ভারতের পার্লামেন্টে এমপিদের মধ্যে হাতাহাতি, আইসিইউতে ২

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩০ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে পার্লামেন্ট চত্বরে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) এই সহিংসতা ঘটে, যখন বিরোধী দলগুলো এবং এনডিএ জোটের সদস্যদের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়।
সংঘর্ষের ফলে বিজেপির দুজন সংসদ সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে একাধিক মাথায় আঘাত পান এবং পরে তাদের নয়াদিল্লির রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আহত দুই এমপি বর্তমানে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন।
ঘটনাটি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর আম্বেদকর নিয়ে করা মন্তব্যের পর পার্লামেন্টে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টির পর ঘটেছে। বিরোধী দলগুলো আম্বেদকরের সম্পর্কে অমিত শাহর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাচ্ছিল, যার ফলে সংসদ চত্বরে বিক্ষোভ-আন্দোলন শুরু হয়। এরই মধ্যে, বিজেপি ও বিরোধী দলের সদস্যদের মধ্যে ধ্বস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়।
এ সময় বিজেপির এমপি প্রতাপ সারাঙ্গী এবং মুকেশ রাজপুত গুরুতর আহত হন। বিশেষ করে, প্রতাপ সারাঙ্গী মাথায় আঘাত পেয়ে পার্লামেন্ট চত্বরে বসে থাকেন। ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, রাহুল গান্ধী প্রতাপ সারাঙ্গীকে কাছে গিয়ে তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান। কিন্তু সেই মুহূর্তে, বিজেপি সাংসদরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান এবং অভিযোগ করেন যে, রাহুল গান্ধী তাদের এমপিদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন।
এ বিষয়ে বিজেপি নেতা নিশিকান্ত দুবে বলেন, "রাহুল, আপনার কি লজ্জা লাগে না? আপনি এখানে গুন্ডামি করছেন! একজন বৃদ্ধ লোককে (প্রতাপ সারাঙ্গী) ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলেন!" এদিকে, রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেছেন যে, বিজেপি সংসদ সদস্যরা তাকে ধাক্কা দিয়ে সংসদ ভবনে প্রবেশে বাধা দিয়েছেন।
এই ঘটনায় বিজেপি নেতা অনুরাগ ঠাকুর ও বাঁশুরি স্বরাজের নেতৃত্বে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে এফআইআর (এজাহার) দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, রাহুল গান্ধী সংসদ চত্বরে মারামারি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য দায়ী।
এদিকে, গতকাল থেকেই কংগ্রেসসহ বিরোধী দলগুলো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর বিরুদ্ধে আম্বেদকরকে অবমাননা করার অভিযোগে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিল। আজ সেই প্রতিবাদ আরও তীব্র হয়ে ওঠে, যা এই সহিংসতার জন্ম দেয়।
প্রসঙ্গত, বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সারাঙ্গী ১৯৯৯ সালে ওড়িশায় গ্রাহাম স্টুয়ার্ট স্টেইনস এবং তার দুই সন্তানকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় নাম জড়িয়েছিলেন। ওই সময় বজরং দলের রাজ্যসভাপতি ছিলেন তিনি। যদিও পরবর্তীতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর প্রধান অভিযুক্ত দারা সিংহ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পেলেও সারাঙ্গী রেহাই পেয়েছিলেন।
এই ঘটনাটি পার্লামেন্টের সেশনে সহিংসতা এবং রাজনৈতিক উত্তেজনার নতুন মাত্রা যোগ করেছে।