
কিউএস তৃতীয়বারের মতো ‘কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিং: সাসটেইনেবিলিটি ২০২৫’ প্রকাশ করেছে। এ তালিকায় এবার প্রায় ১ হাজার ৮০০ বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে, যার মধ্যে কানাডার ইউনিভার্সিটি অব টরন্টো শীর্ষস্থান অর্জন করেছে, যা টেকসই শিক্ষা ও গবেষণায় বিশ্বব্যাপী নেতৃস্থানীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত।
র্যাঙ্কিং নির্ধারণের মানদণ্ড
কিউএস র্যাঙ্কিংয়ের বিশ্লেষণে তিনটি প্রধান সূচক বিবেচনা করা হয়েছে। এর মধ্যে পরিবেশগত প্রভাব (৪৫%), সামাজিক প্রভাব (৪৫%) এবং শাসনগত প্রভাব (১০%) নির্ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সামগ্রিক স্কোর। এসব সূচকের গড়ের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাঙ্কিং তৈরি করা হয়, যেখানে পরিবেশগত দিক ও সামাজিক উন্নয়নই বেশি গুরুত্ব পেয়েছে।
পূর্ববর্তী র্যাঙ্কিং
২০২৩ সালে প্রথমবারের মতো টেকসই বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাঙ্কিং প্রকাশ করা হয়, যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বুয়েটসহ মোট ৭০০ বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছিল। ঢাবি ৫৫১-৬০০ রেঞ্জে এবং বুয়েট ৬০১ থেকে ওপরে ছিল। ২০২৪ সালে প্রকাশিত র্যাঙ্কিংয়ে ঢাবি এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সবচেয়ে ভালো স্থান অর্জন করেছে।
এই র্যাঙ্কিং বিশ্বব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর টেকসই উদ্যোগ এবং পরিবেশবান্ধব পদ্ধতির ওপর গুরুত্ব আরোপ করে, যা বর্তমান পৃথিবীতে শিক্ষার বিকাশ এবং পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।