×

ভারত

ভারতের মেঘালয়ে উড়ছে বাংলাদেশি ড্রোন, যা জানা গেলো

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪৩ এএম

ভারতের মেঘালয়ে উড়ছে বাংলাদেশি ড্রোন, যা জানা গেলো

মেঘালয়ের অভ্যন্তরে এই মডেলের ড্রোন উড়তে দেখা গেছে। ছবি : প্রতীকী

   

ভারতের মেঘালয় রাজ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে কী করে একাধিক ড্রোন উড়ে এলো, তা খতিয়ে দেখছে নিরাপত্তাবাহিনীগুলো।চেরাপুঞ্জির কাছে কয়েকদিন আগে যে ড্রোনগুলো পাওয়া গেছে সেগুলো বাংলাদেশ থেকেই ওড়ানো হয়েছিল বলে নিশ্চিত করছেন মেঘালয়ের উপ-মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য পুলিশ মন্ত্রী প্রেসটোন তিনসং।

প্রেসটোন তিনসং সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সীমান্তের দায়িত্বে বিএসএফ এবং কেন্দ্রীয় সরকার রয়েছে। তবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশের যেসব চেষ্টা চলছে বা সম্প্রতি যে ড্রোন চেরাপুঞ্জি পর্যন্ত উড়ে এসেছিল – এ ধরনের বিষয়গুলো নিয়ে সবসময়েই রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছি আমরা।

নজরদারিই উদ্দেশ্য?

চলতি কথায় এগুলোকে ড্রোন বলা হলেও আদতে এগুলো চালকবিহীন উড়ান বা আনম্যান্ড এরিয়েল কমব্যাট ভেহিকেল। যে ড্রোনগুলো পাওয়া গেছে সোহরা আর শেলা অঞ্চলে, সেগুলো কী মডেলের ড্রোন তা নিয়ে অবশ্য কিছুটা অস্পষ্টতা আছে।

ভারতের গণমাধ্যমে লেখা হচ্ছে, ড্রোনগুলো তুরস্কে তৈরি বায়রাক্টার টিবি টু মডেলের। বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী বায়রাক্টার সংস্থার সঙ্গে ২০২২ সালে চুক্তি করে টিবি টু ড্রোন কেনার জন্য। সেটিই ছিল সেদেশের সামরিক বাহিনীর প্রথম সামরিক অস্ত্র বহনে ও হামলায় সক্ষম ড্রোন কেনা।

ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এক কর্মকর্তা নাম উল্লেখ না করার শর্তে জানিয়েছেন, এ ধরনের ড্রোন এতটাই উচ্চতায় ওড়ে যে খালি চোখে তা দেখা সম্ভব না। তিনি আরো জানান, এ ধরনের ড্রোন মূলত নজরদারি চালানোর জন্যই ব্যবহৃত হয়।

আরো পড়ুন : ভারতে লঞ্চে নৌবাহিনীর স্পিডবোটের ধাক্কা, নিহত ১৩

ওই অঞ্চলে কাজ করেছেন এমন একজন বিএসএফ কর্মকর্তা জানান, মেঘালয় সীমান্তে মাদক চোরাচালানের কাজেও ড্রোন ব্যবহারের ঘটনা ঘটেছে আগে।

মনিপুরের সাম্প্রতিক সহিংসতার সময়ে দেখা গেছে, ড্রোন ব্যবহার করে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো বোমা নিক্ষেপও করেছে। ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে অবশ্য মাদক পাচারের জন্য ড্রোনের ব্যবহারের ঘটনা মাঝে মাঝেই সামনে আসে।

নিরাপত্তার ঝুঁকি

মেঘালয়ে যে ড্রোন পাওয়া গেছে, তা কী জন্য ব্যবহৃত হচ্ছিল, সেটি নিয়ে কোনো নিরাপত্তা বাহিনীই আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলতে চাইছে না। উপ-মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য ছাড়া মেঘালয় পুলিশ, বিএসএফ বা সামরিক বাহিনী– কোথাও থেকেই এই ড্রোন নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে ভারতের এলিট কমান্ডো বাহিনী এনএসজির প্রাক্তন অফিসার ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক দীপাঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, বাংলাদেশ হোক বা পাকিস্তান অথবা চীন, যে কোনো দেশ থেকেই ড্রোন উড়ে আসুক না কেন, ভারতের আকাশসীমা লঙ্ঘিত হলে তা নিরাপত্তার দিক থেকে সেটা একটা ঝুঁকি তো বটেই।

