তুরস্কে শেষ হতে চলেছে এরদোগানের যুগ!

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৩, ১০:০৮ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
তুরস্কের একশো বছরের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। এখন ভোট গণনা শুরু হয়েছে।। এ নির্বাচনে শুধু তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা হবে না, ন্যাটোর সদস্য সাড়ে আট কোটি মানুষের এ দেশটি আগামীতে কীভাবে চলবে তাও নির্ধারিত হবে।
তুরস্কে এরদোগানের দুই দশকের শাসনের অবসানের সময়ও ঘনিয়ে আসছে বলে মনে করা হচ্ছে কারণ নির্বাচন পূর্ববর্তী জরিপে দেখা গেছে, এরদোগানের প্রতিদ্বন্দ্বী কিরিচদারোগ্লু এগিয়ে। তবে কেউই যদি ৫০ শতাংশ ভোট না পান তবে দ্বিতীয় মেয়াদে গড়াবে ভোটগ্রহণ।
সম্প্রতি ব্যাপকহারে কমেছে তুর্কি মুদ্রা লিরার দর। মুদ্রাস্ফীতির করালগ্রাসে বিধ্বস্ত প্রায় অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে দেশটির অর্থনীতিতে। এরদোগান ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় এমন হওয়ার কারণে হতাশা প্রকাশ করেছেন তার অনেক সমর্থক।
অন্যদিকে প্রতিশ্রুতির ফুলঝুড়ি নিয়ে হাজির হয়েছে ৭৪ বছর বয়সি প্রতিদ্বন্দ্বী কিরিচদারোগ্লু। তুরস্কের অর্থনীতিকে চাঙা করার আশ্বাস তার। সেইসঙ্গে তুরস্কে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করাসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা পেশ করেছেন তিনি।
রবিবার (১৪ মে) স্থানীয় সময় সকাল আটটা থেকে শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয় বিকেল পাঁচটায়।
আলজাজিরা জানিয়েছে, ভোট শেষে গণনা শুরু হয়েছে, রবিবার রাতের দিকে প্রাথমিক ফলাফল পাওয়া যেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে অফিসিয়াল ফলের জন্য তিনদিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
এই নির্বাচনে জিততে হলে একজন প্রার্থীকে মোট প্রদত্ত ভোটের অন্তত ৫০ শতাংশ পেতে হবে। নতুবা দুই সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় দফা ভোট নেয়া হবে।
তুরস্কের নির্বাচন সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী, ভোটের দিন রাত নয়টা পর্যন্ত ফল নিয়ে কোনো ধরনের সংবাদ প্রকাশ নিষিদ্ধ। প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়াবে কিনা, তার ইঙ্গিত আজ মধ্যরাতের দিকে পাওয়া যেতে পারে।
তুরস্কের স্থানীয় সময় সকাল আটটায় ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকেই ভোট কেন্দ্রগুলোর সামনে ভোটাররা লাইনে দাঁড়ান। নির্বাচনে প্রথমবার ভোট দেয়া ৫০ লাখ ভোটার এবারের নির্বাচনের ফল নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
জার্মানি, ফ্রান্স ও অন্যান্য দেশে থাকা প্রায় ১৭ লাখ প্রবাসী তুর্কি ভোটার এরই মধ্যে ভোট দিয়ে ফেলেছেন। সেখানে ভোটদানের হার ছিল ৫৩ শতাংশ। চার প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর একজন মুহাররেম ইনচে ভোটের তিনদিন আগে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।
রবিবারের ভোটে তুরস্কের মানুষ ৬০০ এমপি নির্বাচনের জন্যও ভোট দিচ্ছেন। যদিও প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান পার্লামেন্টের ক্ষমতা খর্ব করে প্রেসিডেন্টের নির্বাহী ক্ষমতা অনেক বাড়িয়েছেন, তারপরও নতুন আইন প্রণয়নে পার্লামেন্ট এখনো মুখ্য ভূমিকা রাখে।
তুরস্কের নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের নিয়ম অনুযায়ী কোন দলকে পার্লামেন্টে আসন পেতে হলে অন্তত ৭ শতাংশ ভোট পেতে হয়। তাই রাজনৈতিক দলগুলো আসন পাওয়া নিশ্চিত করতে নির্বাচনী জোট বাঁধে।