ভারতের সাত রাজ্যের ১৩টি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। গত ১০ জুলাই এ ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। পশ্চিমবঙ্গসহ সাত রাজ্যের ১৩টি আসনেই বড় ধাক্কা খেল ক্ষমতাসীন দল বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ। এর মধ্যে জেতা এবং এগিয়ে থাকার হিসাবে কংগ্রেস, তৃণমূল, আপ, ডিএমকেসহ বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র শরিকেরা ১০টি পেতে চলেছে। বিজেপি এগিয়ে আছে মাত্র দু’টিতে! খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

তৃণমূল জয় পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গের রায়গঞ্জ, রানাঘাট দক্ষিণ, বাগদা এবং মানিকতলার আসনে। অথচ ২০২১-এর নীলবাড়ির লড়াইয়ে এর মধ্যে প্রথম তিনটি আসন ছিল বিজেপি দখলে। পাশাপাশি আরো ছয়টি রাজ্যের যে ৯টি বিধানসভায় ভোটে হিমাচলের হামিরপুরে বিজেপি জিতছে। নির্দলী প্রার্থী এগিয়ে রয়েছেন বিহারের রুপৌলিতে।

হিমাচলের হামিরপুর বিধানসভা আসনে জয়ী হলেন বিজেপি প্রার্থী আশিস শর্মা। কংগ্রেসের পুষ্পেন্দ্র বর্মাকে দেড় হাজার ভোটে হারালেন তিনি। ২০২২ সালের বিধানসভা ভোটে ওই আসনে কংগ্রেস এবং বিজেপি প্রার্থীকে হারিয়ে নির্দলীয় প্রার্থী হিসাবে জিতেছিলেন আশিস। সম্প্রতি বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়ে তিনি বিজেপিতে যোগ দেয়ায় ওই আসনে উপনির্বাচন হয়েছিল।

কংগ্রেস হিমাচলের দু’টি আসনে জিতেছে। উত্তরাখণ্ডের দু’টি আসনেও তারা এগিয়ে। পঞ্জাবে একটি বিধানসভায় আম আদমি পার্টি এবং তামিলনাড়ুর একটিতে ডিএমকে জিতেছে। মধ্যপ্রদেশের অমরওয়াড়ায় চলছে সমানে সমানে লড়াই। সেখানে এক হাজারেরও কম ভোটে কংগ্রেসের চেয়ে এগিয়ে বিজেপি।

আরো পড়ুন : একবিংশ শতাব্দীতে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হবে ভারত

পঞ্জাবের জালন্ধর পশ্চিমে বিজেপির শীতল অঙ্গুরল রিঙ্কুকে হারিয়ে জয়ী হলেন আম আদমি পার্টির প্রার্থী মহিন্দর ভগত। ব্যবধান প্রায় সাড়ে ৩৭ হাজার ভোটের। ২০২২ সালে জয়ী আপ প্রার্থী রিঙ্কুর বিজেপিতে যোগদানের ফলে উপনির্বাচন হয়েছিল বুধবার। এ র ভোটে রিঙ্কু লড়ছিলেন বিজেপির টিকিটে। বিহারের রুপৌলি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন আরজেডি প্রার্থী তথা সাবেক বিধায়ক বীমা ভারতী। সেখানে এগিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের দল জেডিইউর প্রার্থী। দ্বিতীয় স্থানে স্বতন্ত্র দল। ২০২০ সালে বিহারের বিধানসভা ভোটে ওই আসন থেকে জেডিইউ প্রার্থী হিসাবে জিতেছিলেন বীমা। চলতি বছরের গোড়ায় বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়ে তেজস্বী যাদবের উপস্থিতিতে আরজেডিতে যোগ দেন। লোকসভা ভোটে তেজস্বী কংগ্রেস নেতা পাপ্পু যাদবকে কোণঠাসা করতে পূর্ণিয়া আসনে বীমাকে প্রার্থী করেছিলেন। কিন্তু তিনি তৃতীয় হন। নির্দল হিসাবে দাঁড়িয়ে জেতেন পাপ্পু। দ্বিতীয় হন জেডিইউ প্রার্থী।

হিমাচল প্রদেশের দেহরা বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী হোশিয়ার সিংহের তুলনায় সাত হাজারেরও বেশি ভোটে এগিয়ে সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখুর স্ত্রী কমলেশ ঠাকুর। ২০২২ সালের বিধানসভা ভোটে ওই আসনে কংগ্রেস এবং বিজেপি প্রার্থীকে হারিয়ে জিতেছিলেন হোশিয়ার। গত বছর বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়ে তিনি বিজেপিতে যোগ দেয়ায় ওই আসনে উপনির্বাচন হচ্ছে।

উত্তরাখণ্ডের বদ্রীনাথের কংগ্রেস বিধায়ক রাজেন্দ্র সিংহ ভান্ডারি ইস্তফা দিয়ে ওই আসনে উপনির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন। ওই রাজ্যের মঙ্গলৌরে বিএসপি বিধায়কের মৃত্যুর কারণে উপনির্বাচন হচ্ছে। তামিলনাড়ুর বিক্রবন্দীতে ডিএমকে বিধায়কের মৃত্যু এবং পঞ্জাবের জালন্ধর পশ্চিমে আপ বিধায়ক শীতল অঙ্গুরল রিঙ্কুর বিজেপিতে যোগদানের ফলে উপনির্বাচন হচ্ছে বুধবার। এবার ভোটে রিঙ্কু লড়ছেন বিজেপির টিকিটে।

হিমাচল প্রদেশের দেহরা, হামিরপুর এবং নালাগড়ের তিন নির্দলীয় বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দেয়ার আগে জনপ্রতিনিধিত্ব সংশোধনী আইন মেনে ইস্তফা দিয়েছিলেন। তাই সেখানে ভোট হয়েছে। দেহরায় কংগ্রেস প্রার্থী করেছে সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখুর স্ত্রী কমলেশকে। বিহারের রুপৌলীর জেডিইউ বিধায়ক বিমা দেবী আরজেডিতে যোগ দেয়ায় এবং মধ্যপ্রদেশের অমরওয়াড়ার কংগ্রেস বিধায়ক কমলেশ প্রতাপ শাহ বিজেপিতে যোগ দেয়ায় সেখানে আবার ভোট।