রাইসির শূন্যতায় সর্বোচ্চ নেতার পদে প্রস্তুত হচ্ছেন খামেনিপুত্র!

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ মে ২০২৪, ১০:১৮ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যু হলো এমন এক সময়ে, যখন বিশেষ সংকটময় সময় পার করছে গোটা মধ্যপ্রাচ্য। সাত মাস ধরে ইসরায়েলের হামাসবিরোধী লড়াইয়ে গাজায় যে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে, তা এখন বিশ্ববাসীর মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে। এর মধ্যে রাইসির মৃত্যুর পর অনেক প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে সবার মনে। বারবার আলোচনায় আসছে ইরানের সরকার, পররাষ্ট্রনীতি, মধ্যপ্রাচ্যের আধিপত্য, চীন, রাশিয়া কিংবা উত্তর কোরিয়ার বিষয়-আশয়।
তবে এতোসব বিষয়কে ম্লান করে দিয়ে উদয় হয়েছে আরেক প্রশ্নের। রাইসির অনুপস্থিতে কে হবেন ইরানের পরবর্তী আয়াতুল্লাহ অর্থাৎ সর্বোচ্চ নেতা? এ প্রশ্ন ঘুরছে বিশেষজ্ঞ মহলেও।
খামেনির পর এ সর্বোচ্চ পদে রাইসিই যাবেন বলে দৃঢ়ভাবে ধারণা করা হচ্ছিলো। কিন্তু তার হঠাৎ মৃত্যু পালটে দিয়েছে এ অঙ্কের সমীকরণ। বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, বর্তমান সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ছেলে মোজতবা খামেনিই হবেন পরবর্তী সর্বোচ্চ নেতা।
সোমবার দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, অনেক বিশ্লেষক বলেছেন, ৮৫ বছর বয়সী সর্বোচ্চ নেতাকে প্রতিস্থাপন করার জন্য মোজতবাকে প্রস্তুত করা হচ্ছে।
দীর্ঘদিন ধরেই মোজতবা খামেনি তার বাবার সম্ভাব্য উত্তরসূরি বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিলো। রাইসির মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে সেই জল্পনা আরো বেড়েছে। অনেকেই বলছেন, রাইসির মৃত্যুতে সহজ হয়ে উঠেছে মোজতবার পথ।
সাউথ ক্যারোলিনার ক্লেমসন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আরাশ আজিজি বলেছেন, ‘মানুষ যখন ২০০৯ সালে মোজতবাকে একজন সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে কথা বলতে শুরু করেছিলো তখন আমি এটিকে একটি সস্তা গুজব বলে মনে করেছিলাম। কিন্তু সেই ধারণা আর নেই। তবে এটা এখন খুব স্পষ্ট যে, তিনি একজন অসাধারণ ব্যক্তিত্ব।’
অনেক আগে থেকেই ইরানের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের বেশ কিছু নেতাও প্রকাশ্যেই তাকে সমর্থন করতে শুরু করেন বলেও জানিয়েছেন আজিজি।
৫৫ বছর বয়সী মোজতবা খামেনি আয়াতুল্লাহ খামেনির ছয় সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় পুত্র। তিনি ইরানের রাজনীতিতে একটি উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব। মোজতবার লালন-পালন এবং কর্মজীবন ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।
তিনি অল্প বয়সে আইআরজিসিতে যোগদান করেন এবং ১৯৮০-এর দশকে ইরান-ইরাক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধের পর তিনি বিশিষ্ট রক্ষণশীল ধর্মগুরুদের নির্দেশনায় শিয়া বৃত্তির প্রধান কেন্দ্র কওমে ধর্মীয় অধ্যয়ন করেন। এই প্রেক্ষাপট ইরানের রাজনৈতিক অভিজাতদের কট্টরপন্থী গোষ্ঠীর মধ্যে তার অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে।