যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলীয় রাজ্য ফ্লোরিডা ও জর্জিয়ায় হারিকেন হেলেনের আঘাতে মৃতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই সংখ্যা ৬০০-তেও পৌঁছাতে পারে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি কয়েক লাখ মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) হোয়াইট হাউসে এক ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের স্বরাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা লিজ শেরউড-র‌্যান্ডওয়েল জানান, দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের উদ্ধারকর্মীরা এখন পর্যন্ত উত্তর ক্যারোলাইনা থেকে ৩৯ জন, দক্ষিণ ক্যারোলাইনা থেকে ২৫ জন, জর্জিয়া থেকে ১৭ জন, ফ্লোরিডা থেকে ১৪ জন, টেনেসি থেকে ৪ জন এবং ভার্জিনিয়া থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করেছেন। তবে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, মৃতের সংখ্যা ৬০০ ছাড়াতে পারে।

গত বৃহস্পতিবার রাতে হারিকেন হেলেন ফ্লোরিডার বিগ বেন্ড এলাকায় ঘণ্টায় ২২৫ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানে। এটি ৪ ক্যাটাগরির শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। হেলেনের আঘাতে ফ্লোরিডার স্টেইনহ্যাচি শহরটি সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে ১০ থেকে ১৫ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসের সাথে তীব্র ঝড় আঘাত হানে, যার ফলে শহরটি প্রায় সম্পূর্ণভাবে মানচিত্র থেকে মুছে গেছে।

ফ্লোরিডার পর ঘূর্ণিঝড়টি জর্জিয়া, টেনেসি, ভার্জিনিয়া এবং উত্তর ও দক্ষিণ ক্যারোলাইনায় আঘাত হানে। অঙ্গরাজ্যগুলোতে ভারী বৃষ্টির কারণে ব্যাপক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উত্তর ক্যারোলাইনার বানকম্ব কাউন্টি, যেখানে ৩৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

উত্তর ক্যারোলাইনার গভর্নর রয় কুপার জানিয়েছেন, পাহাড়ি শহর অ্যাশভিলের শত শত রাস্তা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বাসিন্দাদের জন্য আকাশপথে রসদ সরবরাহ করা হচ্ছে এবং পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধার করতে বোট ও হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হচ্ছে।

জর্জিয়ার গভর্নর ব্রায়ান কেম্প বলেন, ‘ঝড়ের ধ্বংসযজ্ঞ দেখে মনে হচ্ছে যেন এখানে বোমা বিস্ফোরিত হয়েছে।’

আরো পড়ুন: মধ্যপ্রাচ্যে সেনা ও যুদ্ধবিমান বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

ঘূর্ণিঝড় হেলেনের তাণ্ডবকে ‘বিধ্বংসী’ বলে উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘আমার জীবনে এমন ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় খুব কম দেখেছি। নিখোঁজদের সন্ধান ও ত্রাণ তৎপরতা চলছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছি।’