কীভাবে ভারতের আকাশ সীমার ভেতরে বেশ কিছুটা ঢুকে এলো ওই ড্রোন সেটা নিরাপত্তা বাহিনীগুলো নিশ্চই খতিয়ে দেখছে। ওই অঞ্চলে কী তাহলে নজরদারির কোনো ঘাটতি ছিল? প্রশ্ন দীপাঞ্জন চক্রবর্তীর।

তিনি বলেন, এই ঘটনার দ্বিতীয় একটি দিক আছে। বাংলাদেশের শীর্ষ নেতৃত্ব নিশ্চয়ই জানেন ভারতের সঙ্গে তাদের দেশের সামরিক শক্তির তুলনা হয় না। তাই তারা ভারতের সঙ্গে সামরিক সংঘাতে জড়াতে চাইবেন না। তবে এর বাইরে আরেকটি অংশ আছে, যেখান থেকে বারবার উস্কানি দেয়া হচ্ছে ভারতের সঙ্গে সংঘাতে যাওয়ার জন্য। এ ধরনের কোনো উস্কানিতে ভারত পা দেবে না আমি নিশ্চিত। কিন্তু সাবধানতা অবলম্বন তো করতেই হবে সামরিক বাহিনীগুলোকে, বলেন দীপাঞ্জন চক্রবর্তী।

ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সূত্রগুলো বলছে, এটা যেহেতু আকাশসীমা লঙ্ঘনের ঘটনা, তাই এটা তাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। বিএসএফের ওই প্রাক্তন কর্মকর্তা জানান, বিমান বাহিনীর দায়িত্ব এটা। আবার ভারতীয় বিমান বাহিনী জানিয়েছে যেহেতু অন্য একটি দেশের বিষয় আছে এখানে, তাই একমাত্র দিল্লির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েরই এ নিয়ে মন্তব্য করতে পারে।

আরো পড়ুন : মিয়ানমার নিয়ে বৈঠকে বাংলাদেশ, ভারত, চীনের যেসব হিসাব নিকাশ

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যাপক ব্যবহৃত টিবি টু ড্রোন

টিবি টু মডেলের ড্রোন তৈরি করে তুরস্কের একটি সংস্থা। বিবিসির মনিটরিং বিভাগের দেয়া তথ্য অনুযায়ী তুরস্কের সেনাবাহিনীতে ব্যবহৃত প্রথম ড্রোন এই সংস্থা – 'ব্যাকর ডিফেন্স'রই বানানো। তুরস্কের সেনাবাহিনীতে ২০১৪ সাল থেকে এগুলো ব্যবহৃত হচ্ছে।

ড্রোন বলা হলেও টিবি টু একটি ছোট বিমানের আকারের। সেখানে ক্যামেরা যেমন থাকে নজরদারির জন্য, তেমনই চারটি এমএএম-এল লেজারচালিত বোমাও বহন করতে পারে এই ড্রোন।

বিবিসির তথ্য অনুযায়ী টিবি টু ড্রোনগুলি সর্বোচ্চ ২৫ হাজার ফিট ওপরে উঠতে পারে আর এগুলো তিনশো কিলোমিটার অবধি একটানা ওড়ার ক্ষমতা রাখে। এর সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটার।

বিবিসির পুরানো একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, বায়রাক্টার টিবি টু মডেলের ড্রোন ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে। রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ 'মস্কোভা'কে কৃষ্ণ সাগরে ডুবিয়ে দিয়েছিল এরকমই এক টিবি টু ড্রোন। তার আগে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে নাগোর্নো-কারাবাখ সংঘাতে, সিরিয়া এবং ইথিওপিয়াতেও টিবি টু ড্রোন সফলভাবে ব্যবহৃত হয়েছে। আফ্রিকার একাধিক দেশও এই ড্রোন কিনেছে।

টাইমলাইন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার

আরো পড়ুন

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App