অযোধ্যার রাম লালা ভাস্কর অরুণ যোগীরাজের ভিসা প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাষ্ট্র

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২৪, ১১:৩৮ এএম

অযোধ্যার রাম লালা ভাস্কর অরুণ যোগীরাজ। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের অযোধ্যায় রাম মন্দিরের জন্য নির্মিত লালা মূর্তির ভাস্কর অরুণ যোগীরোজের মার্কিন ভিসা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। অরুণের পারিবারিক সূত্রে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। যোগীরাজের যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার গ্রেটার রিচমন্ড কনভেনশন সেন্টারে ১২ তম ওয়ার্ল্ড কন্নড় সম্মেলনে (একেকেএ-২০২৪) যোগ দেয়ার কথা ছিল। চলতি বছর ৩০ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর এ সম্মেলন আয়োজনের কথা রয়েছে।
অরুণ যোগীরাজের পরিবার ভিসা প্রত্যাখ্যানের ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করেছেন। তাদের দাবি, অরুণ ও তার স্ত্রী এর আগেও যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ করেছেন। তাদের পরিকল্পনা ছিল অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আবার দ্রুতি সময়ের মধ্যে ভারতে ফিরে আসা। খবর রিপাবলিক কন্নড়ের।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, অরুণ নিজেও এ সফরের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন। অযোধ্যা প্রকল্প শেষের পর এটিকে তার কাজের একটি বিরতি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল।
রিপাবলিক কন্নড়কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে যোগীরাজ নিশ্চিত করেছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার ভিসা প্রত্যাখ্যান করেছে।
এসময় তিনি বলেন, আমি জানি না ঠিক কি কারণে আমার ভিসা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। আমি প্রয়োজনীয় সকল নথিই জমা দিয়েছিলাম। তারপরেও ঠিক কি করণে আমার ভিসার আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হলো তা আমার বোধগম্য নয়।
একেকেএ সম্মেলন প্রতি ২ বছর পরপর আয়োজন করা হয়। এখানে এক ছাদের নিচে কন্নড় সংস্কৃতি ধারণ করে এমন সবাই একত্রিত হয়। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ভাষা ও সংস্কৃতি সংরক্ষণ করা তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। এখন পর্যন্ত হিউস্টনে ২০০০ সালে. ডেট্রয়েটে ২০০২ সালে, অরল্যান্ডে ২০০৪ সালে, ওয়াশিংটন ডিসিতে ২০০৬ সালে, শিকাগোতে ২০০৮ সালে, নিউ জার্সিতে ২০১০ সালে, আটলান্টায় ২০১২ সালে, সান জোসে ২০১৪ সালে, আটলান্টিক সিটিতে ২০১৬ সালে এবং ডালাসে ২০১৮ সালে একেকেএ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি ভারত ও অন্যান্য দেশ থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক লোক এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে।
কে এই অরুণ যোগীরাজ?
কর্ণাটকের মাইসুর-আগ্রাহারার বাসিন্দা অরুণ যোগীরাজ ভারতের বিখ্যাত একজন ভাস্বর। ভাস্কর্য নির্মাণে তার রয়েছে ৫ প্রজন্মের পারিবারিক উত্তরাধিকার। তার পিতামহ বাসভন্ন ছিলেন মহীশূর রাজার পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া একজন বিখ্যাত ভাস্বর। পারিবারিক এই ঐতিহ্য নিয়ে তিনি প্রাথমিকভাবে ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে কাজ শুরু করেন একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে। ২০০৮ সালে তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়ে ভাস্কর্য নির্মাণে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে নিয়োজিত করেন।
অরুণ বিখ্যাত তার সুভাষ চন্দ্র বসুর ৩০ ফুট উচ্চতার ভাস্কর্যের জন্য। এর বাইরে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সমর্থিত ইন্ডিয়া গেট অমর জওয়ান জ্যোতি প্রকল্প, ২০২১ সালের কেদারনাথে আদি শঙ্করাচার্যের ১২ ফুটের ভাস্কর্য, কে আর নগরের মহীশূরে ২১ ফুটের হনুমান, ড. বি আর আম্বেদকরের ১৫ ফুট ভাস্কর্য উল্লেখযোগ্য।
তার অন্যান্য কাজের মধ্যে আরো রয়েছে শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসের ১০ ফুটের একটি ভাস্কর্য, মহারাজা জয়চামরাজেন্দ্র ওডেয়ারের ১৫ ফুট উচ্চতার ভাস্কর্য, স্যার এম. বিশ্বেশ্বরাইয়া এবং ড. বি আর আম্বেদকরের বিভিন্ন ভাস্কর্য, শ্রী ইউআরের ব্রোঞ্জের ভাস্কর্য, ইসরোতে রাওয়ের ভাস্কর্য, গরুড় ভাস্কর্য, যোগনারসিংহ স্বামীর ভাস্কর্য অন্যতম।
আরো পড়ুন: ক্ষমতাচ্যুত হলেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন
অরুণ জেগীরাজের ভাস্কর্যগুলি পঞ্চমুখী গণপতি, মহাবিষ্ণু, বুদ্ধ, নন্দী, স্বামী শিববালা যোগী, স্বামী শিবকুমার এবং বনশঙ্করীর চিত্রসহ অসংখ্য মন্দিরে প্রদর্শিত হয়েছে।