২০২৪ সালের নির্বাচনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যেমন প্রভাব ছিল, মেটার যে দাবি

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:২৯ পিএম

মেটা দাবি করেছে, চলতি বছর সারা বিশ্বের নির্বাচনগুলোতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সেই অর্থে প্রভাব ফেলতে পারেনি। প্রতীকী ছবি এআই দিয়ে তৈরি। কার্টেসি : ভোরের কাগজ
বিশ্বজুড়ে ২০২৪ সালের নির্বাচনের ফলাফলের ওপর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রভাব ফেলতে ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মেটা। প্ল্যাটফর্মগুলোর ওপর এআই-এর সম্ভাব্য নেতিবাচক প্রভাবরোধে নেয়া প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার জন্যই এমনটি সম্ভব হয়েছে। মেটার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগ মঙ্গলবার এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন।
নিক ক্লেগ বলেন, আমি মনে করি না যে, জেনারেটিভ এআই আমাদের ট্রিপওয়্যার এড়াতে কার্যকর কোনো টুল ছিল। তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, নির্বাচন সংক্রান্ত গোপন কার্যক্রম রুখতে মেটার প্রচেষ্টা বেশ সফল হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী নির্বাচনী নজরদারি
মেটা ২০২৪ সালে বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে এআই-এর প্রভাব পর্যবেক্ষণে একাধিক নির্বাচনী অপারেশন সেন্টার পরিচালনা করেছে। এসব সেন্টার যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশ, ভারত, ব্রাজিল, ফ্রান্স, মেক্সিকো, পাকিস্তান, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন অঞ্চলের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছে।
মেটা জানিয়েছে, ২০২৪ সালে তারা প্রায় ২০টি গোপন প্রভাব বিস্তারকারী নেটওয়ার্ক চিহ্নিত করে সরিয়ে দিয়েছে। এর মধ্যে রাশিয়া, ইরান এবং চীনের নেটওয়ার্কগুলো উল্লেখযোগ্য। ২০১৭ সাল থেকে রাশিয়া থেকে পরিচালিত ৩৯টি, ইরান থেকে ৩১টি এবং চীন থেকে ১১টি গোপন নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
ডিপফেক ভিডিও ও বিভ্রান্তিকর তথ্য
নির্বাচনী সময়ে ডিপফেক ভিডিও এবং অডিও দ্রুত ছড়িয়ে পড়লেও তা জনমতকে বিভ্রান্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে। ক্লেগ জানান, নির্বাচনের সময় এআই-সৃষ্ট বিভ্রান্তিকর তথ্যের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম ছিল, এবং মেটা সেগুলো দ্রুত চিহ্নিত করে সরিয়ে ফেলতে সক্ষম হয়েছে।
মার্কিন নির্বাচনের এক মাস আগে থেকে মেটা ৫ লাখ ৯০ হাজার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে, যেগুলো মূলত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তির কৃত্রিম ছবি তৈরির জন্য করা হয়েছিল।
টিকটক ও অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে ঝুঁকি
ক্লেগ সতর্ক করেছেন যে, বিভ্রান্তিকর তথ্য মেটার নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা প্ল্যাটফর্ম, বিশেষত টিকটকে ছড়িয়ে পড়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, টিকটকে রাজনীতি সম্পর্কিত এআই সৃষ্ট মিথ্যা তথ্য বা ভিডিওর উপস্থিতি রয়েছে।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্রুস শ্নেইয়ার এবং নাথান স্যান্ডার্স দ্য কনভারসেশনে একটি নিবন্ধে উল্লেখ করেছেন, এআই-সৃষ্ট মিথ্যা তথ্য প্রচার যতটা ভয়াবহ হবে বলে ভাবা হয়েছিল, তেমন কিছু হয়নি। তবে তারা এবং ক্লেগ উভয়েই এআই-এর ভবিষ্যৎ প্রভাব নিয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
মেটার প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপের ফলে ২০২৪ সালের নির্বাচনে এআই-এর প্রভাব সীমিত রাখতে পারলেও অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে এ সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ ভবিষ্যতে আরও বড় হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন।