ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছেন এমপি মহুয়া

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:৩৫ এএম

ছবি: সংগৃহীত
দর্শন হিরনানদানি নামে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে অর্থ ও উপহারের বিনিময়ে লোকসভায় প্রশ্ন উত্থাপনের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের এমপি মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ তুলে লোকসভা স্পিকার ওম বিড়লার কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন বিজেপির এমপি নিশিকান্ত দুবে। খবর: আনন্দবাজার, হিন্দুস্তান টাইমসের।
চিঠিতে অবিলম্বে পশ্চিবাংলার কৃষ্ণনগরের এমপি মহুয়ার বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি করা হয়েছে। তাকে এমপি পদ বহিষ্কারেরও আবেদন রয়েছে। একইসঙ্গে আইনজীবী অনন্ত দেহাদরি মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সিবিআই প্রধানকে চিঠি দিয়েছেন।
দুজনেরই অভিযোগ ব্যবসায়ী দর্শন হিরনানদানির থেকে অর্থ নিয়ে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কথা বলেছেন মহুয়া। সেইসঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নাম জড়িয়েছেন মহুয়া। এর পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে মহুয়া জানিয়েছেন, যে কোনো তদন্তের জন্য তিনি তৈরি। আদানি ও বিজেপির বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগও তুলেছেন মহুয়া।
ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা লোকসভার বিজেপি এমপি নিশিকান্ত রবিবার স্পিকারকে চিঠি লিখেছেন। তাতে মহুয়ার বিরুদ্ধে এমপি হিসেবে পাওয়া বিশেষ অধিকার ভঙ্গ এবং সংসদ অবমাননার অভিযোগ তুলেছেন। তার দাবি ব্যবসায়ী দর্শন হিরনানদানির স্বার্থ দেখতে নগদ টাকা এবং উপহারের বিনিময়ে প্রায় ৫০টি প্রশ্ন লোকসভায় তুলেছেন তৃণমূলের মহুয়া। শুধু অভিযোগ তোলাই নয়, বিষয়টিকে ফৌজদারি অপরাধ বলেও দাবি করেছেন নিশিকান্ত।
বিজেপির এই এমপির অভিযোগ, মহুয়ার প্রশ্ন শোনার পরে তা নিয়ে সরব হয়েছে অন্যান্য বিরোধী দলের আইনপ্রণেতারাও। তৃণমূলের প্রবীণ এমপি সৌগত রায়ের নামও উল্লেখ করেছেন নিশিকান্ত। মহুয়াকে কেন সাংসদ পদ থেকে অপসারিত করা উচিত, তা বোঝাতে স্পিকারকে লেখা চিঠিতে নিশিকান্ত ২০০৫ সালের ১২ ডিসেম্বরের একটি ঘটনার উল্লেখ করেছেন।
স্পিকারকে পাঠানো চিঠিতে লিখেছেন, ১৪তম লোকসভায় ২০০৫ সালের ১২ ডিসেম্বর অর্থের বিনিময়ে প্রশ্নের অভিযোগ উঠলে তৎকালীন স্পিকার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলেন। তদন্তের পরে মাত্র ২৩ দিনের মধ্যে লোকসভার ১০ জন এমপিকে অপসারণ করা হয়েছিলো। চিঠিতে এর পরেই মহুয়ার বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য কমিটি গঠনের আবেদন জানিয়েছেন নিশিকান্ত। সেই সঙ্গে অবিলম্বে মহুয়াকে বহিষ্কার করার আবেদন জানিয়েছেন।
নিশিকান্তের তরফে স্পিকারকে চিঠি পাঠানোর আগেই শনিবার সিবিআইয়ের ডিরেক্টর প্রবীণ সুদকে তদন্তের আবেদন জানিয়ে চিঠি লিখেছেন আইনজীবী দেহাদরি। এর জবাবে মহুয়া এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, সিবিআইকেও স্বাগত জানাচ্ছি। তারা আমার বিরুদ্ধে অর্থ তছরুপের অনুসন্ধান করতে পারে। কিন্তু তার আগে আদানির সমস্ত অর্থ কোন পথে সমুদ্রের ও পারে পৌঁছাচ্ছে, চালান আর বেনামি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে, সেটাও তাদের খুঁজে বের করতে হবে।
মহুয়া আরও লিখেছেন, আদানি হয়তো বিজেপির সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করে তার প্রতিযোগীদের দৌড় থেকে ছিটকে দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। এয়ারপোর্টও কিনতে পারে। কিন্তু আমার সঙ্গে এক বার চেষ্টা করে দেখুক।
কে এই দর্শন হিরনানদানি?
দর্শন হিরনানদানি রিয়েল এস্টেট কোম্পানি দর্শন হিরনানদানি গ্রুপের সিইও। তিনি একাধিক কোম্পানির চেয়ারম্যান হিসাবে রয়েছেন। যেমন- ইয়োত্তা ডাটা সার্ভিস, এইচ-এনার্জি, তার্ক সেমিকন্ডাক্টরস ও তেজ প্লাটফর্মসের কর্ণধার হিসাবে রয়েছেন। ভারতের অন্যতম বৃহৎ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান হল এই হিরনানদানি গ্রুপ। শিক্ষা, শক্তিসম্পদ, স্বাস্থ্য সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই গ্রুপ কাজ করে গিয়েছে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ডেটা সেন্টার হিসাবে কাজ করে এই গ্রুপ।