রামাল্লায় যেভাবে আলজাজিরার অফিস বন্ধ করলো ইসরায়েল

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:০৩ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েলি বাহিনী রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) ভোরে পশ্চিম তীরের রামাল্লাহ শহরে অবস্থিত কাতার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার অফিসে অভিযান চালিয়ে তা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরায়েল-হামাস সংঘাতের প্রেক্ষাপটে আল জাজিরার সম্প্রচার কার্যক্রমকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
আল জাজিরা তাদের আরবি ভাষার চ্যানেলে সরাসরি ফুটেজ সম্প্রচার করেছে, যেখানে ইসরায়েলি সেনারা তাদের অফিস ৪৫ দিনের জন্য বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছে। এর আগে, মে মাসে পূর্ব জেরুজালেমে আল জাজিরার সম্প্রচার কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় ইসরায়েলি পুলিশ। খবর নিউইয়র্ক পোস্টের।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, এটি ছিল প্রথমবারের মতো ইসরায়েল কোনো বিদেশি সংবাদমাধ্যমের অফিস বন্ধ করে দেয়া। তবে আল জাজিরা এখনো ইসরায়েল-অধিকৃত পশ্চিম তীর এবং গাজায় তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি বাহিনীর নির্দেশের পর আল জাজিরা আম্মান থেকে তাদের সম্প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।
সেনাবাহিনী লাইভ সম্প্রচারের সময় আল জাজিরার রামাল্লাহ অফিসে প্রবেশ করে এবং কর্মীদের দ্রুত অফিস ত্যাগের নির্দেশ দেয়। পরবর্তী ফুটেজে দেখা যায়, ইসরায়েলি বাহিনী অফিসের বারান্দায় টাঙানো একটি ব্যানার সরিয়ে ফেলছে। ওই ব্যানারে ২০২২ সালে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত ফিলিস্তিনি-মার্কিন সাংবাদিক শিরীন আবু আকলেহর ছবি ছিল।
ইসরায়েলি এক সেনা আল জাজিরার স্থানীয় ব্যুরো প্রধান ওয়ালিদ আল-ওমারিকে বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে ৪৫ দিনের জন্য আল জাজিরার অফিস বন্ধ করা হচ্ছে। আপনারা ক্যামেরাসহ সকল জিনিসপত্র নিয়ে অফিস ত্যাগ করুন।’
ওয়ালিদ আল-ওমারি পরে জানান, ইসরায়েলি বাহিনী অফিস থেকে কিছু নথি ও সরঞ্জামও জব্দ করেছে। এ সময় রামাল্লাহর আশপাশে সংঘর্ষের সময় টিয়ারগ্যাস ও গুলির শব্দ শোনা যায়।
ফিলিস্তিনি সাংবাদিক সংগঠন এই হামলা ও অফিস বন্ধের আদেশকে ‘মিডিয়ার বিরুদ্ধে নতুন আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
ইসরায়েলের যোগাযোগ মন্ত্রী শ্লোমো কারহি এই পদক্ষেপকে আল জাজিরার বিরুদ্ধে নেয়া একটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ বলে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, ‘এটি হামাস ও হিজবুল্লাহর মুখপাত্র। আমরা আমাদের বীর যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শত্রু চ্যানেলগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব।’
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) ইসরায়েলের এই পদক্ষেপ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সিপিজে বলেছে, ‘সাংবাদিকদের সুরক্ষা প্রদান করতে হবে এবং তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে।’
গাজায় চলমান যুদ্ধ এবং আল জাজিরার নিরবচ্ছিন্ন সম্প্রচার কার্যক্রমের কারণে ইসরায়েল আগে থেকেই তাদের কার্যক্রমের ওপর লক্ষ্য রাখছে। তবে এখনো ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় আল জাজিরার কার্যক্রম বন্ধ করবে কিনা তা অনিশ্চিত।
আরো পড়ুন: পশ্চিমতীরে আল-জাজিরার অফিস বন্ধ করে দিল ইসরায়েল
এই পদক্ষেপটিকে ইসরায়েলের মিডিয়ার স্বাধীনতার বিরুদ্ধে একটি নতুন চাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।